
ইব্রাহিম খলিল ::
বেচা-কেনায় জমে উঠেছে পাটকেলঘাটার নৌকা পল্লী। তিন জেলার ডজনাধিক উপজেলায় জলাবদ্ধতা প্রকট থাকায় নৌকার চাহিদা ব্যাপক। প্রতিদিনই ক্রেতা-বিক্রেতার পদাচারনায় সরগরম থাকে এ হাট। বিবিধ কারণে দেশে নৌকার কদর কমেছে। তেমনি কমেছে এর প্রস্তুতকারকদেরও কদর। তবে ব্যতিক্রম সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা।
কয়েকবছর আগেও মাত্র কয়েকটি ফার্নিসারের দোকান ছিল এখানে। এখন সারি সারি নৌকা তৈরির কারখানা। আর এসব কারখানায় কারিগরদের ব্যস্ততা সীমাহিন। ভোর থেকেই নৌকা তৈরীর শব্দে ঘুম ভাঙ্গে এলাকাবাসীর।
জেলার চারটি উপজেলা বছরে ৬ মাস জলাবদ্ধ থাকে। পাশের খুলনা ও যশোর জেলারও অনেক এলাকা জলাবদ্ধ থাকে। এসব এলাকার লোকজনের চলাচলের জন্য নৌকাই ভরসা। এসব এলাকার লোকজন তাই পাটকেলঘাটায় আসেন নৌকা কিনতে। প্রতিদিন এখানে গড়পড়তায় ২০/২৫টি নৌকা বিক্রি হয়। নৌকাভেদে যার দাম ৬ থেকে ২০ হাজার টাকা।
নৌকাপল্লী গড়ে উঠায় এখানে অনেক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। নৌকা তৈরির সময়কাল সাধারনত ৬/৭ মাস। ছয় মাসের উপার্জনে সারাবছরের সাংসারিক ব্যয় নির্বাহ হয় এ পেশার সাথে সংশ্লিষ্টদের। দু’জন কারিগর দু’দিনে এক একটি নৌকা তৈরী করতে পারেন।
পাটকেলঘাটা নৌকা তৈরির কারিগর আবুল হোসেন জানান, তিনি বছরে ছয় মাস নৌকা তৈরির কাজ করেন। পাটকেলঘাটা, তালা, ডুমুরিয়া কেশবপুর সহ বিভিন্ন এলাকা জলাবদ্ধতার কারনে নৌকার কদর বেশি। এ এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যাবস্থা একমাত্র নৌকা। প্রতিদিন এখনে নৌকা বেচাবিক্রি হয়। মুজুরিসহ একটি নৌকা তৈরি করতে যে খরচ হয় আবার লাভও পাওয়া যায় বলে জানান এই কারিগর।
দোকান মালিক সবুর গাজী জানান, তার দোকানে প্রতিদিন তিন থেকে চার টি নৌকা বিক্রি হয়। এ এলাকায় ২০ টি দোকনে নৌকা তৈরি হয়। বর্ষা মৌসুমে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ করতে কারিগরদের হিমশিম খেতে হয়। তিনি আরও বলেন সরকারি ভাবে আর্থিক সহায়তা পেলে এটাকে আরও উন্নত করা সম্ভব।
সাতক্ষীরা বিনেরপোতা বিসিক কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ জানান, প্রশিক্ষন ও স্বল্প সুদে ঋন পেলে পাটকেলঘাটার নৌকা পল্লী আরো সম্প্রসারিত হবে। তিনি আরও বলেন বছরের ছয় মাস এ এলাকা জালাবদ্ধ থাকার কারনে হাতে তৈরি নৌকার কদর বেশি। জলাবদ্ধ এলাকার মানুষ সাধারনত চলাচলের জন্য নৌকা কিনে থাকে। এ এলাকায় অনন্ত ২১টি নৌকা তৈরির কারখানা আছে।