
আর.কে.বাপ্পা, দেবহাটা ::
সাতক্ষীরা দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া ও সদর উপজেলার শ্রীরামপুর এলাকার লাবন্যবতী খালের উপর নির্মিত সংযোগ ব্রীজটি দীর্ঘ সময় পার হলেও ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। একযুগেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও উন্নয়ন অভাবে বেহাল দশায় দুই উপজেলার সীমান্তে অবস্থিত লাবণ্যবতী খালের উপর নির্মিত যোগাযোগের একমাত্র সাঁকোটির। বর্তমানে ব্রীজটি মরনফাঁদে মরিনত হয়েছে। উক্ত ব্রীজটি দিয়ে চলাচলকারী স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও সাধারন মানুষদের খুবই সমস্যা ও ভোগান্তির মাধ্যমে চলাচল করতে হচ্ছে। তবে এবিষয়ে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী খুবই দ্রুত ব্রীজটি সংষ্কারে উদ্যোগ গ্রহন করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। জানা গেছে, দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া ও সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের সীমানা দিয়ে বয়ে চলেছে এই লাবণ্যবতী খালটি। এই খালের উপর নির্মিত সাঁকোটি দুই উপজেলার হাজারো মানুষের যোগাযোগের এক মাত্র মাধ্যম হলেও উন্নয়নের মাথাব্যাথা নেই কারোরই। স্থানীয় সূত্রে প্রকাশ পায়, ২ হাজার সালের পূর্বে নির্মাণ করা হয়েছে সাঁকোটি। কালের বিবর্তনে লোহার তৈরী সাঁকোটি বাঁশ ও কাঠের সাঁকোয় পরিণত হয়েছে। দুপাড়ের মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় কর্মক্ষেত্রে ছুটে চলার জন্য ব্রীজটি খুবই গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে। অতি অল্প সময়ে দুপাড়ের হাজারো মানুষ তাদের দৈনন্দিন কর্ম করতে পারেন। ইতোপুর্বে ব্রীজটি চলাচলের অযোগ্য অবস্থায় চলাচল করতে গিয়ে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ খালের পানিতে পড়ে যাওয়ার ঘটনা রয়েছে। তাছাড়া কুলিয়াসহ আশেপাশের এলাকার একমাত্র চলাচলের মাধ্যম হলেও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করে আশানুরুপ ফল পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় নির্বাচনের পূর্বে সাঁকোর হালচিত্র পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি নির্বাচনের পরে জনপ্রতিনিরিা সেটি বেমালুম ভুলে যান। জনবহুল সাঁকোটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ার কারনে কুলিয়া, শ্রীরামপুর চৌবাড়িয়া, বৈচনা, কুলাটি, হাড়দ্দাহ, কোমরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। এছাড়া সাঁকোটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ার কারনে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তাছাড়া হঠাৎ অসুস্থ ব্যক্তি এবং গর্ভবর্তী মায়েদের ৪-৫ কিলোমিটার অতিরিক্ত রাস্তা পাড়ি দিয়ে যেতে হচ্ছে। যা এদের জন্য মারত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। তবে সাঁকোর পাশে অবস্থিত ইউনাইটেড মডেল কলেজের অধ্যক্ষ’র তত্ত্বাবধানে ইতোপূর্বে বহুবার সাকোটি সংস্কার কাজ করা হয়েছে। তার প্রচেষ্টায় বিভিন্ন সময়ে জেলা, দুই উপজেলা প্রশাসন পরিদর্শন করেছেন। দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে কোনকিছুতে পরিবর্তন ঘটেনি সাঁকোটির। তবে ব্রীজটির একপাশে দেবহাটা উপজেলা আর অন্য পাশে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা হওয়ার কারনে প্রশাসনিক জটিলতার কারনে ব্রীজটি সংস্কারের প্রধান অন্তরায় বলে জানা গেছে। কুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক মোড়ল বলেন, কয়েক বছর ধরে এই সেতুটি ভেঙে পড়ে আছে। কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতে অনেক কষ্ট হয়, এই সেতুটির ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শ্রীরামপুর বাজারে সাধারণ মানুষ ও স্কুল-কলেজের বাচ্চারা যাতায়াত করে। আমরা বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে যাতায়াত করতে পারি না। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, তিনি নিজে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলেছেন। বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে একটি প্রকল্প গ্রহনের মাধ্যমে ব্রীজটি সংস্কার করা হবে বলে তিনি জানান। এছাড়া ব্রীজটি পাকাকরন করতে হলে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে টেন্ডার আহবান করতে হবে বলে জানা যায়। অতি দ্রুত সেতুটি সংস্কার করে পথচলা সুগম করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সেতুটি দিয়ে চলাচলকারী শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা।