
কে এম আনিছুর রহমান ::
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী চন্দনপুর ইউনিয়নের কাদপুর, চান্দুড়িয়া ও গোয়ালপাড়া গ্রামে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক খুবই দুর্বল। খোলা মাঠে গেলে মোবাইল ফোনে একটু-আধটু নেটওয়ার্কের দেখা মেলে। এরপর ফোনে কথা বলতে বলতে নেটওয়ার্ক চলে যায়।
এ ছাড়া ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ ওই ৩ গ্রামের মানুষ তেমনভাবে পান না। কেন না, শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ছাড়া ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না। এ জনপদের মানুষ পিছিয়ে পড়ছেন প্রতিদিনই। বাড়ছে দেশ-বিদেশের সঙ্গে তাদের দূরত্ব। তারা বঞ্চিত হচ্ছে সব ধরনের ই-সেবা থেকে।
সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী হিজলদি, বড়ালি, চান্দা, ভাদিয়ালি, কেঁড়াগাছি গ্রামে শক্তিশালী মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকলেও যা আছে, তাতে মোবাইল ফোন গ্রাহকরা মোটামুটি কথা বলতে পারেন। কিন্তু ৭নং চন্দনপুর ইউনিয়নের কাদপুর, চান্দুড়িয়া ও গোয়ালপাড়া গ্রামের মানুষের মোবাইল ফোনে কথা বলার সেই সুযোগ টুকু নেই।
কলারোয়ার এই ৩ গ্রামের মধ্যে চান্দুড়িয়া একটি অতি প্রাচীন বাজার। বাজারে এখন মোবাইল ফোন বিক্রির অনেকগুলো দোকান রয়েছে। সেখানে অনেক প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। কেউ কেউ তারবাহিত ওয়াইফাই সংযোগ নিতে শুরু করলেও তা মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের বিকল্প হতে পারে না।
চান্দুড়িয়ায় রয়েছে কেসিজি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামের একটি বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে রয়েছে একটি মানসম্মত বিজ্ঞানাগার। সেখানে রয়েছে পর্যাপ্ত কম্পিউটার ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। রয়েছে অনেক কম্পিউটার প্রশিক্ষণার্থী। রয়েছে একটি সরকারি প্রাইমারি স্কুল। পাশের গ্রাম কাদপুরেও রয়েছে আর একটি সরকারি প্রাইমারি স্কুল। চান্দুড়িয়া বাজারে রয়েছে ‘টিএমসি’ নামের একটি সমবায় ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় এই সব শিক্ষা, সামাজিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
ওই এলাকায় বসবাসকারী লোকজন জানান, সীমান্তের ঠিক ওপারে ভারতীয় ভূখ-ের সবখানেই তাদের দেশের মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের কোনো কমতি নেই। এদেশের সীমান্তবর্তী জনপদেও ভারতীয় মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। এমনকি অবাক হওয়ার মতো তথ্য হলো, চান্দুড়িয়া-কাদপুর থেকে মাত্র দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে গ্রামীণ ও রবির টাওয়ার। এত কাছে টাওয়ার থাকতেও এই জনপদ রয়ে গেছে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের বাইরে।
চান্দুড়িয়া বাজারের ব্যবসায়ী রোকুনুজ্জামান কাজল, ডা. ফারুক হোসেন, আমানুর রহমান, সাদউল্লাহ, রুহুল কুদ্দুস মোল্লা, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রধান শিক্ষক হাসান আবু তাহের, মাস্টার আব্দুস সবুর, সাংবাদিক আতাউর রহমান, জাহিদ হাসান টিপুসহ চান্দুড়িয়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, নেটওয়ার্ক না থাকায় তারা যোগাযোগের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েন।