তালায় গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা : শ্বশুর-শাশুড়ী-ননদ আটক


2287 বার দেখা হয়েছে
Print Friendly, PDF & Email
তালায় গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা : শ্বশুর-শাশুড়ী-ননদ আটক
মার্চ ১৮, ২০১৮ তালা ফটো গ্যালারি
Print Friendly, PDF & Email

 

বি. এম. জুলফিকার রায়হান, তালা
রোববার সকালে তালার ফতেপুর গ্রামে শিখা দাস (১৯) নামের এক গৃহবধু খুন হয়েছে। যৌতুকের দাবীতে শশুর বাড়ির লোকজন তাকে পিটিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় পুলিশ নিহত গৃহবধুর শশুর, শাশুড়ি ও ননদকে পালিয়ে থাকা স্থান থেকে আটক করেছে। ঘটনার পরপরই স্বামী গৌরাঙ্গ দাস সহ এক গ্রাম্য ডাক্তার বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। নিহত গৃহবধু শিখা দাস- খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা পশ্চিম পাড়া গ্রামের হতদরিদ্র কানুলাল দাসের মেয়ে।

নিহত গৃহবধুর কাকা শিবুপদ দাস জানান, প্রায় ১বছর আগে তালার ফতেপুর গ্রামের মহিম দসের ছেলে গৌরাঙ্গ দাস’র সাথে প্রেমজ সম্পর্কে বিয়ে হয় শিখা দাসের। বিয়ের পর গৌরাঙ্গ দাসের পরিবার এই বিয়ে মেনে না নিলেও পরে তা মেনে নেয়- ২ লক্ষ টাকা যৌতুকের হিস্যাতে। কিন্তু শিখা দাসের হতদরিদ্র পিতা কানুলাল দাস ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দিতে না পারায় প্রতিনিয়ত শিখাকে মারপিট করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতো। সর্বশেষ যৌতুকের দাবীতে শিখাকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেবার পর স্বামী গৌরাঙ্গ দাস শিখাকে শোভনা গ্রামের পিতার বাড়ি থেকে আবারও তার ফতেপুর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসে।

নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক তালার ফতেপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, বিয়ে এবং যৌতুকের দাবীকে কেন্দ্র করে গত ৩/৪দিন আগ থেকে শিখার উপর নির্যাতন সহ তার খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। রোববার সকালে শিখা নিজে নিজে রান্না করতে গেলে শাশুড়ি ও ননদ শিখাকে ধরে ঘরের মধ্যে নিয়ে ব্যপক মারপিট করে। পরে তার অবস্থা আশংকাজনক হলে স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার রমেশ দাসকে এনে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু চিকিৎসাকালে তার মৃত্যহলে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে লাশ বারান্দার আড়ার সাথে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা বলে অপপ্রচার চালায়।

তালা থানা ওসি মো. হাসান হাফিজুর রহমান জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তন্দন্তের জন্য সাতক্ষীরা মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। এব্যাপারে তালা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনা জানার জন্য নিহত গৃহবধুর শশুর মহিম দাস, শাশুড়ি সীতা দাস এবং ননদ কাকলী দাসকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত গৃহবধুর ময়না তদন্ত রিপোর্ট থানায় আসার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও ওসি জানান।

এদিকে, শিখার দাস নিহত হবার পর পরই তার স্বামী গৌরাঙ্গ দাস এবং গ্রাম্য ডাক্তার রমেশ দাস পালিয়ে যায়। এছাড়া শিখার শশুর, শাশুড়ি ও ননদ গাঁ ঢাকা দিলেও স্থানীয় জনগনের সহযোগীতায় পুলিশ তাদের ধরে ফেলে।