
কে এম আনিছুর রহমান,কলারোয়া প্রতিনিধি :
শিশুটির বয়স ১৯ দিন। নাম তার জয়। জন্মের পর থেকে নিষ্পাপ এই শিশুটি আজও মায়ের দুধ পান করা তো দুরের কথা মায়ের আদর ভালবাসা পর্যন্ত পায়নি। শিশুটি জন্মের পর থেকেই তার দাদির নিকট লালিত পালিত হচ্ছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, ১০ মাস ১০ দিন সন্তান পেটে রেখে একজন মা এতবড় নিষ্ঠুুর হতে পারে ! বিরল দৃষ্ঠান্ত তার এই মা। ঘটনাটি ঘটেছে, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী চান্দুড়িয়া গ্রামে।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিগত ২০১৪ সালে উপজেলার সীমান্তবর্তী চান্দুড়িয়া গ্রামের শাহাজাহানের ছেলে আব্দুল কুদ্দুসের সহিত একই গ্রামের ইয়ারালীর মেয়ে হিরা আক্তারের ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখে-শান্তিতে চলছিল। এরইমধ্যে তাদের ঔরশে চলতি বছরে ১৪ আগস্ট একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়।
নিষ্পাপ শিশুটির পিতা কুদ্দুস আলী জানায়,তাদের ঔরশে পেটে যাওয়া সন্তানটি ভুমিষ্ঠ হওয়ার ২ মাস আগে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারবারিক বিষয় নিয়ে গোলযোগ সৃষ্টি হয়। ওই গোলযোগকে কেন্দ্র করে তার স্ত্রী হিরা আক্তার প্রতিজ্ঞা করে স্বামীর ঔরশজাত সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার পর থেকে সন্তানটির কখনও মুখ দেখবে না। প্রতিজ্ঞার দুই মাস পর গত ১৪ আগস্ট তার বাড়ির পাশ্ববর্তী গয়ড়া বাজারে আছিয়া মেমোরিয়াল ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে সন্তানটি ভুমিষ্ট হওয়ার পর তার স্ত্রীর জ্ঞান ফিরলে শিশু সন্তানটি না দেখে ওই ক্লিনিকে ফেলে তার পিতার বাড়ি চলে যান। পরে তার মা অর্থ্যাৎ দাদি শিশুটিকে ক্লিনিক থেকে নিয়ে বাড়ি যায়। আজও পর্যন্ত দাদি শিশুটিকে মার ভুমিকায় লালন-পালন করছে। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে একাধিকবার বসাবসি হলেও কোন নিষ্পত্তি না হওয়ায় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
নিস্পাপ শিশুটির মা হিরা আক্তার ঘটনাটির সতত্যা স্বীকার করেন।
নিষ্পাপ শিশুটির দাদি তাছলিমা খাতুন জানান, শিশুটির জন্মের ১০ মিনিট পর থেকে তিনি লালন-পালন করছেন। তবে একজন মায়ের আদর ভালবাসা কি অন্য কেউ মেঠাতে পারে ? প্রায় সময় শিশুটি কাঁন্না কাটি করে। বাইরের দুধ খেতে চায় না তারপরেও খাওয়ানো হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত বাচ্ছাটি বাঁচাতে পারবেন কিনা এক মাত্র আল্লাহ জানেন। তিনি আরো বলেন, এই নিষ্পাপ শিশুটিকে একজন মা বেঁেচ থেকে যে এতবড় কষ্ট দিতে পারে তা তার জানা ছিলনা। তিনি এই নিষ্ঠুর আচরণের বিচার চেয়েছেন আল্লাহর কাছে।
ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় চাঞ্জল্যকর সৃষ্ঠি হয়েছে।