
কে এম আনিছুর রহমান,কলারোয়া ::
“জঙ্গি মাদকের প্রতিকার বাংলাদেশ পুলিশের অঙ্গিকার”এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোঃ সাজ্জাদুর রহমান বলেন,সাতক্ষীরার মাটি থেকে চিরতরে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসী ও মাদকের মূল শিকড় উপড়ে ফেলা হবে। জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসী ও নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে রুখতে হবে। তাদের কোন স্থান নাই। ২০১৩ সাল ও ২০১৪ সালে এ এলাকায় যারাই জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসী ও নাশকতা মুলক কাজের সাথে জড়িত ছিলেন তারা ভালো হয়ে যান। ধর্মের নামে মানুষ খুন আর সহ্য করা হবে না। আর ভালো না হলে আমি প্রকাশ্যে ঘোষানা দিচ্ছি সীমালংঘনকারীকে তাড়াতাড়ি আল্লাহ’র কাছে পাঠিয়ে দেয়া হবে। মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যহত করা, নাশকতা সৃষ্টিসহ দেশ ও জাতির ক্ষতি সাধন করা জেলা পুলিশ মানবে না। সন্ত্রসীমূলক কর্মকান্ড কঠোর হস্তে দমন করে সাধারন মানুষের জান মালের নিশ্চয়তা বিধান করা হবে। সন্ত্রাসীরা সমাজে সহজ সরল মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে টিকে থাকবে আর আমরা পুলিশের পোশাক পরে বসে থাকবো সেটা করতে দেয়া হবে না। ধংসাত্বক কর্মকান্ড পরিচালনা কারীদের জন্য পুলিশের ১০ আঙ্গুলের মধ্যে একটি আঙ্গুল সদা প্রস্তুত থাকবে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার বামনখালী বাজারে কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার নাথের সভাপতিতে মাদক, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন রোধকল্পে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক বিশেষ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
পুলিশ সুপার বলেন, বাল্য বিয়ে, শিশু নির্যাতন ও স্কুল কলেজের ছাত্রীদের ইভটিজিংকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। মাদক এখন সমাজিক ব্যধ্যিতে পরিনত হয়েছে। এটা আমাদের যুব সমাজকে কুরে কুরে খাচ্ছে এবং ধংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে সমগ্র দেশ একদিন মেধাশুন্য হয়ে পড়বে। তাই প্রতিটি পরিবার থেকে মাদক বিরোধী সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে এবং মাদককে না বলতে হবে।
তিনি আরো বলে, জেলার স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে রুটিন কার্ড। সেই কার্ডে প্রয়োজনীয় বিষয় ছাড়াও উল্লেখ করা রয়েছে পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ নাম্বার। যার ম্যাধমে যে কেউ সহজেই পুলিশের সেবা নিতে পারবে। কেননা, পুলিশ সেবা দিতে বদ্ধপরিকর। এছাড়া সকলেই ৯৯৯ নাম্বার ব্যবহার করতে পারেন।
তিনি পুলিশের উদ্দেশ্যে বলেন, পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ এটা কর্মদক্ষা দিয়ে প্রমান করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে সততার সাথে জনগনের আস্থা অর্জন করতে হবে। সেবামূলক মানসিকা নিয়ে মানুষের পাশে থাকতে হবে। হাত পেতে ঘুষ নেয়া সহ্য করা হবে না। কোন পুলিশ সদস্যকে মাদকের সাথে জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া গেলে তাকে চাকরি ছেড়ে বাড়ি যেতে যেতে হবে। আইনের মাধ্যমেও তার শাস্তির আওতায় আনা হবে।
কলারোয়া থানা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ও ১২ নং যুগীখালী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল হাসানের সার্বিক পৃষ্টপোষকতায় কলারোয়ার পূর্বাংশের ছয়টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার নারী-পুরুষ ও স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশ গ্রহনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার,সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার গোলাম মোস্তফা, ১২ নং যুগীখালী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল হাসান, ১নং জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান শামছুদ্দীন আল মাসুদ বাবু, চন্দনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম মনি, কলারোয়া পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মনোরঞ্জন সাহা, কলারোয়া জিকেএমকে পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুর রব। বক্তারা বলেন, বিগত ২০১৩ সালে জামায়াত-শিবিরের লোকজন এ এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েক করে, মিনি পাকিস্থান সৃষ্টি করে যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসান জজ, রবিউল, আজুভাই, মাহবুবার রহমান বাবুকে কুপিয়ে হত্যা করেছিলো। বর্তমান সংসদ সদস্য এ্যাড মুস্তফা লুৎফুল্লাহ জামায়াত-শিবিরের হাতে খুন হওয়া লাশের ময়না তদন্তসহ লাশগুলো স্বজনদের হাতে তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। এখনকার হাইব্রিড গোছের নেতাদের সে সময় দেখা মেলেনি। তারা হুশিহার উচ্চরন করে বলেন, আর কখনও কেউ যদি ২০১৩ সাল সৃষ্টি করার পায়তারা করলে জেলা পুলিশকে সাথে নিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে। অনুষ্ঠান শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলয়াত করেন, বামনখালী বাজার জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা রফিকুল ইসলাম, গীতা পাঠ করেন বামনখালী হাইস্কুলের সহ-প্রধান শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র ঘোষ।
##