
আর.কে.বাপ্পা দেবহাটা :
আব্দুল কুদ্দুস। মাছ, ধান ও সব্জিচাষে এখন সে এলাকার প্রেরনা ও অন্য চাষীদের পরামর্শদাতা। মুখে তার সাফল্যের হাসি। অর্থনৈতিকভাবে সে এখন বেশ চাঙ্গা। অথচ বছর চার পাঁচ আগেও তার ভাল অবস্থা ছিল না। পৈত্রিক বিঘে পাঁচেক মাঠের জমি ও পনের শতকের বসত বাড়ী তার একমাত্র সম্বল। মাঠের জমিতে বছরে একবার ধান ফলাতো। বর্ষায় সে জমি ডুবে গেলে তাতে মাছ ছাড়তো। উপজেলার গোয়ালডাংগা গ্রামের কুদ্দুসের বছরে যে আয় হতো তা দিয়েই তাদের দুই ছেলে মেয়ের সংসার কোন রকমে চলতো। অর্থকষ্টে তার মেয়েকে বেশীদুর লেখাপড়া শেখাতে না পেরে বাল্যকালেই বিয়ে দিয়ে দেয়। ২০১২ সালে ওয়ার্ল্ডফিসের বাস্তবায়নে এ.আই.এন প্রকল্পের সে একজন তালিকাভুক্ত চাষী হয়। প্রকল্পটি ইউ.এস এইড এর অর্থায়নে ওয়ার্ল্ডফিস কর্তৃক সাতক্ষীরা সহ দেশের দক্ষিনাঞ্চলের ২২টি জেলাতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। কুদ্দুসের ২০ জনের দলে মাঠ সহায়ক আব্দুর রাজ্জাক। সে ২০১২ সালে পাক্ষিক ৮টি প্রশিক্ষণ দিয়ে কুদ্দুসকে আশান্বিত করেছিল। ওয়ার্ল্ডফিসের প্রশিক্ষনে তারা শিখেছিল কিভাবে ঘের প্রস্তুত করবে, চুন-সার কতটুকু দিবে, বিঘাপ্রতি কতটি পোনা ছাড়বে, কিভাবে কত পরিমান খাদ্য দিবে.. ইত্যাদি। তাছাড়া সে সহ দলের সকলকে শিখানো হয়েছিল ঘের পাড়ে সব্জিচাষ সম্পর্কে। এসব সব্জিচাষের মধ্যে ছিল লাউ, শিম, বরবটি, কুমড়া ইত্যাদি। কুদ্দুস এসব প্রশিক্ষণ পেয়ে নবোদ্দমে তার ঘেরের পাড়কে চওড়া করে এবং সেখানে প্রকল্পথেকে ১ম বছর বিনামূল্যে পাওয়া লাউ, কুমড়ার বীজ বপন করে। বাগদার ঘেরে লবনাক্ততা কমে গেলে সাদা মাছ কয়টি ছাড়তে হবে, কি খেতে দিতে হবে, নমুনায়ন কিভাবে কখন করতে হবে এ সবকিছুই তার প্রশিক্ষণ থেকে শেখা। এ বছর সে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে পুরষ্কারও পেয়েছে। এখন সে ঘের থেকে সব্জি, মাছ ও ধান সবই পাচ্ছে। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রী হচ্ছে। গত বছর সে এ ঘের থেকে আয় করেছিল ১.৫ লক্ষ টাকা আর এ বছর তার লক্ষ্য ২ লাখ টাকা।