
স্টাফ রিপোর্টার :
পুত্র সন্তান জন্ম না দিয়ে দুই কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় সাতক্ষীরার এক গৃহবধূকে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন কর্তৃক অমানুষিক নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ অভিযোগ করেন দেবহাটা উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের রেজাউল করিমের মেয়ে ও নির্যাতিনের স্বীকার গৃহবধূ রুকাইয়া পারভীন ডেইজি।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০০১ সালে পারিবারিক ভাবে কালিগঞ্জ উপজেলার বন্দাকাটি গ্রামের মৃত আলহাজ্ব মহসিন আলীর ছেলে মাহমুদুল হাসানের সাথে তার বিয়ে হয়। এরপর দাম্পত্য জীবনে তাদের ঘরে দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। আর এই দুই কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়ার কারনেই তার স্বামী মাহমুদুল হাসান ও তার পরিবার কর্তৃক তাকে প্রায়ই অমানুষিক শারীরিক নির্যাতনসহ যৌতুকের দাবী করা হতো। যাহা অতীতের সকল পৈশাচিকতাকেও হার মানায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০২.০৪. ২০১৪ তারিখে তার স্বামী তাকে দশ লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে শারীরিকভাবে গুরুতর নির্যাতন ও জখম করে। পরে তার পিতা ওই দিনই স্বামী মাহমুদুল হাসানের কবল থেকে তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারীধীন আছে। এ মামলাটি দায়েরের পর থেকে তার স্বামী মাহমুদুল হাসান বিভিন্নভাবে তার পিতাকে হুমকি ধামকি ও তাকে অপহরন, খুন, জখম ও ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন। এরপর তিনি (ডেইজি) সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি সাধারন ডাইরী করেন। এক পর্যায়ে গত বছরের (২০১৫) মার্চ মাসের এক তারিখে তার সাথে তার স্বামী মাহমুদুল হাসান দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন করেন। সেখান থেকে তিনি (ডেইজি) কন্যা সন্তান দুটি নিয়ে শহরের রসুলপুরে তার পিতার সহযোগিতা ও সাহায্যে অতিকষ্টে জীবনযাপন করছেন।
তিনি বলেন, তার স্বামীর সাথে তার বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পরও চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারী মাহমুদুল হাসান সম্পূর্ণ অবৈধভাবে তার বাড়িতে ঢুকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে জোর পূর্বক ধর্ষন করার চেষ্টা করেন। এর দুই দিন পর গত ৩০ জানুয়ারী তিনি সাতক্ষীরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলা দায়েরের পর মাহমুদুল হাসান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে হাজির হয়ে তার স্ত্রীর সাথে সকল বিবাদ মিমাংশা করবেন বলে একটি আবেদন করেন এবং তিনি তার প্রদত্ত তালাক প্রত্যাহার পূর্বক গত ২ ফেব্রুয়ারী হলফনামা ঘোষনা করেন। তিনি আরো বলেন, এত কিছুর পর দুঃখ জনক হলেও সত্য মাহমুদুল হাসান তার সকল অপরাধ লুকাতে হঠাৎ করে গত ২৭ ফেব্রুয়ারী কালিগঞ্জ প্রেস ক্লাবে তার (ডেইজির) বিরুদ্ধে অসত্য, বিভ্রান্তিমূলক ও কুরুচিপূর্ন বক্তব্য উপস্থাপন করে সংবাদ সম্মেলন করেন। যাহা সম্পূর্ন মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রধান মন্ত্রী ও প্রশাসনের কাছে যৌতুক লোভী ও নারী নির্যাতনকারী প্রতারক স্বামী মাহমুদুল হাসানের বিরদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান। এ সময় তার সাথে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিল তার দুই কন্যা উম্মে তাওফিকা তুলি ও উম্মে তানহা পুতুল ।