
অনলাইন ডেস্ক ::
কাঁধের ইনজুরির পর থেকে একটু একটু পিছিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। শুরুর ক্ষুরধার হারিয়ে গেছে বোলিং থেকে। ছন্দ চলে গেলেও দেশসেরা পেস বোলারের তকমাটা হারিয়ে যায়নি মুস্তাফিজের নামের পাশ থেকে। সেই দেশসেরা বোলারই এখন একাদশে অনিয়মিত। নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র একটি। কারণ কাটার, স্লোয়ার বিশেষজ্ঞ মুস্তাফিজ ছন্দে নেই।
এমন একজন বাঁহাতি পেসারের ছন্দের তলানিতে চলে যাওয়া দলের বড় ক্ষতি। তাঁকে ছন্দে ফেরাতেই পরামর্শক কোচ শ্রীধরন শ্রীরাম বোলিং বিশ্নেষণ করতে বসেছিলেন ভিডিও অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরনের সঙ্গে। মাঠের পর্যবেক্ষণ আর ভিডিও বিশ্নেষণ পর্যালোচনা করে মুস্তাফিজের বোলিং অ্যাকশনের ত্রুটি ধরে ফেলেন কোচ। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন জানান, বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটির জন্যই নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের বাকি তিন ম্যাচে খেলানো হয়নি তাঁকে। তবে পুরোনো অ্যাকশনে ফিরে মুস্তাফিজের বিশ্বকাপে ভালো খেলার ব্যাপারে আশাবাদী টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন।
মুস্তাফিজের বোলিংয়ের আগের অ্যাকশন ফেরাতে পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে। সুজন জানান, মুস্তাফিজ শুরুতে বোলিং করতেন মাথার ওপর থেকে। কাটার-স্লোয়ার ডেলিভারিগুলো নিখুঁত করতে পারতেন তখন। এ দুই ধরনের ডেলিভারি দিয়েই ব্যাটারদের বিট করতে পারতেন। অথচ গত তিন বছরে বোলিং বৈচিত্র্য বাড়িয়েও ২২ গজে কার্যকর নন বাঁহাতি এ পেসার।
কেন এই ব্যর্থতা- এ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে সুজন বলেন, ‘মুস্তাফিজের ডেলিভারি অ্যাকশন নড়ে গেছে। সে এখন সাইড থেকে বল ছাড়ে। কাঁধের বাইরে থেকে বল ছাড়ার কারণে জায়গামতো পিচ করে না। এত দিন ধরে কাজ করলেও মুস্তাফিজের সমস্যাটা লক্ষ্য করেননি ডোনাল্ড। সমস্যাটা ধরেছেন শ্রীরাম। পেস বোলিং কোচকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুস্তাফিজকে নিয়ে কাজ করার। আর ওকে খেলানো হয়নি বোলিং নিয়ে কাজ করার কারণে। আশা করি, আগের অ্যাকশনে ফিরে ভালো খেলবে সে।’
সাকিব-লিটনদের চেয়ে কম ক্রিকেট খেলেন মুস্তাফিজ। শুধু সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ব্যস্ততা তাঁর। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট লিগ বা টেস্টে খেলেন না। তাই বোলিং নিয়ে খুব বেশি কাজের সুযোগও হয় না মুস্তাফিজের। যদিও জাতীয় দলে ডাকসাইটে সব পেস বোলিং কোচ কাজ করছেন পাঁচ-ছয় বছর ধরে। কোর্টনি ওয়ালশ, ওটিস গিবনের উত্তরসূরি করা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার ডোনাল্ডকে। এই তিনজনের মধ্যে ওটিস ছিলেন কর্মঠ। পেস বোলারদের দারুণ একটি শেপে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। সে তুলনায় ডোনাল্ড পেসারদের এখন পর্যন্ত তেমন কিছুই শেখাতে পারেননি বলে মনে করে টিম ম্যানেজমেন্ট। রুটিন বোলিং অনুশীলন নিয়ে অনুশীলনে ব্যস্ততা তাঁর। যে কারণে মুস্তাফিজের পরিবর্তিত অ্যাকশন চোখে পড়েনি ডোনাল্ডের।
টি২০ বিশ্বকাপ সামনে রেখে পেস বোলারদের ঘষামাজা করতে বলা হয়েছে কোচকে। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের লাইন-লেন্থে ধারাবাহিকতা আনা, এবাদত হোসেনের নার্ভ ধরে রাখার কৌশল খেলাতে ব্যস্ত কোচ। বাংলাদেশ দলের ম্যানেজমেন্ট আশা করছে, সুপার টুয়েলভের খেলা শুরু হওয়ার আগেই ডোনাল্ডের নির্দেশনায় ভুলত্রুটিগুলো ঠিক করে নিতে পারবেন মুস্তাফিজ-এবাদত-শরিফুলরা।