
স্টাফ রিপোর্টার :
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে একটি কেন্দ্রে পুনঃনির্বাচন ও দুটি কেন্দ্রের ভোট পুনঃগণনার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী প্রণব ঘোষ বাবলু। একই সাথে তিনি নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগে তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ঘোষ সনৎ কুমারকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান।
বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী প্রণব ঘোষ বাবলু এই দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তাকে নীল-নকশার মাধ্যমে ১৩৮ ভোটে পরাজিত করা হয়েছে। নীল-নকশার বিষয়ে তিনি করেন, ২০১৫ সালে তিনি তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমারের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেই থেকে ঘোষ সনৎ কুমার তার ও তার কর্মীদের উপর অত্যাচার-জুলুম শুরু করে।একই কারণে তিনি ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে অর্থাৎ দলীয় প্রতীক নৌকার বিরুদ্ধে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান রাজুকে দাড় করিয়ে দেন। রাজুর পক্ষে নির্বাচনী এলাকায় ঘোষ সনৎ কুমার, তার স্ত্রী, ভাইসহ তার পারিবারিক লোকজন প্রকাশ্যে ভোট চেয়েছে। একই কারণে দলীয় প্রার্থীকে হারাতে র্যাব দিয়ে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের মনোবল নষ্ট করে দিয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী রাজুর বাড়ির একশ’ গজ দূরে নলতা ভোট কেন্দ্র। এ কেন্দ্রের ৪নং বুথে রাজুর ভাই ইমরান প্রকাশ্যে মহিলাদের কাছে থেকে ব্যালট নিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রতীকে সিল মেরে বক্স ভর্তি করেছে। বিষয়টি নিয়ে ২১ বার প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেননি। ভোটের দিন বেলা ১১টায় মাছিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে রাজুর এজেন্ট আজিজ গাজী প্রকাশ্যে ব্যালট ছিনতাই করে আনারসে ভোট দেওয়ার সময় জনগণকে তাকে আটক করলেও পুলিশ অদৃশ্য কারণে গ্রেফতার করেনি। ওই কেন্দ্রের বাইরে যত্রতত্র ব্যালট পেপার পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এসব বিষয় উল্লেখ করে লিখিতভাবে প্রিজাইডিং অফিসার ও রিটার্নিং অফিসারকে জানানো হলেও তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কথামতো কোন ব্যবস্থা নেননি। এছাড়া হশিচন্দ্রকাটি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের ১৫২টি বৈধ ভোট পরিকল্পিতভাবে বাতিল করে আমাকে ১৩৮ ভোটে পরাজিত দেখানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, বিজয়ী প্রার্থীর হামলা ও মারপিটের ভয়ে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জনগণের ভোটারাধিকার রক্ষার্থে নলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল পূর্বক পুনঃ নির্বাচন এবং মাছিয়াড়া ও হরিশচন্দ্রকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত পূর্বক ভোট পুনঃগণনার দাবি জানান।
একই সাথে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে কাজ করায় তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ঘোষ সনৎ কুমারসহ অন্যান্যদের দল থেকে বহিষ্কারের জন্য আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।