পাইকগাছা সংবাদ ॥ অপরিকল্পিতভাবে মৎস্য শিকারে ধাবংস হচ্ছে সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ


374 বার দেখা হয়েছে
Print Friendly, PDF & Email
পাইকগাছা সংবাদ ॥ অপরিকল্পিতভাবে মৎস্য শিকারে ধাবংস হচ্ছে সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ
মার্চ ১৬, ২০১৬ খুলনা বিভাগ ফটো গ্যালারি
Print Friendly, PDF & Email

এস,এম, আলাউদ্দিন সোহাগ, পাইকগাছা ॥
অপরিকল্পিতভাবে নির্বিঘেœ মৎস্য শিকার করায় সুন্দরবনের নদ-নদী ও খাল থেকে মৎস্য সম্পদ ক্রমশঃ হ্রাস পাচ্ছে। এলাকার জেলেদের জীবন জীবিকার অস্তিত্ব সংকটাপন্ন হচ্ছে। সামুদ্রিক মাছ রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনাও সংকুচিত হয়ে পড়ছে।
জোয়ারের সময় বঙ্গোপসারের বিপুল পরিমাণ নানা প্রজাতির মাছ খাদ্য সংগ্রহ ও ডিম ছাড়ার জন্য সুন্দরবন অভ্যন্তরে নদ-নদী ও খাল সমূহে ঢুকে পড়ে। এ সময় প্রতি বছর হাজার হাজার জেলে সেখানে মৎস্য শিকারের জন্য প্রবেশ করে। সুন্দরবন সংলগ্ন সাগর এবং বড় বড় নদী মোহনায় বড় আকারের ট্রলার ব্যবহার করে জেলেরা বিপুল পরিমাণ মৎস্য সম্পদ আহরণ করে। ধৃত এসব বিভিন্ন প্রজাতির মাছ দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন হাট-বাজার ও শহরে বিক্রির জন্য প্রেরণ করা হয়। তাছাড়া সুটকিও তৈরী করা হয় বিপুল পরিমাণে। মাছের প্রজনন ও ডিম ছাড়ার সময় বিপুল পরিমাণ মাছ ধরার ফলে মৎস্য উৎপাদন ক্রমশঃ হ্রাস পাচ্ছে। পূর্বে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে জলাভূমিতে যে পরিমাণ মাছ পাওয়া যেত এখন তা আর পাওয়া যাচ্ছে না। যদি উপযুক্ত সময়ে সাগর ও নদী মোহনা থেকে মাছ ধরা বন্ধ করা যায় তাহলে সমস্যার সমাধান হবে বলে বিজ্ঞজনদের অভিমত।
সুন্দরবনের নদী নালায় ও খাল বিলে কয়েক বছর আগেও ১৫০ টিরও অধিক প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। ঐ সব প্রজাতির মাছ বর্তমান সময়ে ক্রমশঃ দুর্লভ হয়ে উঠেছে।
তাছাড়া মৎস্য সম্পদ হ্রাস পাবার অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে, সমুদ্র উপকুলবর্তী এলাকায় বাগদা চিংড়ি চাষ প্রকল্পসমূহে মাছ চাষ শুরু হবার পর থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ সুন্দরবন সংলগ্ন নদীতে ঘন ফাশের জাল ফেলে বাগদার পোনা ধরে। এসব জালে অন্য প্রজাতির মাছের পোনা ধরা পড়লেও তারা সেগুলো ডাঙ্গায় ফেলে দেয়। ফলে এ প্রক্রিয়ায় প্রতি বছর বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
অপরিকল্পিত উপায়ে সুন্দরবন থেকে সামদ্রিক মাছ ধরার কারণে মৎস্য উৎপাদন ক্রমশঃ হ্রাস পাচ্ছে। ফলে দক্ষিণ খুলনার উপকূলবর্তী পাইকগাছা, কয়রা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, মংলা, রামপাল এলাকার জেলেদের জীবিকা নির্বাহের অস্তিত্ব ক্রমশঃ সংকটাপন্ন হচ্ছে। সামদ্রিক মাছ রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনাও সংকুচিত হয়ে পড়ছে। অচিরেই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করে সুন্দরবন, সাগর ও নদী মোহনা থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধ্বংশের হাত থেকে প্রতিরোধ করা আশু প্রয়োজন।
##

