
স্টাফ রিপোর্টার :
ভেজাল খাদ্য পরিহার এবং রাসায়নিক সার ও কীনাশকমুক্ত সবজি খেয়ে কিডনীর ভয়ংকর ব্যাধিরোধ করা সম্ভব উল্লেখ করে বিশিষ্ট নিউরোলজিস্ট ও কিডনী বিশেষজ্ঞ ডা. ফখরুল ইসলাম বলেন ‘ এ জন্য গন সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে’।
ইচ্ছা হলেই ব্যথার ওষুধ না খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন এজন্য সাধারন রোগী ও ডাক্তারদেরও সচেতন হতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রেখে পরিমিত খাদ্য গ্রহন করে এই ব্যাধির কবল থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি ।
ইনসাফ বারাকা কিডনী হাসপাতাল ও লায়নস ক্লাব অব ওয়েসিস এর যৌথ উদ্যোগে সাতক্ষীরায় দুটি ফ্রী কিডনী ক্যাম্পে চিকিৎসা দেওয়ার লক্ষ্যে সাতক্ষীরায় আগত লায়ন ডা. ফকরুল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। জনাকীর্ন এই সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইনসাফ বারাকার ডিএমডি মো. আলতাফ হোসেন ,লায়ন আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।ডা. ফকরুল ও তার সহকর্মী চিকিৎসকরা আজ শুক্রবার শ্যামনগরে আবদুল জলিল ফাউন্ডেশনে এবং কাল শনিবার সাতক্ষীরা শিল্পকলা একাডেমিতে ফ্রী কিডনী চিকিৎসা ক্যাম্পে চিকিৎসা দেবেন ।
ডা. ফকরুল পশ্চিমা দেশ সমূহের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে বলেন চল্লিশোর্ধ প্রতিটি মানুষের হেলথ চেক আপের মধ্যে আনা প্রয়োজন। কারন তারা জানেন না কখন তাদের অজান্তে তারা উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন। নিজের সচেতনতার মধ্যেই রোগ প্রতিরোধ নিহিত মন্তব্য করে তিনি বলেন ভেজাল খাদ্য পরিহার করা গেলে শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ কিডনী রোগমুক্ত হতে পারবেন। হেলথ ইনস্যুরেন্স চালু ও ক্লিনিকগুলিকে কিডনী রোগ বিষয়ে আরও সচেতন করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। সাতক্ষীরা নানা দিক দিয়ে পশ্চাদপদ উল্লেখ করে তিনি বলেন দেশের অন্যান্য স্থানের কিডনী রোগীরা খুব স্বাভাবিকভাবে চিকিৎসা ও প্রয়োজনে অস্ত্রোপচারের ইচ্ছা প্রকাশ করে কিডনী ব্যাধিমুক্ত থাকার চেষ্টা করছেন। তাদের অনুসরন করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন ‘ কিডনী ব্যাধি নিরাময়ে তিনি লায়নসের হয়ে এবং ইনসাফ বারাকার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি কয়েক বছর যাবত এ ধরনের ক্যাম্প বসিয়ে কিডনী চিকিৎসা দিয়ে আসছেন বলে মন্তব্য করেন । এমনকি ঢাকায় তার প্রতিষ্ঠানে গেলে তিনি সাতক্ষীরার মানুষ হিসাবে যথা সম্ভব কম খরচে কিডনী চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত বলেও জানান ফকরুল। ডা. ফকরুল সাতক্ষীরার মুকুন্দপুর গ্রামের একজন কৃতী সন্তান। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য বোধের উল্লেখ করে ডা. ফকরুল বলেন সরকারের সহায়তায় সাতক্ষীরায় কিডনী ডায়ালিসিসের ব্যবস্থা করা যায় কিনা তা নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন দেশ থেকে কিডনী রোগ নিরাময় এককভাবে সরকারের পক্ষে সম্ভব নয় , এজন্য বেসরকারি সেক্টরগুলিকেও এগিয়ে আসতে হবে। তিনি সাতক্ষীরা হাসপাতালে এ জন্য একটি ইউনিট গড়ে তোলা যায় কিনা তা নিয়েও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান ।
ডা. ফকরুল আরও বলেন চিকিৎসা সেবা একটি মহৎ সেবা , এই সেবায় ব্যবসা বড় নয় এমন দায়িত্ব বোধ থেকে তিনি কিডনী ক্যাম্প বসিয়েছেন। এব্যাপারে সকলের বিশেষ করে সাংবাদিক সমাজের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে তিনি বলেন সকলে মিলে সচেতনতা গড়ে তুলতে পারলে বাংলাদেশকে কিডনী রোগমুক্ত করা সম্ভব।লায়নস ক্লাব অব ওয়েসিসের ৩০ সদস্যের বেশির ভাগ সাতক্ষীরার মানুষ জানিয়ে তিনি বলেন বিশ্বে ছয় শত লায়নস ক্লাব আছে এবং এর সদস্য সংখ্যা ১৪ লাখ।
প্রেসক্লাব সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনায় ছিলেন ক্লাবের সাধারন সম্পাদক এম . কামরুজ্জামান। এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ডা. ফকরুল ।