
অনলাইন ডেস্ক ::
বিশ্বকাপের আগে সাবেক-বর্তমান খেলোয়াড়, কোচ-ফুটবল বিশ্লেষকরা ফিফা এবং প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যমকে বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। অবধারিতভাবে তাদের একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে- এবারের বিশ্বকাপের ফেবারিট কে? আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি, বেলজিয়ামের এডেন হ্যাজার্ড, জার্মানির কোচ হানসি ফ্লিক, বার্সেলোনার কোচ জাভি হার্নান্দেজ, স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডভস্কিসহ অনেকে ওই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
বিশ্বকাপের ফেবারিটের তালিকায় তাদের দুই-তিনটি কমন নাম ছিল। তার একটি আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসি কেবল একটু ঘুরিয়ে উত্তর দিয়েছিলেন। মাথার ওপর থেকে চাপ সরাতে বলেছিলেন, তাদের ভালো সুযোগ আছে। তবে তাদের চেয়েও এগিয়ে আছে কিছু দল। আগুয়েরো, লেভা, মেসি, অলিভার কানরা আর্জেন্টিনা কেন ফেবারিট তার একটা ব্যাখ্যাও দিয়েছিলেন।
তা হলো, আকাশি-নীল জার্সিধারীরা একটা দল হয়ে খেলছে। ট্যাকটিক্যালি তারা এগিয়ে, ৩৬ ম্যাচে অপরাজিত এবং দলটির লিওনেল মেসি আছেন। লিওনেল মেসির ওই আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ শুরু করেছিল সৌদি আরবের বিপক্ষে হেরে। এরপর মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতলেও তাদের খেলায় ল্যাতিনের সৌন্দর্য ছিল না। ওই ম্যাচের পর আলবিসেলেস্তেদের বিশ্বকাপ জয়ের সম্ভাবনা নেমে এসেছিল ৬.৬ শতাংশে।
ওই আর্জেন্টিনা ফিরেছে! পোল্যান্ডের বিপক্ষে মুগ্ধ করা ফুটবল খেলেছে ১৯৮৬ আসরের পর বিশ্বকাপ জিততে না পারা আর্জেন্টিনা। জয়টা ২-০ গোলের হলেও পোলিশদের রক্ষণভাগ বিশেষ করে শেষ ২৫ মিনিট কাঁপিয়ে দিয়েছে লিওনেল স্কালোনির দল। ম্যাচের প্রথমার্ধে পেনাল্টি মিস করেন মেসি। যে কারণে সংবাদ মাধ্যম ‘৯০ মিনিট’ তার রেটিং দিয়েছে সবচেয়ে কম; দশে চার। অথচ ওই মেসিও ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পরে সবচেয়ে বয়স্ক ফুটবলার হিসেবে (৩৫ বছর ১৫৮দিন) পাঁচটির বেশি সুযোগ তৈরি করে ও পাঁচটি বেশি সফল ড্রিবলিং করে রেকর্ড গড়েছেন।
পোল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার শুরুর একাদশে ছিলেন ২১ বছর বয়সী অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজ। মেসির পরে (২০০৬) সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে শুরুর একাদশে খেলার কীর্তি গড়েছেন তিনি। অথচ ওই এনজো বুদ্ধিদীপ্ত এক পাসে জুলিয়ান আলভারেজকে দিয়ে দ্বিতীয় গোলটি করিয়েছেন। মাঝমাঠে তার তারুণ্যের স্পষ্ট ছাপ ছিল। ম্যাচ রেটিংয়ে তাকে অন্তত সাত দিয়েছেন অনেকে।
আর্জেন্টিনার ফুটবলের অন্যতম ধরন পজিশন প্লেয়িং। পোল্যান্ডের বেপক্ষে মেসিরা ৭৩ শতাংশ পজিশন নিয়ে খেলেছে। পুরো ম্যাচে ৮৬৮ পাস খেলে আক্রমণ করেছে ২০টি। শুধু আক্রমণ করার জন্য আক্রমণ নয়। প্রথমার্ধে চাপ তৈরি করতে দূর থেকে শট নেওয়ার চেষ্টা করলেও দ্বিতীয়ার্ধে গোল লক্ষ্য করে আক্রমণ ছিল পরিকল্পিত। মেসি-আলভারেজ-মার্টিনেজরা ১২টি ভালো শট নিয়েছে যা পোল্যান্ড গোলরক্ষক সেনজিকে পরীক্ষা ফেলেছে। বাইরে যাওয়া শট ছিল মাত্র সাতটি।
পোল্যান্ড ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার লিয়ান্দ্রো মার্টিনেজ বলেছিলেন, তারা এখনও পূর্ণ ছন্দ পাননি। এখন তিনি বলতেই পারেন, তারা প্রস্তুত। যারা মেসিদের ফেবারিট বলেছিলেন, তারাও গলা ছাড়তে পারেন। বলতে পারেন- এই আর্জেন্টিনাকেই ফেবারিট বলেছিলাম।