
পলাশ কর্মকার, কপিলমুনি : বহু কাঙ্খিত কপোতাক্ষ খনন চলছে, তাই খননের সাথে সাথে যেন উপকুলের মানুষ ঘুরে দাঁড়াবার স্বপ্নের জাল বুনতে শুরু করেছেন। ভুক্তভোগী মানুষ; তাঁরা জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্তি চায়। আর তাইতো এ জনপদের মানুষের দূর্দশার বিষয়টি সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখছেন। এরই মধ্যে কপিলমুনি এলাকায় নদী খননকৃত মাটি কপিলমুনি বাজারের পশ্চিম পাশে (নদী পাড়ে) রাখা হয়েছে, যা অপসারন না হওয়ায় খনন কাজের গতি মন্থর হয়ে পড়েছে। পাহাড়তুল্য স্তুপাকার মাটি দ্রুত অপসারন না হলে চলতি শুস্ক মৌসুমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কপিলমুনি বাজার এলাকায় নদী খনন বাঁধাগ্রস্থ হতে পারে। ফলে বর্ষা মৌসুমে একদিকে যেমন কপিলমুনি বাজার ভয়াবহ জলবদ্ধতার শিকারের আশংকা রয়েছে, অন্যদিকে নদীর পাড় ভেঙ্গে এবং পাড়ের মাটি বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে নদীতে পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন উপকুলবাসী। ফলে নদী আংশিক ভরাট হয়ে খনন কাজ পিছিয়ে পড়বে এমনটা ধারণা করছেন উপকুলের অসংখ্য মানুষ।
জানাযায়, কপিলমুনি বাজারের গুরুত্ব বিবেচনা করে পাইকগাছার সীমান্ত কাছিঘাটা বাজার থেকে গোলাবাটি পর্যন্ত প্রায় ৩২০০ মিটার এলাকা অতি গুরুত্বপূর্ন হিসেবে প্যাকেজ খননের আওতায় আনা হয়। সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নদীর উপরিভাগ ২০০ ফুট, তলা ১৪০ ফুট চওড়া ও পুরাতন তলাদেশ থেকে ১৬ ফুট গভীর করে নদীটি খননের নির্দেশনা রয়েছে। প্রায় দেড়মাস ধরে দিনে রাতে ডজন খানেক স্কেভেটর মেশিন দিয়ে নদী খনন করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে কপিলমুনি বাজার সংলগ্ন এলাকায় উত্তোলিত মাটি রাখার জায়গার অভাবে নদী খননের কাজ অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। তবে প্রথম দিকে বিভিন্ন এলাকার মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে মাটি নিয়ে যাওয়া শুরু করলেও বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট নদী খনন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কপিলমুনি প্যাকেজ এলাকার সুপারভায়জার জয়নাল আবেদিন জানান, কপিলমুনি বাজার উচুকরনের জন্য মাটির প্রয়োজন, তাই এই মাটি রেখে দেওয়া হয়েছে। সে কারনেই দ্রুত মাটি অপসারন হচ্ছে না। তিনি আরও জানান, কপিলমুনি বাজার এলাকায় নদীর মোট ২৫ শতাংশ মাটি উত্তোলিত হয়েছে। বাকি ৭৫ শতাংশ মাটি অবশিষ্ট রয়েছে যা দিয়ে কপিলমুনি বাজারের মত অন্তত ১০ টি বাজার উচু করা সম্ভব।
এদিকে প্রায় ১ মাস আগে খননের মাটির নিচে চাপা পড়েছে কপিলমুনি শহীদ স্মৃতি সৌধ ও ১৯ টি মৎস্য আড়ৎ। ফলে মৎস্য ব্যবসায়ীরা পড়ে যান বিপাকে। দীর্ঘ দিন মৎস্য আড়ৎগুলো মাটি চাপা পড়ে থাকায় তাদের ব্যবসা কার্যক্রম মারতœকভাবে বিঘিœত হচ্ছে বলে ‘দৈনিক খুলনাঞ্চল’কে জানান আড়ৎদার এইচ এম জিয়াউর রহমান। তারা বিকল্প হিসেবে পাশেই কাট-পাল্লা ঝুলিয়ে আপাতত কোন ভাবে মাছ কেনা বেচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।