
আলতাফ হোসেন বাবু / আব্দুর রহমান মিন্টু :
সাতক্ষীরা এক্য্রপ্রেস খ্যাত ক্রিকেট তারকা মুস্তাফিজুর রহমান চার মাস পর ঢাকা থেকে তার নিজ জম্মভূমি সাতক্ষীরায় এসেছেন। শনিবার দুপুরে বিশ্বখ্যাত এই তারকা ক্রিকেটার সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে পৌছালে সেখানে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। সাতক্ষীরার সূর্য সন্তানকে কাছে পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়ে এলাকার হাজারও মানুষ। জাতীয় দলে খেলে বিশ্বখ্যাতি অর্জনের পর এই প্রথম সাতক্ষীরার মাটিতে পা রাখলেন মুস্তাফিজ।
সাতক্ষীরার মাটিতে পা রেখেই মুস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বললেন, খেলার মাঠে ব্যস্ত থাকার কারণে গত ঈদে বাড়িতে আসতে পারেনি। এই প্রথম বাবা-মাকে ছাড়াই ঈদ কাটিয়েছি। তার মনে হচ্ছে আজ যেন ঈদ। মা-বাবা,বন্ধু ও এলাকাবাসীর সাথে সময় কাটাবেন ভেবে আনন্দের যেনো শেষ নেই তার। স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে তিনি বললেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে তার প্রচেষ্টার কোন কমতি থাকবেনা। তিনি বলেন, আমি, সৌম্য সরকার ও শিবলু এই তিন জনই সাতক্ষীরার ছেলে এবং বর্তমানে জাতীয় দলে খেলছি। আগামি ১০ বছর খেলার তারর্গেট রয়েছে। আমার দ্বারা যেন দেশটা আরো সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
মুস্তাফিজ বলেন, আমাদের দেখাদেখি আগামি প্রজম্ম গড়ে উঠবে। তারাও একদিন আমাদের মতো তারকা খেলোয়াড় হয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবে। সাতক্ষীরার ছেলেরা আমাদের মতো সাতক্ষীরারমুখ উজ্জল করবে। মুস্তাফিজ সাতক্ষীরার বাসীর কাছে দোয়া চেলে বলেন, আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আপনাদের ভালবাসা নিয়ে আমি এতোদূর এসেছি। দোয়া করবেন, আগামিতে আমি যেনো আরো ভাল করতে পারি।
শনিবার দুপুর পৌনে ১ টার সময় মুস্তাফিজুর রহমান সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে এসে পৌছান। সঙ্গে ছিলেন তার ভাই সাবেক ক্রিকেটার পল্টু। প্রায় ২৫ মিনিট ধরে তিনি স্থানীয় জেলা প্রশাসন, সাংবাদিক, উৎসুখ জনতার সাথে সময় কাটান। সার্কিট হাউজে পৌছানোর পর সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান ফুল দিয়ে তাকে সাতক্ষীরা বাসীর পক্ষ থেকে বরণ করে নেন। পরে তাকে মিষ্টিমুখ করান। বেলা ১ টা ১০ মিনিটের সময় মুস্তাফিজুর রহমান রওনা হন তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের উদ্দেশ্যে। সার্কিট হাউজে এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ এফ এম এহতেশামুল হক, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শেখ নিজামউদ্দিন, সাতক্ষীরার এনডিসি আবু সাঈদ। এ ছাড়া স্থানীয় গনমাধ্যম কর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
বেলা ১ টা ১০ মিনিটে মুস্তাফিজ সার্কিট হাউজ থেকে রওনা হন গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
মুস্তাফিজুর রহমান শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টায় বিমানযোগে ঢাকা থেকে রওনা হন। যশোর বিমান বন্দরে নামার পর যশোর জেলা প্রশাসক তাকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান। সেখান থেকে সড়কপথে রওনা হন সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে। তার এলাকার শতাধিক যুবক তাকে রিসিভ করতে যশোর বিমান বন্দরে যান এবং তাকে বরণ করে নিয়ে আসেন।
ভয়েস অব সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ প্রতিনিধি সুকুমার দাশ বাচ্চু জানান, জেলা শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে গ্রামের বাড়িতে পৌছানোর পর সেখানে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। বাবা-মাকে জড়িয়ে আনন্দের কান্না কাদেন মুস্তাফিজ। এলাকার মানুষ তাদের সন্তানকে এক নজর দেখার জন্য গ্রামের বাড়িতে আগে থেকেই ভীড় জমাতে থাকে। উপচে পড়া মানুষের ভীড় ঠেলে তিনি পৌছান প্রিয় বাবা-মার কোলে।
মুস্তাফিজের বাবা আলহাজ্ব আবুল কাশেম জানালেন, মুস্তাফিজ যখন বাসা থেকে গিয়েছিল তখন ছিল আমাদের পরিবারের। এখন দেশ জয় করে ফিরছে সে এখন আর আমাদের মুস্তাফিজ নয় সে সবার মুস্তাফিজ।