
অনলাইন ডেস্ক :
দেশ গঠনের আন্দোলন সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অবদান স্বরণ করে তার কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিটি সংগ্রাম আন্দোলেন পর্দার আড়ালে থেকে কাজ করেছেন বঙ্গমাতা।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, কীভাবে একটি সংগ্রাম গড়ে তুলতে হয় তা তিনি (বঙ্গমাতা) জানতেন। আমি সংগ্রাম আন্দোলন যা শিখেছি তা মায়ের কাছ থেকে শেখা।
তিনি বলেন, নিজের জীবনকে অত্যন্ত সহজ সরলভাবে পরিচালিত করেছেন বঙ্গমাতা। তিনি প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ছিলেন, কিন্তু রান্না করতেন নিজের হাতে। কখনও কোনো অহমিকা আমার মায়ের মধ্যে ছিল না। অত্যন্ত সাদা-সিদা চলতেন। আমাদেরও সে শিক্ষাই দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিলাসবহুল জীবনযাপন তার (বঙ্গামাতা) ছিল না। আমাদেরও তিনি শেখাননি। আমরা সেই শিক্ষাই পেয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ভাষার দাবি নিয়ে যে আন্দোলন সে আন্দোলনও জাতির পিতা শুরু করেছিলেন। জাতির পিতা ছাত্রলীগ সংগঠন গড়ে তুলে ভাষা আন্দোলন, আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, স্বাধীকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করেছিলেন।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ সংগঠন তিনি (বঙ্গবন্ধু) করেছিলন প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামের জন্য। দেশের ইতিহাস যদি দেখি, শহীদের তালিকা দেখলে দেখব ছাত্রলীগ কর্মীরাই বেশি।
শেখ হাসিনা বলেন, উপমহাদেশে ছাত্রলীগের ঐতিহ্য, অর্জন অনেক। যখন জাতির পিতা কারাগারে ছিলেন তখন ছাত্রলীগ মূলত বঙ্গমতার কাছ থেকেই পরামর্শ নিতো। আমার মায়ের সাথে ছাত্রলীগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য ছাত্রলীগ ছিল অগ্রণী ভূমিকায়। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যখন কারাগারে সাক্ষাৎকারে যেতাম, তখন সেখানে গোয়েন্দা সংস্থার লোক থাকত। তাদের অগোচরে কাজ করতেন বঙ্গমাতা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসাধারণ স্বরণশক্তি ছিল বঙ্গামাতার। বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে তথ্য এনে ছাত্রলীগকে দিতেন তিনি। সে সময় ছাত্রলীগই ছিল অগ্রগামী। বঙ্গবন্ধু জয় বাংলা স্লোগান গ্রামে-গঞ্জে পৌঁছে দিতে ছাত্রলীগকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় পাতাকার রং কি হবে এটাও বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে হয়েছে। ‘আমার সোনার বাংলাকে’ জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে তার পছন্দ ছিল। দেশকে স্বাধীন করবেন এ স্বপ্ন নিয়ে দিন রাত কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধু।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুই একমাত্র নেতা যিনি সংগঠন গড়ে তোলার জন্য মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করেন। আমাদের আলাদা রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে- সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি শুরু করেন তার সংগ্রাম। আমার মা সবসময় তার পাশে ছিলেন।
তিনি বলেন, আমার দাদা-দাদী, মা সবাই পাশে থেকে তাকে (বঙ্গবন্ধু) সহযোগিতা করেছেন। কখনও কোনো চাহিদা ছিল না পরিবারের। বঙ্গবন্ধু ৫৪, ৫৬ সালে মন্ত্রী ছিলেন। করাচিতে তিনি যেতেন কিন্তু আমার মা কখনও পাকিস্তানে যান নাই। তিনি আমার বাবার মনের কথা জানতেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ একটি পরিবারের মতো ছিল। সকলের ভাবী ছিলেন আমার মা। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আমার মাকেও বারবার জিজ্ঞাসা করেছে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হয়তো তিনি পান নাই কিন্তু শিক্ষা পেয়েছেন জীবন থেকে।