
মো: কামরুজ্জামান মোড়ল :
খুচরা পয়সা, কয়েন পাটকেলঘাটাবাসীর কাছে প্রায়ই অচল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোন ব্যাংক, বীমা, এনজিও, ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানে কয়েন অচল বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর বড় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে একজন ক্ষুদ্র পান-চায়ের দোকানও কয়েন দিতে চায় না। এ নিয়ে প্রতিদিন খর্দ্দের-দোকানদারের সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটছে। কোথাও হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির পর্যায় পর্যায় চলে যাচ্ছে। হাজার টাকার কয়েন ৭’শ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, কিছু কিছু জেলায় বর্তমানে কয়েন সংকট চলছে। অথচ সাতক্ষীরা জেলার সর্ববৃহৎ বানিজ্য কেন্দ্র পাটকেলঘাটায় কয়েনের ছড়াছড়ি। কারন খুঁজতে যেয়ে জানা যায়, যেসব জেলায় কয়েন সংকট সেসব জেলার ব্যবসায়ীরা চকলেট কে কয়েন হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের বাড়তি লাভ দেখা যায়। যেমন ৪০টাকা শ কিনে চকলেট ১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এর ফলে সেসব জেলার কয়েন গুলো এসে জড়ো হচ্ছে সাতক্ষীরা জেলায়।
এ জেলায় কয়েন এতো বেশী আমদানী যা পাটকেলঘাটা বাজারে না গেলে বোঝা যাবে না। এ বাজারে এক হাজার টাকা, ৫ টাকা মূল্যে মানের কয়েন ৮’শ টাকায় ও ১-২ টাকা মূল্য মানের কয়েন ৭’শ টাকা হাজার বিক্রি হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে পাটকেলঘাটা অগ্রনী, জনতা, পূবালী,সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের কয়েন নিতে অসুবিধা নেই। তবে গ্রাহক চেক ভাঙ্গালে আর কয়েন নিতে চাই না। তারা বড় নোট চাই। তাহলে কয়েন গুলো নিয়ে আমরা কি করব ? ব্যাংকে তো টাকা বসিয়ে রাখা যায় না।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা হিমাদ্রী শেখর সরদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, স্থানীয় ব্যাংক গুলো যদি সাপ্তাহিক ১ দিন কয়েন নিয়ে নোট দিয়ে কয়েন গুলো বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনা শাখায় জমা দেয়, তাহলে সেখান থেকে নোট দেওয়া হবে। আবার যখন প্রয়োজন পড়বে কয়েন ছাড়া হবে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এধরনের কোন লিখিত দিকনিদের্শনা না দেওয়ায় স্থানীয় ব্যাংক গুলো কোর গুরুত্ব দিচ্ছে না।
পাটকেলঘাটা বাজারের ছোট-বড় একাধিক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা যায়, পান-বিড়ি ,সিগারেট, চায়ের দোকান গুলো বলছে বড় দোকানদাররা কয়েন না নিলে আমরা কয়েন দিয়ে কি করব। আর বড় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বড় নামিদামী কোম্পানীর মাল বিশেষ করে পান-বিড়ি সিগারেট কোম্পানী কয়েন কি ছোট ২ টাকা, ৫টাকা নোটও তাদের কাছে অচল। তাহলে আমরা কি করে খুচরা দোকানদারদের কাছ থেকে কয়েন নিব।
ব্যাংক ক্ষুদ্র ঋণ, বীমা, সমবায়, পল্লী বিদ্যুৎ বিল, পানির বিলসহ মোবাইল বিল, ভ্যানভাড়া থেকে শুরু করে সকল ভাড়া, কাঁচা বাজার , মাছ বাজার, তরিতরকারী বাজারের দোকানীদের কাছে কয়েন চলছে না।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপকদের সাথে কথা বলে একটা সমাধানের জন্য কাজ করবো। তিনি ব্যবসায়ীদের সাথেও কথা বলে বিষয়টি দ্রুত নিরাসরেন প্রতিশ্রুতি দেন।