
অনলাইন ডেস্ক ::
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাবেক শিক্ষার্থী মাহিদ আল সালাম খুনের ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে চিহ্নিত ছিনতাইকারী মির্জা আতিক। গতকাল বুধবার বিকেলে সিলেট মহানগর হাকিম (প্রথম) মামুনুর রশীদ ছিদ্দিকীর আদালতে আতিকের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
সিলেট মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, জবানবন্দি দেওয়ার পর আতিককে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তায়েফ মো. রিপন নামে আরও একজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি খায়রুল ফজল জানান, মাহিদ হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে তার চাচা সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এটিএমএ হাসান জেবুল বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই রাতেই নগরীর ভার্তখলা গোরস্তান এলাকায় অভিযান চালিয়ে আতিক ও রিপনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে আতিক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। রিপনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্র জানায়, মির্জা আতিকের দাবি- ওই ঘটনায় মোট চারজন জড়িত। স্বীকারোক্তিতে সে জানিয়েছে, কস্ফীন ব্রিজ সংলগ্ন ফুয়াদ রেস্টুরেন্ট থেকে তারা মাহিদকে মোবাইলে কথা বলে রিকশায় যেতে দেখে। এরপর মাহিদের পিছু নিয়ে কিছুদূর এসে তারা রিকশার গতিরোধ করে। এরপর মোবাইল ফোন কেড়ে নিতে চাইলে মাহিদ জোরাজুরি শুরু করে। এরই এক পর্যায়ে মাহিদকে ছুরি মেরে মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে আতিক ও তার সহযোগীরা দুটি মোটারসাইকেলে করে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি জ্যোতির্ময় সরকারের নেতৃত্বে দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি খায়রুল ফজল ও এসআই রিপন দাস প্রমুখকে নিয়ে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ সুরমা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।
গত রোববার মধ্যরাতে রিকশায় চড়ে কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে যাওয়ার সময় নগরীর কস্ফীন ব্রিজের দক্ষিণ অংশে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন মাহিদ। ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত মাহিদকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
কর্মসূচি :মাহিদ হত্যার বিচার দাবিতে গতকাল বিকেলে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে ‘সিলেটের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. লালা, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুছ, শাবির বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা সিদ্দিকা রনি, সহযোগী অধ্যাপক সুব্রত দাস, গৌরাপদ দে রবিন, সম্মিলিত নাট্যপরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, মাহিদের ফুফু জান্নাত আরা পান্না, ব্যবসায়ী মামুনুর রশীদ প্রমুখ।
গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় কস্ফীন ব্রিজের দক্ষিণ অংশে যেখানে মাহিদ ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন; সেখানে প্রদীপ প্রজ্বালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।