
ভয়েস অব সাতক্ষীরা ডটকম ডেস্ক :
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের অনেক শ্রমজীবী মানুষ রয়েছেন। বাংলাদেশি ক্রুর অভাবে বহুজাতিক বিমান কোম্পানির ফ্লাইটে অনেক সময়ই তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। বাংলাদেশি যাত্রীদের এই অসুবিধার কথা বিবেচনা করে ফ্লাইটে বাংলাদেশি ক্রু নিয়োগ দেয়ার কথা জানিয়েছেন এয়ার এশিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আইরিন ওমর।
মালয়েশিয়ার বেসরকারি বিমান পরিবহন প্রতিষ্ঠান এয়ার এশিয়া বারহাদ পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম বাজেট এয়ারলাইন্স।
এয়ার এশিয়ার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সম্প্রতি টোটাল এয়ার সার্ভিসের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে আসেন আইরিন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে দেয়া সাক্ষাৎকারে এয়ার এশিয়ার পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আইরিন বলেন, এয়ার এশিয়া পৃথিবীর ১২৯টি রুটে তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করে। এখানে বিভিন্ন দেশের মানুষ বিভিন্ন পর্যায়ে চাকুরি করছেন। ফ্লাইটগুলোতে ক্রু হিসেবে বিভিন্ন দেশের মানুষ রয়েছে।
তিনি বলেন, আমি জানি মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশের অনেক শ্রমজীবী মানুষ রয়েছে। যারা বাংলা ভাষায় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। এলক্ষ্যে আমরা ইতিমধ্যেই ভেবেছি বাংলাদেশি ক্রু নিয়োগ দেয়ার কথা। এটা প্রয়োজন।
বাংলাদেশে এয়ার এশিয়ার নতুন যাত্রার বিষয়ে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে একবার ফ্লাইট চালু করেও আমাদের বন্ধ করে দিতে হয়েছে। সে সমস্যাগুলো আমরা এখন কাটিয়ে উঠেছি। বাংলাদেশে এয়ার এশিয়ার নতুন এ যাত্রা হবে আনন্দময়।
তিনি বলেন, এখন পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম বিমান নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এয়ার এশিয়ার যাত্রার মাধ্যমে মালয়েশিয়ার সঙ্গে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক যোগযোগ আরো বৃদ্ধি পাবে।
এয়ার এশিয়ার সবগুলো টায়ারের সঙ্গেই বাংলাদেশকে সংযুক্ত করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন আইরিন। তিনি বলেন, এয়ার এশিয়া ইন্দোনেশিয়া, এয়ার এশিয়া থাইল্যান্ড, এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়াসহ সকল টায়ারে বাংলাদেশকে সংযুক্ত করার ইচ্ছে রয়েছে তাদের।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ থেকে এয়ার এশিয়ার ভাড়া কিছুটা বেশি। এ সর্ম্পকে আইরিন বলেন, বাংলাদেশে এয়ারপোর্টের ট্যাক্স এখনো কিছুটা বেশি। এটা কমিয়ে আনা গেলে আমাদের পক্ষেও ভাড়া আরো কমানো সম্ভব হবে।
পৃথিবীজুড়ে পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এয়ার এশিয়া। বাংলাদেশেও পর্যটন শিল্পে ভূমিকা রাখতে চায় কোম্পানিটি। এয়ার এশিয়ার এই সিইও বলেন, শুধু বাংলাদেশিদের বিদেশে যাওয়ার জন্যে নয়, বিদেশিরাও যেন বাংলাদেশে কম খরচে আসতে পারে, ঘুরতে পারে তার ব্যবস্থা করতে চায় এয়ার এশিয়া। বাংলাদেশের আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে জনপ্রিয় করে তুলতে ভূমিকা রাখবে তার কোম্পানি।
দু’দিনের সফরে গত বুধবার রাতেই ঢাকা আসেন এয়ার এশিয়া বেরহাদে’র সিইও আইরিন ওমর। এয়ার এশিয়ার ঢাকা ফ্লাইটের উদ্বোধন করেন তিনি।
আইরিন ওমর এয়ার এশিয়া বেরহাদের সিইও হিসেবে যোগ দেন ২০১২ সালের ১ জুলাই। তিনি এই কোম্পানির একজন এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরও। ২০০৬ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী এয়ার এশিয়ার দ্রুত অগ্রসরমানতায় নিশ্চিত করতে এবং এর সর্বোচ্চ কারিগরি মান বজায় রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন আইরিন ওমর।
তার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে আজ এয়ার এশিয়া ৭ হাজার স্টাফকে সঙ্গী করে ৬২ টিরও বেশি গন্তব্যে প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
আইরিন ওমর কর্মক্ষেত্রে তার সাফল্যের জন্য বেশ কিছু পুরস্কারও অর্জন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে- মালয়েশিয়ান ওমেন অব এক্সিলেন্স ২০১৪ এ্যাওয়ার্ড, আউটস্ট্যান্ডিং এচিভমেন্ট (সিইও ক্যাটাগরি), সেলানগর এক্সিলেন্স বিজনেস অ্যাওয়ার্ডস ২০১৪- মাস্টার্স ওম্যান সিইও অব দ্য ইয়ার।
নিজ কর্মগুণে এভিয়েশন শিল্পে আইরিন উমর এখন এক উজ্জ্বল উদাহরণ। “Now Everyone Can Fly” এই স্লোগানকে প্রত্যয় হিসেবে নিয়েছেন এয়ার এশিয়ার এই কর্ণধার।
ঢাকায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার নরলিন ওথম্যান।