
নিজস্ব প্রতিবেদক::
তালার মির্জাপুর-বারাত বিলের মৎস্যঘের করাকে কেন্দ্র করে আলোচিত সেই জামাত নেতা মো. মনজুর রহমান এর বাহিনীর সদস্যরা এবার এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নানাবিধ হুমকি প্রদান করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
হুমকির ঘটনার স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ সহ সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন। পরে তালা থানা পুলিশ এক সন্ত্রাসীকে আটক করলেও মনজুর রহমানের পোষ্য অন্য সন্ত্রাসীরা হুমকি প্রদান অব্যাহত রাখায় আতংক কাটছেনা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের।
মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার বারাত গ্রামের আব্দুস সোবহান মাষ্টার ও সাংবাদিক একরামুল হক আসাদ জানান, উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের ও ইসলামকাটী ইউনিয়নের মির্জাপুর-বারাত সহ ৫টি গ্রামের মধ্যবর্তী ২২শ ৮৬ বিঘার বিলটি কপোতাক্ষ নদী ভরাটের কারনে জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে।
এ সুযোগে পাশ্ববর্তী কেশবপুর উপজেলার সুফলকাটী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান, জামায়াত নেতা মনজুর রহমান বিলের জমি মালিকদের নাম মাত্র হারি দিয়ে সেখানে মাছ চাষ করে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করে।
কিন্তু চলতি বছর জামায়াত নেতার ডিড শেষ হওয়ায় কেশবপুরের অপর মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী মোস্তাক আহম্মেদ জমি মালিকদের বিঘা প্রতি বোরো ধানচাষ বাদে শুধু মাত্র মাছ চাষের জন্য সাদা জমি প্রতিবিঘা ১৩ হাজার ও কুয়া-পুকুর, ক্যানেল প্রতিবিঘা ৩৫ হাজার টাকা হারি দিতে চান।
এতে বিলের বৃহদাংশ জমির মালিকরা মোস্তাক আহম্মেদকে বিলে মাছ চাষের জন্য রেজিষ্ট্রি ডিড করে দেন। এঘটনার পর থেকে দূর্ধর্ষ জামায়াত নেতা মনজুর রহমান ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং জোরপূর্বক বিল দখল করে মাছ চাষের জন্য পুরানো সন্ত্রাসী বাহিনীকে আবারও সক্রিয় করে তোলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের একাধিক ব্যক্তি জানান, মির্জাপুর ও বারাত বিলের অধিকাংশ জমির মালিক স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। যে কারনে জামায়াত নেতা মনজুর রহমানের বাহিনীর বিএনপি-জামায়াত পন্থী ক্যাডাররা এবং
কতিপয় তথাকথিত আওয়ামীলীগ নামধারী দূর্বৃত্তরা জমির মালিক হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের বাড়িতে যেয়ে খুন, মিথ্যা মামলায় জড়ানো এবং হামলা চালিয়ে ভারতে পাঠিয়ে দেবার হুমকি দেওয়া শুরু করে।
এতেকরে মির্জাপুর গ্রামের দিনেশ ঘোষ সহ ভুক্তভোগী অন্যরা এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এর নিকট অভিযোগ করেন।
পরে তালা থানা পুলিশ সন্ত্রাসী টাবলুকে আটক করে। এঘটনার পর থেকে মনজুর রহমানের পোষ্য সন্ত্রাসীরা আরো বেপরোয়া হয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সহ এলাকার দরিদ্র মানুষদের হুমকি প্রদান অব্যাহত রেখেছে।
এতে করে চরম আতংকের মধ্যে পড়েছে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরিহ মানুষগুলো। উল্লেখ্য, কেশবপুর উপজেলার ৮ নং সুফলাকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এস.এম. মনজুুর রহমান একজন দূর্ধর্ষ জামায়াত নেতা। ছাত্র জীবন থেকে
স্বাধীনতা বিরোধি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত মনজুর রহমান বিগত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে কেশবপুরে ব্যাপক সহিংসতা সৃষ্টি করে। সে কেশবপুর এবং তালা উপজেলার জামায়াত-শিবিরের ক্যাডারদের অর্থ
ও শেল্টার দিয়ে গাছ কাটা এবং রাস্তা অবরোধ সহ সহিংসতামূলক কর্মকান্ড সৃষ্টিতে সহযোগীতা করে। মনজুুর রহমানের তান্ডবে তখন এলাকার মানুষ আতংকিত হয়ে পড়ে বলে সংশ্লিষ্ট সুফলকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সামাদ মাষ্টার এক প্রত্যয়ন পত্রের মাধ্যমে জানিয়েছেন।
জামায়াত নেতা মনজুর রহমান বারাত-মির্জাপুর বিলে মৎস্য ঘের দখলকে কেন্দ্র করে যেরুপ তান্ডপ শুরু করেছে ঠিক অনুরুপ
ভাবে বিগত বছর ইসলামকাটী ইউনিয়নের চলশের বিল দখল করে মাছ চাষ করার জন্য তান্ডপ শুরু করে। তখনও সে স্থানীয় সয়ংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের উপর হামলা ও মামলা দিয়ে মানুষের জীবন অতিষ্ট করে তোলে।
পরবর্তিতে উর্দ্ধতন পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এলাকার নিরিহ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে।
##