
পলাশ কর্মকার, কপিলমুনি ::
প্রচন্ড দাবদাহ, বৃষ্টি নেই তাই স্বাভাবিক জীবনযাপনে যেন নেমে এসেছে অস্থিরতা। শিশু থেকে শুরু করে সকল বয়সী মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত। এমন পরিস্থিতি চলছে প্রায় মাস জুড়ে, আর এরই মধ্যে বিদ্যুতের সীমাহীন লোডশেডিং এর কাছে মানুষ যেন অসহায় হয়ে পড়েছে।
জানাযায়, খুলনা জেলার কপিলমুনিসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাতে এখন প্রতিদিন বিদ্যুৎ যায় ৭/৮ বার। পবিত্র মাহে রমজানের মধ্যে এমন লোডশেডিং-এ রোজাদার ও বিএ পরীক্ষার্থীসহ জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে বিভিন্ন কল কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কম্পিউটার ও ফটোষ্ট্যাটের দোকানগুলোর অবস্থা আরও নাজুক। জরুরী কাজ করতে না পারায় অফিস পাড়ায়ও চলে এসেছে স্থবিরতা। চলতি মৌসুমে বিদ্যুতের অভাবে বরফ তৈরী ব্যাহত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চিংড়ি চাষী ও ব্যবসায়ীরা। সব মিলিয়ে ভ্যাপসা গরম ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট দক্ষিণ উপকূলীয় এ জনপদের জন্য ভোগান্তির আজ আর যেন অন্ত নেই।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী জগদীশ দে বলেন, এখানে বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে-মাঝে আসে। দক্ষিণ উপকূলীয় এলাকার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র কপিলমুনির জাফর আউলিয়া সড়কে গোল্ডেন কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক মোঃ মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, বিদ্যুতের অভাবে আমাদের ব্যবসা লাঠে উঠতে বসেছে। দীর্ঘ ৫/৬ ঘন্টা পর বিদ্যুতের দেখা পেলেও কম্পিউটার অন করে কাজ শুরু করার আগেই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। ছোট একটা কম্পোজের কাজও শেষ নামাতে পারছিনা। ঘনঘন লোডশেডিং হওয়ায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে জানালেন স্থানীয় একাধিক ডাক্তার। অপারেশন থেকে শুরু করে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষাতে ভোগান্তি বেড়েছে বহুগুণে। ফার্মেসীর অনেক ফ্রিজজাত ওষুধই নষ্ট হচ্ছে লাগামহীন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে।
মাছ ব্যবসায়ী প্রতাপকাটী গ্রামের স ম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বরফই হচ্ছে মিহায়িত চিংড়ীর প্রাণ, যা রক্ষা করতে প্রতিদিন ৩/৪ গুণ বেশি দামে তাদের বাইরে থেকে বরফ কিনতে হচ্ছে। লোডশেডিং নিয়ে কপিলমুনি বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করলে অভিযোগ কেন্দ্রে ইনচার্জ নূরআলম কোন সদুত্তোর দেন না, বরং ভীষণ খারাপ আচারণ করেন’।
অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, অন্য জায়গায় বিদ্যুতের যথেষ্ট সরবরাহ দেওয়া হলেও কপিলমুনি অঞ্চলে পরিকল্পিত ভাবে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের অনেকেই বলছেন, পল্লী বিদ্যুতের কপিলমুনি অভিযোগ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ সিস্টেম লচ হ্রাস করার জন্য পার্শ্ববর্তী রামনাথপুর সাবস্টেশন থেকে ঘন ঘন বিদ্যুৎ সংগোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।
এদিকে লোডশেডিং এর বিষয়ে জানতে চাইলে কপিলমুনি অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ নূর আলম বলেন, ‘পাইকগাছা-কয়রা বর্তমানে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায়। মেইন লাইনের ১৩০ কিলোমিটার চিকুন তার পরিবর্তন করা হচ্ছে, তাই সকাল ৭ টা থেকে বেলা ১১ পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে’। তবে গ্রাহকের সাথে খারাপ ব্যাবহারের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।