
স্টাফ রিপোর্টার :
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় বসতবাড়ি, দোকানঘর ভাংচুর ও মৎস্য ঘেরের বাসায় আগুন দিয়ে ঘেরের পানিতে বীশ দেওয়া হয়। ভেঙ্গে ফেলা হয় (প্রতিক) নৌকা, বঙ্গবন্ধু ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত ব্যানার-ফেষ্টুন। মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করা হয় নৌকার সমর্থকদের। এখনো বাড়ি বাড়ি যেয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ও জালালপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতিকের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর লোকজনের হামলায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় এসব ঘটনা ঘটে।
খলিলনগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী ছিলেন-আওয়ামী লীগ নেতা প্রণব ঘোষ বাবলু। আর এ ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন-উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক (বর্তমানে বহিস্কৃত) এসএম আজিজুর রহমান রাজু। এ ইউনিয়নে রাজু জয়ী হয়। জয়ের পিছনে অন্যতম কারণ ছিল বিএনপি-জামায়াতের পরোক্ষ সমর্থন।
জালালপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী ছিলেন- এ-ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম মুক্তি। আর এ ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন-উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এম. মফিদুল হক লিটু। এই ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জয়ী হয়। এরপর এ দুইটি ইউনিয়নে নৌকার সমর্থকদের উপর তাদের লোকজন ও সমর্থকরা জুলুম-অত্যাচার শুরু করে। তাদের ভয়ে অনেক নেতা-কর্মী এখনো বাড়ি ছাড়া।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মুস্তুফা লুৎফুল্লাহ ১২টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি/সম্পাদকসহ ১৪ দলের নেতা-কর্মীসহ তিন শতাধিক মোটর সাইকেল নিয়ে সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত জালালপুর ও খলিলনগর ইউনিয়ন পরির্শন করেন।
জালালপুর ইউনিয়ন পরিদর্শন শেষে রথখোলা বাজারে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতিকের প্রার্থী রবিউল ইসলাম মুক্তির সভাপতিত্বে সভা অনুষ্টিত হয়। এরপর খলিলনগর ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার ইমান আলীর সভাপতিত্বে পথ সভা অনুষ্টিত হয়।
পথসভায় উপস্থিত ছিলেন- সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মুস্তফা লূৎফুল্লাহ, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক ও খলিলনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বাবলু, তালা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইখতেয়ার হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেবুনেচ্ছা খানম, তালা উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও সদর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন, নগরঘাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান লিপু, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সরদার রফিকুল ইসলাম, সরুলিয়া ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. মতিয়ার রহমান, তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সরদার মশিয়ার রহমানসহ ১২ টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগসহ যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ, কৃষকলীগ নেতারা।
এছাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ডেপুটি কমান্ডার আলাউদ্দীন জোয়াদ্দারের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ ও উপজেলা ওয়াকার্স পার্টির সম্পাদক অধ্যাপক সরদার রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ওয়াকার্স পার্টির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পথসভায় সংসদ সদস্য বলেন- ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা নতুন করে এলাকায় তান্ডব চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের উপর হামলা করছে। কিন্তু প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।
সংসদ সদস্য প্রশাসনের প্রতি হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন,‘অতিদ্রুত জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’
তিনি বলেন- আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধার পক্ষের সকল শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে জামায়াত-বিএনপির নাশকতার বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। নৌকা মার্কার প্রার্থীদের নেতৃত্বেই উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রচালিত হচ্ছে। এবং অব্যাহত থাকবে। হামলা করে উন্নয়ন ঠেকানো যাবে না। ক্ষতিগ্রস্তদের সকল রকমের সহযোগীতা প্রদানের আশ্বাষ দেন তিনি।