তালায় বিজ্ঞাপন ছাড়াই এডিপির সংশোধিত কিস্তির ১৯ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকার কাজ ভাগ বাটোয়ারা
এ ,কে, এম জুলফিকার রায়হান :
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় এডিপির ১৯ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকার ১৫টি প্যাকেজের কাজ কোন বিজ্ঞাপন বা প্রচার ছাড়াই ভাগ বাটোয়ারা করা হয়েছে। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮ অমান্য করে আরএফকিউ-এর নামে নিয়মিত ও পেশাদার ঠিকাদারকে বাদ দিয়ে কয়েকজন অপেশাদার ঠিকাদারের মধ্যে অতি গোপনে উক্ত কাজ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যার কারণে প্রকৃত ঠিকাদার ও সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এ ঘটনায় হাইকোর্টে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে এডিপি’র আওতায় সংশোধিত কিস্তিতে তালা উপজেলায় ২৭ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরমধ্যে আরএফকিউ এর আওতায় ১৯ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা ১৫ জন ঠিকাদারের মধ্যে বন্টণ করা হয়েছে এবং বাকি টাকা প্রকল্প কমিটি কাজ করেছে।
স্থানীয় ঠিকাদার ও তালা উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সরদার জাকির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের যোগ সাজশে সময় স্বল্পতার অভিযোগে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮ অমান্য করে আরএফকিউ এর আওতায় ১৯ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা তার অনুগত ১৫ জন অপেশাদার ঠিকাদারের মধ্যে বন্টণ করা হয়েছে। বাকি টাকা প্রকল্প কমিটি কাজ করলেও আরএফকিউ-এর নীতিমালা মানা হয়নি। আরএফকিউতে প্রস্তাব বা কোটেশন দলিল ব্যাপকভাবে প্রচার করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। তাছাড়া কোটেশন প্রস্তাব প্রচারের দিন হতে ১০ দিন দাখিলের সময় দেওয়ার কথা থাকলেও সমস্ত প্রক্রিয়া না করে গোপন রাখা হয়েছে। আর কোটেশন ডকুমেন্ট প্রকাশ করা হয়েছে ২১ জুন। কোটেশন দাখিলের শেষ তারিখ ২২ জুন দুপুর ২টা এবং কোটেশন দলিল উন্মুক্ত করার সময় একই দিন বিকাল ৩টা পর্যন্ত। এ সব ঘটনাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে এটা ছিল ভাগ বাটোয়ারা করার পূর্ব পরিকল্পনা। এমন অভিযোগ করেন ঠিকাদার কাজী নজরুল ইসলাম হিল্লোল, আবু সাইদ মিঠু, লুৎফর রহমান,কাজী আরিফুল হক ভুলুসহ অনেকেই।
তারা আরো জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান তালা উপজেলা প্রকৌশলী অফিসকে চাপে রেখে উক্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। এদিকে অপেশাদার ব্যক্তিদের মধ্যে এ কাজের দায়িত্ব বন্টণ করায় কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় সাধারণ ও পেশাদার ঠিকাদাররা মারাত্মক ক্ষুব্ধ। তারা ২৯ জুন তালা উপ-শহরে এক সভায় মিলিত হয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রীট করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।
এদিকে তালা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সকল নিয়ম-নীতি মেনেই ঠিকাদাররা কাজ পেয়েছে।
তালা এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী কাজী আবু সাইদ মো. জসিম জানান, এডিপির সংশোধিত কিস্তির ১৯ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকার কাজে যে কয়টি সিডিউল বিক্রি হয়েছে সেই কয়টি সিডিউল পড়েছে। বাইরে থেকে কেউ ভাগাভাগি করলে তাদের কিছুই করার নেই। একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এডিপির সংশোধিত কিস্তির এই টাকায় কোন এলাকায় কি কাজ করা হচেছ তা অনেকেরই অজানা।