পাইকগাছায় ১০ ইউপিতে আ’লী-বিএনপির কন্দোলে স্বতন্ত্রপ্রার্থী রাজু, সমরেশ, মাজেদ, করিম, চিত্ত চমক দেখাতে পারেন
এস,এম, আলাউদ্দিন সোহাগ, পাইকগাছা ॥
পাইকগাছায় ২২ মার্চের অনুষ্ঠেয় ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আ’লীগ-বিএনপি দলীয় চেয়ারম্যানপ্রার্থী কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও সহিংসতার আশংকা দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি করতে সমর্থ হয়েছে। এদিকে আ’লীগ-বিএনপির অভ্যন্তরীণ কন্দোলের জেরে শেষ পর্যন্ত দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী-সমর্থক, সাধারণ ভোটাররা পরিস্থিতি বুঝে স্বতন্ত্র প্রার্থীর দিকে ঝুকে পড়ছে বলে জানা গেছে। আ’লীগ-বিএনপিদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ও শো-ডাউনের পরিবর্তে প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে স্বতন্ত্রপ্রার্থীরা কোণ-ঠাষা হয়ে পড়ে নিরুত্তাপ ভোট প্রার্থনা করছেন।
বিভিন্ন মাধ্যম ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, হরিঢালী, দেলুটি, সোলাদানা, লস্কর ও লতায় জনমত জরিপে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভোটের মাঠে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবারের দলীয় প্রতীকের ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে উপজেলার সোলাদানা, কপিলমুনিসহ কয়েকটি স্থানে আ’লীগ-বিএনপির কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে গণসংযোগ ও পথসভাকে কেন্দ্র করে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। দু’দলের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, কন্দোলনের বিপরীতে কোথাও কোথাও দলীয় নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দিকে ঝুকে পড়েছে। দু’দলের হাই-কমান্ডের কঠোর হুশিয়ারীর পরেও তারা ভিন্ন কৌশলে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে ভোট প্রার্থনায় অংশ নিচ্ছেন। জানা গেছে, ১নং হরিঢালীতে আ’লীগ ও দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র হিসাবে বর্তমান চেয়ারম্যান আবু জাফর সিদ্দিকী রাজু সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। রাজু এবারও আ’লীগ-বিএনপির দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে সহজেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে পারবেন বলে অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে। ৩নং লতায় আনারস প্রতীক নিয়ে চিত্তরঞ্জন মন্ডল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়েছেন। তিনি গত ২০১১ সালের ২৯ মার্চ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাসের কাছে সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। তিনি আশাবাদী এ নির্বাচনে সাধারণ ভোটাররা তাকে ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করবেন। ৪নং দেলুটিতে আ’লীগ দলীয় প্রার্থী রিপন মন্ডলসহ একই দলের প্রতিপক্ষ হিসেবে এ্যাডঃ পিযুষ কান্তি সরকার ও দ্বিজেন মন্ডল ভোট যুদ্ধে নেমেছেন। এবারও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সমর কান্তি হালদার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দলের বিভেদ কাজে লাগিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পথে রয়েছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। ৫নং সোলাদানায় গত কয়েক দিনে নির্বাচনী সভা ও গণসংযোগকে ঘিরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আ’লীগ-বিএনপি মুখোমুখী অবস্থানে রয়েছে। এখানে আ’লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে ফাটল ধরেয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এস,এম,এ মাজেদের ঘোড়া প্রতীক ছুটে চলেছে। সূত্রে জানা গেছে, মাজেদ তার নিজস্ব এলাকা ভিলেজ পাইকগাছাসহ আশপাশ এলাকায় অতীতের চেয়ে এবার শক্ত ভীত গড়ে তুলেছে। আ’লীগ-বিএনপির দ্বন্দ্বে উভয়দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটাররা দিন দিন মাজেদের দিকে ঝুকে পড়ছে। এ নির্বাচনে তিনি জয়ের আশাবাদী বলে জানিয়েছেন। ৬নং লস্কর ইউপিতে সবচেয়ে প্রভাব পড়েছে মর্যাদা সম্পন্ন দু’প্রার্থী বর্তমান কে,এম, আরিফুজ্জামান তুহিন (নৌকা) ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল করিম গাইন স্বতন্ত্র প্রার্থী (আনারস) প্রতীকের মধ্যে মর্যাদার লড়াইয়ে জমে উঠেছে। নির্বাচনী এলাকায় বংশগত ব্যক্তি ইমেজে ই দু’প্রার্থীর ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। প্রভাবশালী দু’প্রার্থী দু’জনেই বিজয়ে আশাবাদী। গত কয়েক দিনে সরকার দলীয় প্রার্থী তুহিন দল ও ব্যক্তি কৌশলে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় অনেকটা এগিয়ে গেলেও কতটুকু সাফল্য অর্জন করতে পারবে সেটা এখন দেখার বিষয়। এদিকে কোন শো-ডাউন, পথসভা, জনসভা ব্যতিরেকে স্বতন্ত্রপ্রার্থী করিম গাইন নিজেই গোটা নির্বাচনী এলাকা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং সব শ্রেণী পেশা, ধর্ম-বর্ণের মানুষের মধ্যে শক্ত বলাইয়ের সৃষ্টি করেছেন। তিনি এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এ নির্বাচনে সাধারণ মানুষ তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলে আশা করছেন।
##

পাইকগাছায় সহকারী কমিশনার হিসেবে নাজমুল হকের যোগদান
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি ॥
পাইকগাছায় ৭ মাস পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে যোগদান করলেন মুহাম্মদ নাজমুল হক। ২০১৫ সালের ১৩ আগস্ট সহকারী কমিশনার মোঃ কামরুল ইসলাম বদলী হওয়ায় পদটি শূন্য হয়ে পড়ে।  রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কবিরউদ্দীনকে বাধ্যতামূলক অপসারণের দাবীতে ক্ষমতাসীন দল হরতালসহ প্রতিবাদ সভা সমাবেশ ও তাকে লাঞ্চিত করায় তিনি পাইকগাছা ত্যাগ করেন এবং তার নির্বাচন থেকে অপসারণ করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় দুটি পদের শূন্যস্থান পূরণ করতে সহকারী কমিশনার পদে বুধবার সকাল ১০টায় মুহাম্মদ নাজমুল হককে যোগদান করানো হয়ে। বর্তমানে তিনি একের ভিতর দুটি দায়িত্ব পালন করছেন।