
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ
বি. এম. জুলফিকার রায়হান ::
তালার কেসমতঘোনা গ্রামে মাছের ঘের সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে তালা বি.দে. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের স্টাফ দিদার মোড়লকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় চার্চ স্কুলের (খৃষ্টান মিশন) বাথরুমের পিছনের পরিত্যাক্ত স্থান থেকে দু’টি গাঁজা গাছ উদ্ধার এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ঘটনায় এলাকার সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঘটনার প্রতিবাদে এবং প্রকৃত অপরাধিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। বুধবার বিকালে ঘটনাস্থল তালার কেসমতঘোনা-দেওয়ানীপাড়া গ্রামে ভুক্তভোগী দিদারুল মোড়ল’র মাছের ঘের সংলগ্নে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এলাকার শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে তালা বিদে সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্মচারী ভুক্তভোগী দিদারুল ইসলাম মোড়ল বলেন, বিগত ৪/৫ মাস পূর্বে চারা মাছ উৎপাদনের জন্য ৫ বিঘার মৎস্য ঘেরটি ডিড নিই। ঘেরটি পূর্বপাশে একটি চার্চ (খৃষ্টান মিশন) স্কুল এবং চতুর্পাশেই বাড়ীঘর রয়েছে। গত ৪ নভেম্বর দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মিশনের বাথরুমের পরিত্যাক্ত জায়গা থেকে তালা থানা পুলিশ ২টি গাঁজা গাছ উদ্ধার করে। যে জায়গাটি থেকে গাছ উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে যাতয়াতের কোন পথ নেই, সেটি আমার ঘেরের ভেড়ীবাঁধের মধ্যেও না। তাছাড়া বর্ষার সময় ওই এলাকা সম্পূর্ন প্লাবিত থাকার কথা।
দিদার মোড়ল বলেন, আমি এই ঘের নিয়েছি ৪/৫ মাস আগে, আর গাজা গাছটির বয়স অনুমান এক থেকে দেড় বছর। তার পরেও স্থানীয় একটি কুচক্রী মহালের ইন্দনে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বলেন, উদোরপিন্ড বুধোর ঘাড়ে বসাতে স্থানীয় মফিজুল মাষ্টারের ছেলে জেএমবির সদস্য শরীফ ও জেলা শিক্ষা অফিসের সুইপার আজহারুল সহ এলাকার একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে। তারা ইতোপূর্বে বাজারে অবস্থিত আমাদের রাইচ মিল লুটের ঘটনায় জড়িত ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত চার্চ স্কুলের শিক্ষক শিমন সরকার ও তার ভাই শ্রীপদ সরকার জানান, স্কুলের সাথেই আমার বাসা। গাজা গাছ দুটি যেকান থেকে উদ্ধার হয় সে স্থানটি চার্চ স্কুলের, তবে পরিত্যাক্ত। ওইখানে যাতায়াতের কোন রাস্তা না থাকায় কেওই সেখানে যান না। দিদারুলকেও কখনও এখানে আসতে দেখিনি। গাছটি কিভাবে আসলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই না।
উপস্থিত ইউপি সদস্য ইয়াছিন আলী, সাবেক ইউপি সদস্য সেকেন্দার মোড়ল, জুলফিকার শেখ (৫৫), খোরশেদ মাহমুদ (৬৫), গফুর বিশ^াস (৪৫),আজহারুর বিশ^াস (৩০), ইয়াছিন সরদার (৬০), ছালেহা বেগম (৫০), ও অঞ্জু সরকার (৪০) সহ এলাবাসী জানান, গাঁজা গাছ লাগানো বা উদ্ধার করার ঘটনায় আমরা হতবাক হয়েছি। এটা আশ্চার্যের বিষয় যে, ঘেরের চারপাশে বাড়ীঘর রয়েছে। এখানে যাতয়াতের রাস্তা নেই, এমনকি সেখানে কারও যাতায়াত হয়না। তাহলে এখানে যে গাজা গাছ আছে তা পুলিশ কিভাবে জানলো! এটা দিদারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। আর দিদার মোড়ল তো চাকুরী তে ব্যাস্ত থাকে। সে কখনও ঘেরে আসেন না, ঘেরের ভেড়ীর কলা-সবজি আমরাই কেটে তার বাড়ীতে দিয়ে আসি।
ঘের মালিক দিদারুল মোড়ল জানান, আমার ঘেরের পূর্ব সীমানা সংলগ্ন মিশনের বাথরুমের পিছন থেকে গাছ উদ্ধার করার খবর শুনে বিস্তারিত জানতে আমি সৎ সাহস নিয়ে থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাকে গাঁজা সহ আটক দেখিয়ে কোর্টে চালান দিয়ে দিলো! আমি ও আমার পরিবার এঘটনার সঠিত তদন্ত ও প্রকৃত অপরাধিদের বিচার দাবী করছি। এসময় উপস্থিত কেসমতঘোনা-দেওয়ানীপাড়া গ্রামের শত শত নারী ও পুরুষ গাঁজা উদ্ধারের ঘটনার অনুরুপ সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক অপরাধিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের নিকট দাবী জানান।