
কে এম আনিছুর রহমান,কলারোয়া :
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় সোনালী ব্যাংকে জোড়া খুনের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তবে মামলাটি হস্তান্তর করা হয়েছে ডিবি পুলিশে। ব্যাংক ম্যানেজার মনোতোষ সরকার বাদি হয়ে মামলাটি(নং-১৮) দায়ের করেছেন। ঘটনার ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। ঘটনাটি জনাকীর্ণ এলাকায় ঘটলেও পুলিশ এখনও এর কোনো কিনারা করতে পারেনি। এনিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে জনমনে।
কলারোয়া বাসস্ট্যান্ড মোড়ে সোনালী ব্যাংকটি একটি জনবহুল এলাকায় অবস্থিত। এরপাশে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক এটিএম বুথ। কলারোয়া বাসস্ট্যান্ডের এই স্থানটিতে সারারাত লোকজন থাকে। রাতভর চায়ের স্টল ও হোটেল খোলা থাকে। এ রকম লোকেশনের একটি ব্যাংকের অভ্যন্তরে কীভাবে এমন দুর্ধর্ষ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে, তা অবশ্যই প্রশ্নবোধক। কীভাবে ঘাতকেরা এমন জনবহুল স্থান থেকে ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে গেল ? এছাড়া কলারোয়া শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য একজন এসআই ও একজন এএসআই’র নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ভ্রাম্যমাণ ডিউটিরত থাকে। তারপরেও এঘটনা নির্বিঘেœ ঘটে যাওয়াটা চরম বিস্ময়কর-এমন কথা বলছেন অনেকেই। ঈদের পূর্ব মুহূর্তে যখন পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপনের জন্য অপেক্ষমান ছিলেন ওই দুই নৈশ প্রহরী, ঠিক তখনই তাদের খুন হতে হতে হল। এই নিরীহ দুই নৈশ প্রহরীকে কী জবাব দেবেন-ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। যে অস্ত্র নিরাপত্তার জন্য নৈশ প্রহরীদের দেওয়া হয়, রাতে কেন তা ভোল্টে আটকে রাখা হয়-এমন প্রশ্নও দেখা দিচ্ছে। আর কীভাবে ঘাতকেরা ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলো-তাও রহস্যাবৃত থেকে যাচ্ছে। ব্যাংক ম্যানেজার মনোতোষ সরকার বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, ব্যাংকের ভোল্টের সমুদয় টাকা অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। কোনো কাগজপত্রও খোয়া যায়নি। অস্ত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, রাতে নৈশ প্রহরীদের কাছে অস্ত্র দেওয়ার কোনো বিধান নেই। এদিকে নিহত দুই নৈশ প্রহরীর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃৃপক্ষ উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে শাখা ব্যবস্থাপক সাংবাদিকদের জানান।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম জানান, বুধবার রাতে ব্যাংক ম্যানেজার মনোতোষ সরকার বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে একটি মামলা হয়েছে। যার নং- ১৮.তারিখ-১৫/৭/১৫ইং। মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত ঘাতকদের ধরার জন্য কলারোয়া থানা পুলিশ ডিবি পুলিশের সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
সাতক্ষীরা ডিবি ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তিনি কলারোয়া সোনালী ব্যাংকে জোড়া খুনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তভার গ্রহন করেছেন। তবে এখনও পর্যন্ত ঘটনার প্রকৃত রহস্য নিশ্চিত হতে পারেননি। এমনকি এখনও পর্যন্ত কোন আসামীও আটক করতে পারেন। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন ও ঘাতকদের ধরার জন্য ডিবি পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।