
নাজমুল আলম মুন্না,সাতক্ষীরা ::
“সবার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা চাই, খাদ্য অধিকার আইন চাই” এই প্রতিপাদ্যকে ধারন করে ৩১ মার্চ শনিবার সকাল ১০ টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ ফার্মগেট, ঢাকা মিলনায়তনে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ এর আয়োজনে এবং একশন এইড বাংলাদেশ, কেয়ার ও ডিসিএ’র আর্থিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ এর সচিবালয়ের সমন্বয়কারী কানিজ ফাতেমার সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ-এবং পিকেএসএফে চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান। অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন এমডিএস এর নির্বাহী পরিচালক ও নরশিংদি জেলা কমিটির সভাপতি ফাহিমা খানম, বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি আনোয়ার জাহিদ, খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ সম্পাদক মন্ডলির সদস্য আতাউর রহমান লিটন, আব্দুর রহমান, কমিটির যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক আমানুর রহমান, কেয়ার বাংলাদেশ এর পরিচালক মোঃ আনোয়ার হোসেন, খিষ্ট্রান এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর সাকিব নবী প্রমুখ। সম্মেলনে বক্তারা বলেন বিগত কয়েক বছর ধরে অর্ধনৈতিক ও সামাজিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশ, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য-এসডিজি অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিনত হওয়া। এ প্রেক্ষাপটে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং অন্যান্য সকল কার্যক্রমের মাধ্যমে এসডিজির ১ নং লক্ষ্য ” সব ধরনের দারিদ্র্যের অবসান ” ২ নং লক্ষ্য ‘ ক্ষুধামুক্তিসহ সকল লক্ষ্য অর্জনে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। এ পেক্ষাপটে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) গত ১৭ মার্চ ২০১৮ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রাথমিক স্বীকৃতি প্রদান করেছে। তবে চুড়ান্তভাবে এই অবস্থান নিশ্চিত করতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। এসকল সাফল্যের পাশাপাশি কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের সীমাবদ্ধতাও বিদ্যমান। যেমনঃ দরিদ্র মানুষের এক অংশের খাদ্য নিরাপত্তা, গুনগত শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সাফল্য এখনও আমরা অর্জন করতে পারিনি। বর্তমানে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ৯৩ লক্ষ। অতি দরিদ্র ২ কোটি ৮ লক্ষ। এছাড়া সমাজে আয়-বৈষম্যের ব্যাপকতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বক্তারা আরও বলেন খাদ্য আমাদের অধিকার। কিন্তু রাষ্ট্র সেটিকে মৌলিক চাহিদা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সাধারণ জনগনকে অধিকার বঞ্চিত করেছে। খাদ্যের মধ্যে
পুষ্টি না থাকলে কোন শিশু বেশিদূর অগ্রসর হতে পারে না তেমনি পারবে না সমাজে, দেশে কোন ভূমিকা রাখতে। রাজনৈতিক নেতা, সংসদ সদস্য এবং নিতি নির্ধারণী ব্যাক্তি ( আমলা) মিলে খাদ্য অধিকার বাস্তবায়নে এক সাথে আন্দোলনে অংশগ্রহণ জরুরি। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে অগ্রসর করতে হলে খাদ্য অধিকার আইন করার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন দেশে কোন আইন সহজে করা হয়না তবুও বাংলাদেশে ১১ হাজার আইন রয়েছে। দেশে এখনও অনেক দারিদ্রতা রয়েছে সেগুলোর ধরনও আবার ভিন্ন ভিন্ন। এখন বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে ৩ বেলা খেতে পায়না মানুষ অথচ সরকার চায়না খাদ্য অধিকার আন্দোলন হোক। পুষ্টিহীনতা কোন পর্যায়ে সেটা বলা বাহুল্য মনে হয়। ফুড সিকুরিটি ইনসিয়র করতে হবে এটা খুবই গুরুত্বপুর্ণ ও জরুরি। ফুড সিকুরিটি পলিটিক্যাল, এটা নিয়ে আমাদের সকলকে ভাবতে হবে। আমাদের এই আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে খেতমজুর ও কৃষকদের নিজস্ব সংগঠনকে সক্রিয় করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৫১টি জেলায় ৮০০ টি সদস্য সংগঠন হিসাবে রয়েছে এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে নতুন নতুন সদস্য সংযুক্ত করার প্রস্তুতি চলছিল । খাদ্য অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রকে অনেক বেশি দায়িত্ব নিতে হবে এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনী উদ্যোগ নিতে হবে ক্ষুধামুক্তি আন্দোলনে। পরিশেষে দ্বিতীয় বার্ষিক সাধারণ সভায় খাদ্য অধিকার এবং জাতীয় নির্বাচনী ইশতেহার ক্যাম্পেইন ২০১৮ বিভিন্ন প্রস্তাবিতর্ক কর্মসূচি গৃহিত হয়। সম্মেলনে বাংলাদেশের ৫০ জেলার ৯৭ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।