
বি. এম. জুলফিকার রায়হান, তালা থেকে : তালা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার গাজী মনিরুজ্জামান ও অফিসের ক্লার্ক অহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী ।১৯৯০ সালে তালা অঞ্চলে জরিপ কার্যক্রম শুরু হলেও এ দু’জনের মতো ওপেন ঘুষ গ্রহন এর আগে আর কখনও হয়নি। এই দুই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে প্রত্যেক মামলায় বাদী বিবাদীকে নিয়ে ঘুষের দেন-দরবার চালিয়ে যে পক্ষ বেশী টাকা দেয় সেই পক্ষে রায় দেন। একাধিক সূত্রে জানাযায়, খুলনার বাসায় বসেই দূর্নীতিবাজ মনিরুজ্জামান সেটেলমেন্টের বাদী-বিবাদীর সাথে মোটা অংকের ঘুষের টাকা লেনদেন করেন। যদি মামলার দু’পক্ষ কেউ তার সাথে দেখা বা যোগাযোগ না করেন তা হলে তিনি রায় না দিয়ে সেই মামলা ঘোরাতে থাকেন। এক পর্যায়ে তার নিজস্ব দালালদের মাধ্যমে দু’ পক্ষকে সংবাদ দেন। যে পক্ষ বেশী টাকা দিতে রাজি হন, সেই পক্ষকে রায় দিয়ে দেন। তালা সদর মডেল ইউনিয়নের ভায়ড়া মৌজার শুনাণী করছেন তিনি। তদন্ত করলে জানা যাবে ওই এলাকাবাসী তার হাতে হয়রানী ও নির্যাতিত হচ্ছে। দলিল প্রতি ৫ হাজার টাকা না দিলে দলিল রেকর্ড করা হয়না। স্বাধীন দেশে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, তালা থানার অফিসার ইন চার্জ সহ স্থানীয় সর্বস্তরের জনগন ওই দুই ক্ষমতাধর ব্যক্তির কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। বিধি মোতাবেক ৩০ ধারার মামলা না করলে ৩১ ধারার বিচার পাওয়া যায়না। কিন্তু মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তারা ভূয়া ৩০ ধারার মামলা দেখিয়ে ৩১ ধারার মামলা দায়ের ও সেই মামলায় বিচার করে রেকর্ড দিচ্ছেন। এভাবে বিভিন্ন পন্থায় হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। ডিএলআর, বিভাগীয় কমিশনার, জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার সব উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে খুশি না করে এই চেয়ারে বসা যায় না- বলে আস্ফালন করে প্রকাশ্যে ঘুষ বানিজ্য করছে তারা। তালাবাসী এই প্রতিবেদককে জানান, বর্তমান সরকার গরিব, দু:খি মানুষের সরকার; এই সরকারের আমলে খোদ সরকার প্রধানকে আত্বীয় পরিচয়ে যা করা হচ্ছে তার বিচার কি জনগন পাবেনা? এদিকে তাদের দূর্নতি, অনিয়মের সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশের পর, গাত্রদাহ শুরু হয়েছে সেটেলমেন্ট অফিসার গাজী মনিরুজ্জামান ও পেশকার অহিদুজ্জামানের। তারা সাংবাদিকদের নিয়ে অকথ্য ভাষায় মন্তব্য করেছেন। আবার তাদের স্বপক্ষে পত্রিকায় পাল্টা সংবাদ প্রকাশের জন্য নিজ অফিসে পত্রিকা সংশ্লিষ্ঠ এক ব্যক্তিকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। তালা থানার অফিসার ইন চার্জ এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, সেটেলমেন্ট থেকে বেদখলীয় মালিকদের নামে রেকর্ড দিয়ে কোনও কোনও ক্ষেত্রে জাল দলিলের মাধ্যমে রেকর্ড দিয়ে দু’ পক্ষের মধ্যে বিরোধ তৈরি করা হচ্ছে। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে প্রতিনিয়ত মারামারি হচ্ছে, ফলে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। একটি সুষ্ঠ রেকর্ড তৈরির জন্য সরকার সেটেলমেন্ট জরিপ করছেন। কিন্তু স্বচ্ছ রেকর্ড এর পরিপন্থী কার্যকলাপ করা হচ্ছে মর্মে তার কাছে অনেক অভিযোগ রয়েছে। খোজ নিয়ে জানাযায়, রেকর্ড কিপার ওয়াহিদুজ্জামান ১৯৯২ সালে পাটকেলঘাটা অঞ্চলে সেটেলমেন্ট কার্যক্রম চলাকালে পরিকল্পিত ভাবে অফিসটিকে পুড়িয়ে দেয়া হয়। তাতে প্রায় ৭০টি মৌজার কাগজপত্র পুড়ে ভষ্মিভূত হয়। অহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে অফিস পোড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। এবিষয়ে তিনি বলেন, ওই দিন তিনি ছুটিতে ছিলেন। তাহলে কি সেদিন তিনি পরিকল্পিত ভাবে ছুটিতে যান।