
রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত বাস ব্যবহার করা হচ্ছে টেইলার্স মালিকের বিয়ের কাজে। শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুরের একজন টেইলার্স মালিকের বিয়ের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন দপ্তর প্রশাসক প্রফেসর মোহা. মাইনুল হক জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিয়ে কিংবা তাদের সন্তানদের বিয়ের কাজে বাস ব্যবহারের একটি নীতিমালা রয়েছে। তবে সেটি সিটি কর্পোরেশনের ভেতরে বিয়ে হলে বাসের তেল ও চালকের খরচ দিয়েই কেবল সেই বাস ভাড়া নেওয়া যাবে। আর এটি ছুটির দিন ব্যতীত অন্য কোন দিন দেয়া যাবে না বলে জানান তিনি’।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাতায়াতের জন্য পরিবহন বাহিরে অন্য কাজে ব্যবহার করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ‘রাজ মেট্র, ঝ-১১-০০০৩’ নম্বরের বাসটি শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে দেখা যায় বিনোদপুরের মির্জাপুর এলাকায়। বাসে চেপে বর যাত্রীরা কনে আনতে যাচ্ছেন। ছেলের বিয়ের কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাসটি নিয়েছেন আইবিএসের মালি আক্তার আলী। তবে বাসটি তিনি ছেলের বিয়ের জন্য অনুমতি নিলেও তা ব্যবহার হচ্ছে বিনোদপুরের শান্ত ট্রেইলার্সের মালিক শান্ত’র বিয়ের কাজে। ওই টেইলার্স মালিক আক্তার আলীর নাতি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দফতরের সেকশন অফিসার মো. আহসান হাবিব বলেন, ‘আইবিএসের মালি আক্তার আলী মির্জাপুর থেকে মোহনপুরে তার ছেলের বিয়ের জন্য বাসটি নিয়েছেন। তিনি আইবিএসের পরিচালকের থেকে এ বিষয়ে অনুমতি নেয়ার পরই পরিবহন দফতর থেকে তাকে বাস দেওয়া হয়েছে। তিনি কি কাজে বাসটি ব্যবহার করছেন তা আমার জানা নেই।’
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যবহার করার বিষয়ে পরিবহন দপ্তরের সাবেক প্রশাসক প্রফেসর মো. সাইয়েদুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর ছেলে-মেয়ে ছাড়া নাতি-নাতনি বা অন্য কারো বিয়ের জন্য বাস দেয়ার কোনো নিয়ম নেই। যদি নাতির বিয়েতে বাস দিয়ে থাকে তাহলে তা ঠিক হয়নি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন, মার্কেটিং, পদার্থবিজ্ঞান ও ফার্মেসী বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহৃত বাস বিয়ের কাজে ব্যবহার হবে এটা ভালো বিষয় নয়। বিয়ের কাজে কখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ব্যবহার করতে দেওয়া ঠিক নয়। সেটা যার বিয়েই হোক না কেনো।’
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে আরও বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন কাজে বাস দেয়া হলেও শিক্ষার্থীদের কোনো আত্মীয় মারা গেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাস দেয়া হয় না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও পরিবহন দফতরের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য প্রফেসর সাদেকুল আরেফিন মাতিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস বিয়ের কাজে ব্যবহার করাটা আসলেই ভালো দেখায় না। যেহেতু একটি নিয়ম আগে থেকেই চলে আসছে তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস কাউকে দেওয়ার আগে অবশ্যই সব বিষয় খোঁজ নেয়া প্রয়োজন। কারা কি কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ব্যবহার করছে তা সঠিকভাবে না জেনে দেয়া ঠিক নয়।’