
রাহাত রাজা :
উচ্চ আদালতের আদেশ কারাগারে না পৌঁছানোয় দীর্ঘ ১৩
বছর বিনা কারণে জেল খেটে অবশেষে মুক্তির পথ মিলেছে সাতক্ষীরার কলারোয়া
উপজেলার কয়লা গ্রামের কৃষক জোবেদ আলীর।
বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা জজ আশরাফুল হক শুনানি শেষে জোবেদ
আলীকে মুক্তির নির্দেশ দেন।
এদিকে, বিনা কারণে একজন বিচার প্রার্থীর ১৩ বছর কারাভোগের ঘটনায় তদন্ত
কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন সাতক্ষীরা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)অ্যাডভোকেট ওসমান গনি।
তিনি বলেন, খালাস পাওয়ার পরও ১৩ বছর কারাভোগের ঘটনা যে কোন ব্যক্তির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার তালা উপজেলার
মানিকহার গ্রামে শ্বশুরবাড়ি বেড়া গিয়ে মেয়ে লিলিকে (৮) বিষ খাইয়ে হত্যার
অভিযোগে গ্রেফতার হন জোবেদ আলী। এ ঘটনায় তার শ্যালক কাশেম সরদার বাদী হয়ে
তালা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এই মামলায় তার বিরুদ্ধে
চার্জশিট দেয়। ৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা
ও দায়রা জজ আদালত (দ্বিতীয়) ২০০১ সালের ১ মার্চ জোবেদ আলীকে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদ- এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদ- দেন। জোবেদ আলী এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিলে ২০০৩ সালের ১৯ মার্চ তিনি খালাস পান।
সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র নিআদালতে পৌঁছালেও দীর্ঘ ১৩ বছরে তা যথাযথভাবে
কার্যকর না হওয়া ও কারাগারে না পৌঁছানোয় মুক্তি পাননি তিনি।
অবশেষে বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে শুনানি শেষে
জোবেদ আলীকে মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতের আদেশ সম্পর্কে সরকারপক্ষের আইনজীবী, সাতক্ষীরা আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট ফাহিমুল হক কিসলু জানান, শুনানি শেষে আদালত তাকে খালাসের
মুক্তির নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘যার ভুল অথবা অবহেলার কারণে তাকে এতদিন
কারাভোগ করতে হল আল্লাহ তাদেরও বিচার করবেন।’
এদিকে, বুধবার বিকেলে আদালতের আদেশ কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌছালে কৃষক জবেদ আলীকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। বিকেল ৫ টার দিকে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বাড়িতে চলে গেছেন।