
ভয়েস অব সাতক্ষীরা ডটকম ডেস্ক :
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ফের সরগরম হয়ে ওঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গন। একদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে আগামী নির্বাচন হবে। অন্যদিকে বিএনপি চাইছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক। তবে নির্বাচন কবে হবে এ নিয়ে স্পষ্ট কোনও ইঙ্গিত দেয়নি কেউই। তবে নির্বাচন নিয়ে বেশি আগ্রহী বিএনপি। নিবার্চনকেন্দ্রিক সংলাপে বসতেও রাজি দলটি। সম্প্রতি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নির্বাচন নিয়েই কথা বলেছেন এ দুটি দলের নেতারা।
শুক্রবার এক অনুষ্ঠানের পর সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপি ভুল বুঝতে পেরে তত্ত্বাবধায়কের ইস্যু থেকে সরে এসেছে। আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুসারে বর্তমান সরকারের অধীনেই হবে। সে নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দ্রুত সংবাদ সম্মেলনে করে জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে দলটির চেয়ারপারসন রাতে এক অনুষ্ঠানেও নির্বাচন নিয়ে দলের মনোভাব প্রকাশ করেছেন।
সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করেছে বিএনপি। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘আমরা কোনও জিদ ধরে বসে থাকিনি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা কেয়ারটেকার সরকার- এই দুটি শব্দের ওপর স্টিকড হয়ে আমরা বসে থাকিনি। আমরা বলেছি, নিবার্চনকালীন সময়ে এক ধরনের নিরপেক্ষ সরকার থাকতে হবে। কারণ ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। আমরা তার (সৈয়দ আশরাফ) এমন মন্তব্যে হতাশ হয়েছি। এর মধ্য দিয়ে আশঙ্কা জাগে যে, সরকার আবার ৫ জানুয়ারির মতো ভোটারবিহীন একটি নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে কিনা।’
বিএনপির প্রতিক্রিয়ার জবাবে শনিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বলেন, ‘দশম সংসদ নির্বাচনের মতো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও যদি বিএনপি বর্জন করে, তাহলে দলটি অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে। পরবর্তী নির্বাচনও বর্তমান সরকারের অধীনে হবে।’
টুঙ্গিপাড়ায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘২০১৯ সালের আগে কোনও জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। ওই নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। কোনও রূপরেখা বা অন্য কোনও আঙ্গিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। সাংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন ক্ষমতাসীন দলের অধীনে হবে।’
সর্বশেষ নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন চাই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। হাসিনা মার্কা সরকারের অধীনে নয়।’ শনিবার নিজ কার্যালয়ে রাজশাহী আইনজীবী সমিতির নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ করতে হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করতে পারেনি। তাই এই কমিশনের পদত্যাগ করা উচিত।’
নির্বাচন নিয়ে দলের অবস্থান পরিষ্কার করে খালেদা জিয়া বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিএনপির দাবির পরিবর্তন হয়নি। ‘হাসিনা মার্কা’ নির্বাচনে জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে না। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপি ভুল করেনি। কারণ আওয়ামী লীগ আগেই ভোটের বাক্স ভর্তি করার কৌশল ঠিক করে রেখেছিল।
বিএনপি অস্তিত্ব সংকটে পড়বে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্যের জবাবে খালেদা বলেন, বিএনপি সারা জীবন থাকবে। কারণ বিএনপি কারও কথায় চলে না। মানুষের দুঃখ, কষ্টে তাদের পাশে থাকে বিএনপি। এজন্য বিএনপি আছে, থাকবে। ‘পরগাছাদের’ কথা শুনে আওয়ামী লীগ ধ্বংস হচ্ছে। এদের জন্য দেশ ধ্বংস হচ্ছে।