ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হবে :প্রধানমন্ত্রী


376 বার দেখা হয়েছে
Print Friendly, PDF & Email
ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হবে :প্রধানমন্ত্রী
ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬ জাতীয় ফটো গ্যালারি
Print Friendly, PDF & Email

ভয়েস অব সাতক্ষীরা ডটকম ডেক্স:
গণভবন থেকে বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৫১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা|

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো পেঁৗছে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা ১৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা অর্জন করেছি। আমরা ২০১৬ সালে ১৬ হাজার মেগাওয়াট, ২০২১ সালে ২৪ হাজার, ২০৩০ সালে ৪০ হাজার ও ২০৪১ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী দেশে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে দলীয় নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যেসব প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছি, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নে আমি দেশবাসীসহ সবার দোয়া চাই, সহযোগিতা চাই। যেসব এলাকায় কাজ হবে, সে এলাকাবাসীর সহযোগিতা চাই।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে দেশ উন্নত হচ্ছে। দেশের কোনো মানুষ দরিদ্র থাকবে না। কেউ গৃহহারা থাকবে না, সবাই পেট পুরে খেতে পারবে। শিক্ষা-চিকিৎসা থেকে কেউ বঞ্চিত হবে না।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে একযোগে ৫১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এ সময় তিনি ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিস চালুসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। খবর :বাসস, ইউএনবি, বিডিনিউজ ও বাংলানিউজ।

গণভবনে মূল অনুষ্ঠানস্থলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ ভিডিও কনফারেন্সটি পরিচালনা করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ায় ৯০টি গ্রামে ছয় হাজার পরিবারের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এর পর চট্টগ্রামের পটিয়ার ১০৮ মেগাওয়াট ইসিপিভি চট্টগ্রাম লিমিটেড, কুমিল্লার জাঙ্গালিয়ার ৫২ দশমিক ২ মেগাওয়াট লাকধানাভি বাংলা পাওয়ার লিমিটেড, গাজীপুরের কড্ডার ১৫০ মেগাওয়াট বিপিডিবি-আরপিসিএল পাওয়ারজেন লিমিটেড ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (এসটি ইউনিট) বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া তিনি সড়ক যোগাযোগ সম্প্রসারণে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের অংশ হিসেবে পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে নবনির্মিত শেখ কামাল সেতু ও শেখ জামাল সেতু এবং সিলেট সড়ক জোনে ইস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (ইবিবিআইপি) আওতায় নবনির্মিত ১৬টি সেতু একযোগে উদ্বোধন করেন।

রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণে প্রধানমন্ত্রী সিগন্যালিং ব্যবস্থাসহ টঙ্গী-ভৈরববাজার ডাবল লাইন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত দ্বিতীয় রেললাইনে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন। এর পর তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন স্থাপনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, উদ্বোধনসহ নারায়ণগঞ্জ শহরের পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত সোনাকান্দা পানি শোধনাগারেরও উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া জয়পুরহাট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনসহ এই জেলার বিভিন্ন স্থাপনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেন।

গোপালগঞ্জের প্রকল্পগুলোর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জবাসীকে তার মা-বাবা-ভাইসহ স্বজন হারানো স্বজন বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়ার মানুষের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। সব হারানোর পরও তারাই আমাকে বুকে টেনে নেন।’

বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের মহাপরিকল্পনার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালে আমরা কী পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করব, সে পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। আমরা ২০১৬ সালে ১৬ হাজার মেগাওয়াট, ২০২১ সালে ২৪ হাজার, ২০৩০ সালে ৪০ হাজার ও ২০৪১ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। দোয়া করবেন, এ লক্ষ্যমাত্রা যেন অর্জন করা যায়। তিনি বলেন, ১০০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে এরই মধ্যে ৭৬ শতাংশ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পেঁৗছে দিতে পেরেছি। যেসব এলাকায় গ্রিডলাইন নেই, সেখানে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুতায়নের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জে পানি শোধনাগারের উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা বলেন, পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হবেন। পানি শোধন করতে অনেক খরচ হয়।

ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুয়াকাটা এমন একটা জায়গা, যেখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। যেহেতু আমি সেখানে বহু আগে গিয়েছিলাম, সে সময়েই এটিকে একটি উন্নত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার চিন্তা করি।

প্রকল্পগুলো উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন পয়েন্টে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যক্তি ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুত শুরুর তাগিদ দেন।

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী প্রকৌশলী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, ভৈরব থেকে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি, কুমিল্লা থেকে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম থেকে সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, পটুয়াখালীতে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদার এমপি ছাড়াও সংশ্লিষ্ট জেলার আওয়ামী লীগের কেন্দ্র্রীয় ও স্থানীয় নেতা, সংসদ সদস্য, মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।