
অনলাইন ডেস্ক ::
ঘূর্ণিঝড় মোরায় দেশের উপকূলীয় ১৬ জেলার ৫৪ হাজার ৪৮৯ পরিবারের ২ লাখ ৮৬ হাজার মানুষ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থানা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরায় মোট ছয়জনের মৃত্যুর খবর তারা পেয়েছেন। এর মধ্যে কক্সবাজারে চারজন এবং রাঙামাটিতে দুইজন। বিধান অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে নিহত সবার পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে উপকূলীয় ৩১ উপজেলার ১০৬টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৫৪ হাজার ৪৮৯টি পরিবারের ২ লাখ ৮৬ হাজার ২৪৫ জন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৯ হাজার ৯২৯টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৩৯ হাজার ৫৯৯টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসময় এক হাজার ৫৯২ একর জমির পানের বরজের ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোরায় ৬ জন মারা গেছেন। এরমধ্যে কক্সবাজারে ৪ জন এবং রাঙ্গামাটিতে ২ জন। কক্সবাজারে রহমত উল্লাহ (৪৫), সায়েরা খাতুন (৬৫), আব্দুল হাকিম (৬৫) ও শাহীনা আক্তার (১০), রাঙ্গামাটিতে জাহিদা সুলতানা (১৪) ও হাজেরা বেগম (৪০) মারা গেছেন।
দায়িÍত্বপ্রাপ্ত সচিব বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোরায় সরকারের ১১ হাজার ৮২০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৯ জন আশ্রয় নেন। ঝড়ে মোট ৬১ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে কক্সবাজারে ৬০ জন এবং রাঙ্গামাটিতে একজন রয়েছেন।
অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোরা উপলক্ষে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, বরগুনা, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট এবং রাঙ্গামাটি জেলায় এক হাজার ৭০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব জেলায় এক কোটি ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, মোরায় কক্সবাজার জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি নির্মাণের জন্য বুধবার কক্সবাজারে ৩০০ বান্ডিল ঢেউটিন এবং ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সরকার আরো সহায়তা দেবে। অবস্থা বুঝে আহতদেরও সহযোগিতা করা হবে।
গোলাম মোস্তফা বলেন, সব জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিকভাবে যোগাযোগ রয়েছে। যেখানে যা দরকার আমরা সেই সাহায্য তাদের দেব। সরকার সব সময় ক্ষত্রিগস্তদের পাশে থেকে কাজ করবে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে। এজন্য এর আগেরদিন সোমবার রাতেই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছিল।