
কে. এম. আনিছুর রহমান :
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার খোরদো বাজারে কপোতাক্ষ নদের তীরে জমে উঠেছে খেজুর গুড়ের হাট। সপ্তাহে দুই দিন ( রোববার ও বৃহস্পতিবার) উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের ওই বাজারের কপোতাক্ষ নদের তীরে বসে এ হাট।
বাজারের আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে গাছিরা এ বাজারে খেজুর গুড় ও পাটালি বিক্রি করতে আসেন। আর দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এ হাট থেকে গুড় ও পাটালি ক্রয় করেন। ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে গুড়ের হাট জমজমাট হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, এ বছর গাছিরা খেজুরের রস বিক্রি না করে লাভের জন্য গুড় ও পাটালি তৈরি করছে। সেজন্য গত ২/৩ দিন বছর পর আবারও খোরদো বাজারের খেজুর গুড়ের হাট জমে উঠেছে।
এখানকার গুড় ও পাটালি সুস্বাদু হওয়ায় বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা,বাগেরহাট,ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এই বাজার থেকে গুড় ও পাটালি কিনতে আসেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে কলারোয়া ছাড়াও পার্শ্ববর্তী যশোরের মনিরামপুর থেকেও খেজুর চাষিরা গুড় ও পাটালি বিক্রি করতে আসেন। যার কারণে এটি একটি বড় পাইকারী বাজারে পরিণত হয়েছে।
হাটে গুড় বিক্রি করতে আসা উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের আতিয়ার রহমান জানান, খেজুর গাছ কেটে এখন জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন আগের মতো খেজুর গাছ নেই। প্রতিবারের মতো এবারও তারা রস বিক্রি না করে গুড় ও পাটালি তৈরি করেছেন। দেশের নানা স্থান থেকে পাইকাররা মাল ক্রয় করছেন বলে কিছুটা লাভ হবে বলে জানান তিনি।
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার শমসেরবাগ গ্রামের পাটালি বিক্রেতা রুহুল আলীম জানান, এ বছর হাটে খেজুরের গুড় ও পাটালির পরিমাণ বেশি হওয়ায় বাইরে থেকে আসা ব্যাপারিরা গুড়ের দাম কিছুটা কম বলছে। তবে আরো বেশি পাইকার বাজারে আসলে দাম বেশি হবে বলে জানান তিনি।
যশোরের বাগআঁচাড়া এলাকার পাইকার ও গুড় ব্যবসায়ী শহিদুজ্জামান জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর হাটে গুড়ের দাম কিছুটা বেশি। গত বছর যে গুড়ের ভাড় (মাটির পাত্র) ছিলো ৪০০টাকা, এ বছর সে ভাড়ই ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরাও একটু লাভের জন্য এখানে গুড় ও পাটালি কিনতে আসি। তবে কলারোয়ার খেজুর গুড় ও পাটালির মান অনেক ভালো বলে জানান তিনি।
বরিশাল, পটুয়াখালী ও খুলনা থেকে আসা কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, এই হাট থেকে আমরা ভাড়ভর্তি গুড় কিনে নিজ এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা সদরে নিয়ে যান। তারা বলেন, এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় এসব গুড় বা পাটালি কিনে দ্রুত বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে পারছি।
উপজেলার খোরদো বাজার ব্যবাসায়ী সমিতির নেতারা জানান, খেজুর গুড় ও পাটালির হাটের পরিবেশ ভালো রাখার জন্য আমরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছি।