
বি. এম. জুলফিকার রাযহান ও ইব্রাহিম খলিল,তালা :
সরকারি জলমহল দখলে ব্যার্থ হয়ে দিনে দুপুরে বাড়িতে ঢুকে জলমহল মালিককে গুলি করে খুন করার চেষ্টাকালে পরিবারের সদস্যদের হাতে সাব্বির হোসেন সাথী (৩২) নামের এক যুবক আটক হয়েছে। এর সময় তার কাছ থেকে একটি ভারতীয় তৈরি রিভলবার সহ ৬ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়। অস্ত্রধারী সাথীকে ধোলাই দিয়ে গ্রামবাসী তালা থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
সাব্বির হোসেন সাথী উপজেলার মুড়াগাছা গ্রামের যুবলীগ নেতা গোলদার আব্দুস সামাদের পুত্র। তার বিরুদ্ধে মাদক সেবন, দাঙ্গাবাজী এবং দূর্ধর্ষ বনদস্যু সদ্য আত্মসমর্পনকারী মাষ্টার বাাহিনীর সেকেন্ড-ইন-কমান্ড সুমনের সাথে সখ্যতা রাখার অভিযোগ রয়েছে। বনদস্যু সুমনের বাড়ি সাথীর নিজ গ্রামে। সাথী মাদক সেবন সহ বিভিন্ন মামলায় ইতোপূর্বে একাধিকবার জেল হাযত বাস করেছে। তার অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ট ছিল।
তালা থানার উপপরিদর্শক (এস.আই) আবদুল আহাদ জানান ‘সাথী একটি বেআইনি রিভলবার নিয়ে শনিবার দুপুর ২ টার দিকে দক্ষিন শাহাপুর গ্রামের নিরাপদ মন্ডলের পুত্র সুজিত মন্ডলের ঘরে ঢুকে তাকে গুলি করতে উদ্যত হয়। এসময় সুজিত দ্রুত ঘর থেকে পালিয়ে যাবার পর তৎক্ষনাত সুজিতের স্ত্রী সন্ধ্যা রানী মন্ডল, মেয়ে শিখা মন্ডল এবং বোন দেবলা বিশ্বাস সাথীকে ঝাপটে ধরে এবং ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তার কাছ থেকে গুলি সহ রিভলবারটি ছিনিয়ে নেয়।
সুজিত মন্ডলের স্ত্রী সন্ধ্যা রানী মন্ডল জানান, স্থানীয় প্রান্তিক মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি. কিছুদিন পূর্বে স্থানীয় সারিগাতি জলমহলের ৭.০২ একর জমি মাছ চাষের জন্য বন্দোবাস্ত পায়। এরপর সেখানে উক্ত সমবায় সমিতি মাছ চাষ শুরু করে। কিন্তু জলমহলটি অবৈধভাবে জোরদখল নেবার জন্য সাথী দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছিল। এতে ব্যর্থ হয়ে শনিবার দুপুরে ঘরের মধ্যে ঢুকে হুমিক দিয়ে খাল ছেড়ে দেবার জন্য বলে। কিন্তু তাতে রাাজি নাহওয়ায় সকলের সম্মুখে সন্ত্রাসী সাব্বির হোসেন সাথী রিভলবার দিয়ে সুজিত মন্ডলকে গুলি করার চেষ্টা করে। সুজিত মন্ডল প্রান্তিক মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি।
সন্ধ্যা রানী আরো জানান, গুলি করার সময় তার স্বামী দৌড়ে পালিয়ে যাবার পর আমরা সাথীকে আটক করে রিভলবারটি কেড়ে নিয়। এসময় ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে সাথী কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে এলাকার লোকজনকে সাথে নিয়ে ধাওয়া করে ঠাকুরাবাদ এলাকা থেকে সাথীকে আটক করা হয়। পরে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে অস্ত্র ও গুলি সহ সাথীকে তালা থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়।
রাতে এরিপোর্ট লেখাকালীন সাথীর বিরুদ্ধে তালা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।