কলারোয়া কাগজে-কলমে-মুখে ভিক্ষুকমুক্ত বাস্তবে কি ভিক্ষুকমুক্ত হবে না ?


846 বার দেখা হয়েছে
Print Friendly, PDF & Email
কলারোয়া কাগজে-কলমে-মুখে ভিক্ষুকমুক্ত বাস্তবে কি ভিক্ষুকমুক্ত হবে না ?
মার্চ ৩১, ২০১৮ কলারোয়া ফটো গ্যালারি
Print Friendly, PDF & Email

কে এম আনিছুর রহমান,কলারোয়া ::
সাতক্ষীরার কলারোয়া ভিক্ষুকমুক্ত উপজেলা ঘোষনা করা হলেও বর্তমানে প্রায় প্রতিদিনই উপজেলা সদরসহ ১২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষুকদের হরহামেশা দেখা যায়। স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। ঠিক তেমনি কাগজে-কলমে-মুখে ভিক্ষুকমুক্ত উপজেলা ঘোষনা করা হলেও বাস্তবে ভিক্ষুক মুক্ত করা সত্যিই বড় কঠিন। এ যেনো কাজীর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই’-এমন অবস্থা।
ভিক্ষুকমুক্ত কলারোয়ায় ভিক্ষুকের আধিক্যতা যেনো আগের চেয়ে বেশিতে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষুকদের ভিক্ষা করতে দেখা যায়। আর শুক্রবার এলে তো কথাই নেই। প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার ভিক্ষুকের হাট বসে যেখানে সেখানে। বাজারগুলোতে দোকানে দোকানে গিয়ে, বাসাবাড়িতে গিয়ে টাকা, চালসহ অন্যান্য ভাবে ভিক্ষা চায় বিভিন্ন বয়সী ভিক্ষুকরা। সাথে যোগ করে সাহায্য এর অনুনয়-বিনয়। সাহায্য করুন কিংবা টাকা দেন বলে ভিক্ষুকেরা হাত বাড়িয়ে দেন যত্রতত্র। আর জুম্মার দিন হওয়ায় বিভিন্ন মসজিদের সামনে ভিক্ষুকদের জটলা বসে।
জানা গেছে- সরকার ভিক্ষুকমুক্ত করতে বিভিন্ন কর্মসংস্থান ও এককালীন সহযোগিতা দিচ্ছেন। নগদ টাকার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন উপকরণ দেয়া হচ্ছে অনেক ভিক্ষুকদের। কিন্তু স্বভাব না বদলিয়ে বিভিন্ন বয়সী অনেক ভিক্ষুক হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন ভিক্ষার জন্য। অল্প বয়সী শিশু থেকে মধ্য বয়সী এমনকি ৭০/৮০ বছর বয়সী পুরুষ-মহিলা ভিক্ষুক ভিক্ষাবৃত্তিতে থেকেই যাচ্ছেন। দূর্ভাগ্যজনক ভাবে শিশুদের সাথে নিয়ে ভিক্ষা করার ফলে অল্প বয়স থেকেই ভিক্ষাবৃত্তিতে আগ্রহী হয়ে পড়ছে শিশু-কিশোররা।
গত ৩০ মার্চ শুক্রবার কলারোয়া উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ,তুলশীডাঙ্গা মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদের সামনে রীতিমত ভিক্ষুকের লাইন পড়ে যেতে দেখা যায়। উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্দ্ধতন ব্যক্তি, রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বসহ সব শ্রেণির মানুষের সামনেই এমন চিত্র ফুটে উঠছে। তবে সেই আগের কথা কাজীর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই। আছে তবে বলার চেয়ে অনেক কম।
অনেকে বলছেন,কলারোয়া উপজেলার পার্শ্ববর্তী সাতক্ষীরা সদর, শার্শা, ঝিকরগাছা উপজেলা ভিক্ষুক মুক্ত ঘোষনা হওয়ার পর সেখানকার ভিক্ষুকের চাপ এখন কলারোয়ার উপর পড়েছে।
তবে সাধারণ মানুষ বলেন- সত্যিকারে কি আমরা ভিক্ষুক মুক্ত হতে পেরেছি ? পার্শ্ববর্তী এলাকার ভিক্ষুকের পাশাপাশি কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভিক্ষুকও এখানে ভিক্ষা করছেন প্রতিনিয়ত।
কয়েকজন দোকান ব্যবসায়ী বলেন,গড়ে প্রতিদিন ১২০-১৫০ জন ভিক্ষুককে ভিক্ষা দিতে হয়। কোন কোন ইউনিয়নে প্রচুর সংখ্যক ভিক্ষুককে ভিক্ষা করতে দেখা যায়।
সব মিলিয়ে কলারোয়াবাসী এ রকম দৃশ্য আর দেখতে চান না। উন্নয়নশীল মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রের কলারোয়া উপজেলাকে বাস্তবিক অর্থে ভিক্ষুকমুক্ত করতে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
##