কালিগঞ্জে ব্র্যাকের উদ্যোগে ব্রিধান-৪৯ চাষ করে কৃষকরা অধিক লাভবান হয়েছে


464 বার দেখা হয়েছে
Print Friendly, PDF & Email
কালিগঞ্জে ব্র্যাকের উদ্যোগে ব্রিধান-৪৯ চাষ করে কৃষকরা অধিক লাভবান হয়েছে
নভেম্বর ১৭, ২০১৫ তালা ফটো গ্যালারি
Print Friendly, PDF & Email

বি. এম. জুলফিকার রায়হান, তালা
চলতি আমন মেসৈুমে উন্নত জাতের উফশী ধান চাষ করে অধিক লাভবান হয়েছে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের কৃষকরা। এখানকার কৃষকরা বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের উদ্যোগে এবার দেশীয় জাতের বদলে উন্নত এবং অধিক ফলনশীল ব্রিধান-৪৯ চাষ করে। স্বল্প আয়ুর এই ধান কেটে এখন সেখানে সরিষা চাষ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে কৃষকরা। সরিষা তুলে ওই জমিতে আবার বোরো ধান চাষ করবে। এভাবে একদিকে বাম্পার ধান উৎপাদন, অন্যদিকে একই জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদন করতে পারায ধানচাষী কৃষকরা অর্থনৈতিক ভাবে অধিক লাভবান হয়েছে।
ব্র্যাক কালিগঞ্জ শাখার ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা জানান, ব্র্যাকের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায়, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় ১৮৩ একর জমিতে ব্রিধান-৪৯ চাষ হয়। এছাড়াও ব্র্যাকের উদ্যোগে অত্র উপজেলায় ৫৬ একর জমিতে ভূট্টা, ১৬১ একর জমিতে বোরো ধান, ৪৬ একর জমিতে সূর্য্যমূখী, ৫৫ একর জমিতে আউশ ধান এবং ১৩১ বিঘা জমিতে উন্নত পদ্ধতিতে সবজি চাষ করা হয়। এরমধ্যে উপজেলার উভাকুড় ব্লকে ২১ একর জমিতে ২৮জন কৃষক উফশী ধান চাষাবাদ করে। মঙ্গলবার বিকালে উভাকুড় ব্লকের ধান আনুষ্ঠানিক কর্তন করা হয়। এউপলক্ষ্যে ব্র্যাকের শস্য কর্তন ও মাঠ দিবস সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কর্তনকৃত ধান প্রকাশ্যে ঝাড়াই ও মাড়াই করে একর প্রতি ৭১মন ধান উৎপন্ন’র রেকর্ড করা হয়। আমন মৌসুমে দেশীয় জাতের ধান চাষ করে কৃষকরা যেখানে একর প্রতি মাত্র ৩০/৩২ মন ধান উৎপাদন করতো, সেখানে একর প্রতি ৭১ মন ধান উৎপন্ন দেখে স্থানীয় অন্য কৃষকরা উন্নত জাতের ধান চাষের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করে। উক্ত মাঠ দিবস সভায় সভাপতিত্ব করেন, ব্র্যাক’র কালিগঞ্জ শাখার ম্যানেজার মো. গোলাম মোস্তফা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আনারুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন স্থানীয় ইউনিন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. এবাদুল ইসলাম, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম, সাংবাদিক বি.,এম. জুলফিকার রায়হান। এসময় অন্যান্যের মধ্যে ব্র্যাক কর্মী মৈত্রী ঘোষ, নবদ্বীপ বিশ্বাস, জাকির হোসেন, সরজিৎ ও বিনয় কুমার প্রমুখ বক্তৃতা করেন। স্থানীয় কৃষকরা জানান, উফশী ধান চাষের পূর্বে ব্র্যাক থেকে উন্নত প্রশিক্ষন নেওয়া হয়। পরে সাথে ব্র্যাক কর্মীদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ক্ষেতে উফশী ধানের অল্প বয়সের চারা রোপন, সঠিক মাত্রায় সার ও কীট নাশক প্রয়োগ, ধানক্ষেতে লোগো এবং পার্সিং ব্যবহার করায় ধানের এই বাম্পার ফলন হয়েছে। এই ধান চাষে চিটার পরিমান খুবই কম পাওয়া গেছে। এছাড়া উফশী জাতের ধান স্বল্প আয়ুর হওয়ায় একই জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদন’র সুযোগ হচ্ছে। কালিগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার, মো. আনারুল ইসলাম ধানের উচ্চ ফলনে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ব্র্যাকের প্রশিক্ষন ও নিবিড় তত্বাবধানের ফলে কৃষকরা চলতি আমন মৌসুমে ব্রিধান-৪৯ চাষ করে অধিক লাভবান হয়েছে। এসময় তিনি, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ধান চাষে অধিক লাভ অব্যাহত রেখে কৃষকদের ভাগ্য বদলের জন্য আগামীতে আধুনিক পদ্ধতীতে উন্নত জাতের ধান চাষ অব্যাহত রাখার জন্য সকল কৃষকের প্রতি আহবান জানান।