
অনলাইন ডেস্ক ::
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আরব আমিরাতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদার করতে চায় বাংলাদেশ। বর্তমানে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ এক বিলিয়ন ডলার। আগামী তিন থেকে চার বছরে এটি পাঁচ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চায় বাংলাদেশ। দুই দেশের উর্ধ্বতন কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে আরব আমিরাতের সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর একটি। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা সত্ত্বেও বার্ষিক ছয় শতাংশেরও বেশি জিডিপি ধরে রেখেছে দেশটি। জনবহুল এ দেশটিতে বিনিয়োগেরও বেশ ভালো সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান আরও বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিসর বাড়াতে আমরা নতুন ক্ষেত্রগুলো অনুসন্ধান করছি। এ বিষয়ে নতুন কিছু পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে।
দুবাইয়ে আয়োজিত প্রযুক্তি মেলা গিটেক্স, খাদ্য মেলা গালফুড ও দুবাই শপিং উৎসবে বাংলাদেশ নিয়মিত অংশ নিচ্ছে। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পণ্যের প্রচারে এবার আলাদা করে একক মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। চলতি বছরের শেষ দিকে আরব আমিরাতে মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে। এই মেলায় শুধু বাংলাদেশের উৎপাদক প্রতিষ্ঠানই অংশ নিতে পারবে।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান বলেন, প্রায় ২০০ কোটি ভোক্তা অধ্যুষিত মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও মধ্য এশিয়ার প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচিত হয় আরব আমিরাত। কিন্তু বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা এখানে আসার জন্য ভিসাও পায় না। ফলে এখানে ব্যবসার যে অফুরান্ত সম্ভাবনা রয়েছে তা অজানাই থেকে গেছে তাদের কাছে। তাছাড়া, বাংলাদেশ থেকে এখানে সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের সুবিধা নেই। ফলে বাংলাদেশি পণ্য দামের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে আর পণ্য আসছেও দেরিতে। কিন্তু সরাসরি জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করা গেলে দুই সমস্যাই দূর করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ পণ্যই আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে রফতানি করা হয়। অথচ ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশের কাছাকাছি আরব আমিরাতের অবস্থান। দুই দেশের সরকারকেই এসব বিষয়ে নজর দিতে হবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বাধাগুলো দূরে পদক্ষেপ নিতে হবে।
আরব আমিরাতের কোম্পানি ডিজিটাল দায়ার ব্যবসায়িক অংশীদার রানা হাসনাত হিজাজি বলেন, বাংলাদেশ-আরব আমিরাতের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রচুর সম্ভাবনা হয়েছে। কারণ স্বাভাবিকের চেয়ে দু’ দেশের বাণিজ্যের পরিসর অনেক কম। বাংলাদেশের রফতানিকারকদের এখন উচিত মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নজর ফেরানো। এর প্রবেশদ্বার হিসেবে তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ব্যবহার করতে পারে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক পরামর্শক ড. রফিক আহাম্মেদ বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিসর বাড়াতে হলে দুবাই ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে পরিবহন ব্যয় ও সময় দু’টাই কমবে। ফলে অন্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশও প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে ভালো অবস্থানে থাকবে। এছাড়া, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসা নীতিও শিথিল করতে হবে। এটা করা হলে তারা আরব আমিরাতের বাজার সম্পর্কে ধারণা অর্জনে সক্ষম হবে। এতে আরব-আমিরাতও আর্থিকভাবে লাভবান হবে।