
নাজমুল হক :
সাতক্ষীরার কলারোয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় প্রত্যাহার হওয়া সরকারি দুই কৌশলীর বিরুদ্ধে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। সাতক্ষীরা জর্জ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউট অ্যাডভোকেট মো. ওসমান গণি ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সোমবার বিকেলে ওই দুই সরকারি আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছেন। নোটিশে সরকারি আইন কর্মকর্তা হিসেবে পেশাগত অসদাচারণ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে কেন শস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে না তা তিন কার্য দিবসের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, কলারোয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা ঘটনায় জি.আর২৫৯/১৪ নং মামলা থেকে উদ্ভুত এসটিবি ২০৭/১৫ এবং এসটিসি ২০৮/১৫ নং মামলায় চলতি বছরের ১ জুলাই আসামী পক্ষের হয়ে দুই আইনজীবী সাতক্ষীরা দায়রা জজ ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা পরিচালনা করেন। ওই দিন বেলা পৌনে ১২টায় কলারোয়া পৌরসভার সদ্য বরখাস্ত হওয়া মেয়র ও যুবদল নেতা আক্তারুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক রকিবুল ইসলাম, তুলসিডাঙ্গা গ্রামের আলতাফ হোসেন ও গদখালি গ্রামের মফিজুল ইসলাম আত্মসমার্পন করলে জর্জ কোর্টের অতিরিক্তি পাবলিক প্রসিকিউট (সরকারি কৌশুলি )এড. প্রসাদ কুমার সরকার ও এড. জিল্লুর রহমান তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে মামলার চার্জগঠনে বিরোধীতা করেন।
সাতক্ষীরা জর্জ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউট মো. ওসমান গণি ভয়েস অব সাতক্ষীরা ডটকমকে জানান, সরকারি দুই আইনজীবী এড. প্রসাদ কুমার ও এড. জিল্লুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর মামলায় বিরোধীতা করায় তাদের সরকারি মামলার শুনানি থেকে প্রত্যাহার করা হয়। গত ৭ জুলাই ঘটনার তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউট এড. আজহারুল ইসলামকে আহবায়ক ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউট এড. ফাহিমুল হক কিসলু ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউট মোস্তফা নূরুল আলমকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ঘটনার দিন আদালতে উপস্থিত ১৪/১৫ জন আইনজীবীর বক্তব্য নিয়ে গত ১৬ জুলাই তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করে। সেথানে ঘটনার সত্যতা পান এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেন। এ ঘটনায় গত সোমবার পাবলিক প্রসিকিউট মো. ওসমান গণি স্বাক্ষরিত এড. প্রসাদ কুমার সরকার ও এড. জিল্লুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। সেখান আমাগী তিন কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়।
পাবলিক প্রসিকিউট মো. ওসমান গণি আরো জানান, নোটিশের জবাব পাওয়ার পরে আইন, বিচার ও সংসদ বিষায়ক মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হবে। তিনি আরো জানান, সরকারের নিকট থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রীর মামলার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় সরকারি কৌশলীদের বিরুদ্ধে ছাড় দেওয়া যায় না। যে মামলায় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছিলো সে মামলার বিরোধীতা করে সরকারি আইনজীবী হিসেবে থাকতে পারে না। তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।