
গাজী আব্দুল কুদ্দুস ডুমুুরিয়া :
ডুুমুরিয়ার চুকনগরে গৃহবধু রেশমা ও তার শিশুকন্যার মৃত্যু রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। গৃহবধু রেশমার স্বামী মাহাবুর রহমানই গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে তাকে ও তার দেড় বছরের শিশুকন্যা মারিয়াকে।
মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে ডুমুরিয়া থানায় হাজির হয়ে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করে পুলিশের কাছে লোমহর্ষক এই জোড়া খুনের দায় স্বীকার করে মাহাবুর।
পুলিশ জানায় সে যখন আত্মসমর্পন করতে আসে তখন সে অনেকটাই অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় ছিল। ঘটনার বিবরনে সে জানায় সোমবার সকালে খাওয়া দাওয়া শেষ করে স্ত্রী ও কন্যাকে সাথে নিয়ে নিজের ঘরে বিশ্রাম করতে যায় সে। এসময় মাহাবুরের পিতা সিরাজ উদ্দীন ও তার মা বাড়ির পার্শ্ববর্তী সবজি ক্ষেতে কাজ করছিল। এই সুযোগে সে স্ত্রী রেশমা ও কন্যা মারিয়ার গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এবং তাদের মৃত্যু নিশ্চিত হলে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
তবে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করে সোমবারেই পুলিশের কাছে আত্ম সমর্পন করার জন্যে ডুমুরিয়া থানায় ঢুকে আবারও সেখান থকে ফিরে আসে সে। এর পর ২৪ ঘন্টা বিভিন্ন স্থানে ঘুরে অবশেষে মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে ডুমুরিয়া থানায় হাজির হয়ে স্বেচ্ছায় আত্ম সমর্পন করল মাহাবুর। আত্ম সমর্পনের পর সে পুলিশকে জানায় তার স্ত্রীর কোন দোষ ছিলনা। বিয়ের পর থেকে তাকে ও তার স্ত্রীকে যৌতুকের জন্যে নানাবিধ কথা বার্তা বলত তার পিতা মাতা। এবং গত কয়েকদিন ধরে তাদের দুজনের উপর মানষিক নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এ জন্যে স্ত্রী রেশমাকে বাপের বাড়ি চলে যাওয়ার কথা বলে¬ও রাজী হয়নি। এ কারনে নিজের ক্রোধকে চেপে রাখতে না পেরে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
উলে¬খ্য ৩ বছর আগে প্রেমজ সম্পর্কের সূত্র ধরে রেশমার পিতা মাতার অমতে তাকে বিয়ে করে মাহাবুর। রেশমা একই উপজেলার হাসানপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদের কন্যা । ৪ বোনের মধ্যে সে তৃতীয়। খুলনার বি এল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ১ম বর্ষে পড়ার সময় মাহাবুরের সাথে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে উঠে তার কিন্তুু মাহাবুর অশিক্ষিত হওয়ায় বিয়ের পরে প্রথমে রেশমার পিতা মাতা তাদের সম্পর্ক মেনে না নিলেও দেড় বছর পরে তাদের সন্তানের জন্মের পর উভয় পরিবারের সম্মতিতে সামজিকভাবে মিমাংশা করে নেয়া হয়।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে রেশমা ও তার কন্যার লাশ ময়না তদন্ত শেষে পিত্রালয় হাসানপুরে দাফন করা হয়েছে। এসময় সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে। মঙ্গলবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ডুমুরিয়া থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।