‘অপপ্রচারকারীদের চেয়ে বড় মুসলমান আমি’


587 বার দেখা হয়েছে
Print Friendly, PDF & Email
‘অপপ্রচারকারীদের চেয়ে বড় মুসলমান আমি’
জুলাই ৮, ২০১৫ প্রবাস ভাবনা ফটো গ্যালারি
Print Friendly, PDF & Email

ভয়েস অব সাতক্ষীরা ডেস্ক :
প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলামিস্ট এবং অমর একুশের গানের রচয়িতা আব্দুল গাফফার চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, ঢাকার কিছু মিডিয়া তার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে। গত ৩ জুলাই নিউইয়র্কে জাতিসংঘ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ছিল একাডেমিক আলোচনা। না বুঝেই তার সেই বক্তব্যকে বিভ্রান্তিকর হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে। ওইদিনের বক্তব্যে তিনি ইসলামবিরোধী কিছু বলেননি।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের চেয়ে আমি অনেক বড় মুসলমান।’

স্থানীয় সময় রবিবার নিউইয়র্কের বাংলা ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল ‘টাইম টিভি’কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে উদ্ভূত পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন আব্দুল গাফফার চৌধুরী।

গাফফার চৌধুরী বলেন, আমার বক্তব্যকে বাংলাদেশের কিছু রাজনৈতিক মৌলবাদী দল রাজনৈতিক ভাবে পুঁজি করেছে এবং মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে।

তারা বলেছেন, আমি ধর্মবিরোধী। রসুল (সা.), ইসলাম, এমনকি আল্লাহর অবমাননা করেছি। তিনি প্রশ্ন রাখেন, কোনো সাধারণ মানুষের আল্লাহকে অবমাননা করার শক্তি আছে? এটা প্রচার করাও ধর্মদ্রোহিতা।

তিনি বলেন, আমি মাত্র গত ফেব্রুয়ারি মাসে ওমরাহ পালন করেছি। সেই ব্যক্তি নিউইয়র্কে এসে ধর্মদ্রোহিতা করবে কী কারণে? যারা আমার নিন্দা করছেন, তাদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ আপনারা আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ পড়ুন। তারপর যদি মনে করেন ধর্ম ও আল্লাহ রসুলের (সা.) বিরুদ্ধে কিছু বলেছি তখন তার শাস্তি বিধান করেন।
কিন্তু বিনা বিচারে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে একশ্রেণীর মোল্লার উস্কানিতে তারা যা করছেন তার নিন্দা করার ভাষা আমার জানা নেই। এ ঘটনায় তারা আমকে ছোট করেননি, তারা ধর্ম ও আল্লাহর রসুলকেই (সা.) ছোট করছেন।

গাফফার চৌধুরী বলেন, আমি আল্লাহর ৯৯ নাম সম্পর্কে দেবতাদের নাম বলিনি। আমি বলেছি কিভাবে এক সভ্যতা আরেক সভ্যতার উপকরণ গ্রহণ করে।

তিনি বলেন, বাংলা ভাষাকে হিন্দুদের ভাষা বলা হয়, এটা যেমন সত্য নয়, এটা প্রমাণ করার জন্য বলেছিলাম আরবি ভাষা এককালে কাফেরদের ভাষা ছিল।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এটা বলা কি আরবি ভাষার অবমাননা? আল্লাহর নাম সম্পর্কে বলেছি যে আল্লাহর গুণাত্মক নামগুলো আগে কাফেরদের দেবতাদেরও ছিল। তা না হলে রসুল্লাহর (সা.) পিতার নাম আব্দুল্লাহ কী করে হয়। এটা মুসলামানদের নাম নয়। আরবের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, যেগুলো ধর্মভীরু নয় সেগুলো আমাদের রসুল (সা.) গ্রহণ করেছেন।’

তিনি বলেন, আমি সাহাবাদের সম্পর্কে কোনো কটুক্তিই করিনি। আমি বলেছি, আমরা আরবি ভাষা না জেনে আমরা আরবিতে সন্তানদের নাম রাখি, সেটা ভুল। নামের অর্থ জানা উচিত। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেমন আবু হুরায়রা। এটা রসুল্লাহর (সা.) সাহাবার প্রকৃত নাম নয়। রসুল্লাহ (সা.) তাকে বিড়ালের বাবা ডাকতেন। আমরা যেহেতু আরবি জানি না তাই আমরা বিড়ালের বাবা-ই নাম রাখছি।

গাফফার চৌধুরী বলেন, যারা আজ আমাকে মুরতাদ বলছেন তাদের প্রত্যেকেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলছেন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাধনের জন্য আজ তারা ধর্মকে ব্যবহার করে ধর্মের অবমাননা করছেন। আমি এদের শাস্তি চাই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে, ৩০ লাখ মা বোনের মৃত্যুর জন্য দায়ী, যারা পরবর্তীকালে মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধির দ্বার বন্ধ করে দিয়ে ইসলামের নামে ব্যবসা করছে, যারা ব্যাংক ও ইন্সুরেন্স কোম্পনি করছে এবং ধর্মকে রাজনৈতিক পুঁজি করেছে তারাই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছ। আমি তাদের চেয়ে বড় মুসলমান।