
ভয়েস অব সাতক্ষীরা ডটকম ডেস্ক :
বজ্রপাতে প্রতি বছর বাংলাদেশে মারা যাচ্ছে শত শত মানুষ, পশু-পাখি। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাছ-গাছালি। প্রাকৃতিক এ দুর্যোগের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতিও মারাত্মক। তাই প্রাণহানি কমাতে গবেষণার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
জাতিসংঘের আর্থ নেটওয়ার্ক টোটাল লাইটিং সিস্টেমের সহায়তায় গবেষণা পরিচালনা করা হবে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
সচেতনতা বাড়িয়ে প্রাণহানি রোধসহ ক্ষতি কমিয়ে আনতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়েরর যুগ্ম-সচিব কামরুল হাসান।
মন্ত্রণালয় এ গবেষণাকাজে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও আওতাধীন অধিদফতরগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে বজ্রপাত থেকে প্রাণিকূলকে রক্ষা করতে চায়।
বজ্রপাতে প্রতি বছর বাংলাদেশে কতো মানুষের মৃত্যু হয় তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর জানিয়েছে, বছরে সাড়ে তিনশ’ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
সম্প্রতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া জাতীয় সংসদেও একই তথ্য দিয়েছেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, আকাশে কালো মেঘ থেকে বেশি বজ্রপাত হয়।
মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব কামরুল হাসান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বজ্রপাতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বজ্রপাতে উৎপন্ন বিদ্যুৎ কতো ভোল্টের তা জানা না গেলেও ধারণা করা হয়, প্রতি সেকেন্ডে এর গতি আলোর গতির সমান, অর্থাৎ এক লাখ ৮৬ হাজার মাইল।
আকাশে যখন মেঘের গর্জন শোনা যায় তখন বাইরে না যাওয়ারই পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এ সময় পাকা ঘরে থাকাই নিরাপদ। তবে গাছের নিচে, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তারের নিচে না যাওয়াটাই উত্তম।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরকে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে প্রকল্পের খসড়া তৈরি করে পাঠাতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতরকেও বলা হয়েছে এ সংক্রান্ত কোনো গবেষণা আছে কি-না।
আবহাওয়া অধিদফতরে বজ্রপাত বিষয়ে কোনো গবেষণার তথ্য নেই বলে জানান সংস্থার পরিচালক শাহ আলম।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) রিয়াজ আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প গ্রহণের বিষয়ে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। প্রকল্প গ্রহণের পর তারা সে বিষয়ে কাজ শুরু করবেন।
অধিদফতরের হিসেবে বছরে তিনশ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ প্রাণহানি হয় বলে জানিয়ে ডিজি রিয়াজ আহমেদ বলেন, প্রকল্প গ্রহণ করা হলে মৃত্যুসহ ক্ষতি অনেকাংশে কমানো যাবে।
মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তিদের তালিকা জেলা/উপজেলা কার্যালয়ে সংরক্ষণ করা হয়। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জিআর ক্যাশ বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এছাড়া আহত ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য জিআর ক্যাশ হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয় সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা।