মোরেলগঞ্জে দফায় দফায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় সহিংস হয়ে উঠেছে নির্বাচনী এলাকা : ভোটাররা আতংস্কে


415 বার দেখা হয়েছে
Print Friendly, PDF & Email
মোরেলগঞ্জে দফায় দফায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় সহিংস  হয়ে উঠেছে নির্বাচনী এলাকা : ভোটাররা আতংস্কে
মার্চ ১৯, ২০১৬ খুলনা বিভাগ ফটো গ্যালারি
Print Friendly, PDF & Email

এসএম সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট অফিস :
পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ-নারী মেম্বর প্রার্থীদের বাড়িতে গভীর রাতে লুট, ও দফায় দফায় হামলা-ভাঙচুরে ভয়াভহ রুপ নিয়ে সহিংস হয়ে উঠেছে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ নির্বাচনী মাঠ। আগামী ২২ মার্চ বাগেরহাটের ৭৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে জেলার ৭৩টি ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় ৩২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। আর বাকি ৪০টি ইউনিয়নের নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে সহিংসতা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে জেলার মোড়েলগঞ্জ, রামপাল, মোল্লারহাট, মংলা ও কচুয়া উপজেলায় হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে একাধিক। যার কারণে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যার্থ হওয়ায় প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে মোড়েলগঞ্জ, রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) ও ইউপি নির্বাচনে  প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে চিতলমারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে ইসি। আর এ কারণে ভোটের উৎসব আমেজ বাদ দিয়ে এসব ইউনিয়নের সাধারণ ভোটারদের মধ্যে বিরাজ করছে আতংক। আর বর্তমানে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে নির্বাচনের দিন ভোটারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। বাগেরহাটের নির্বাচনী মাঠের উল্ল্যেখযোগ্য সহিংস ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে, গত ১৭ মার্চ মোড়েলগঞ্জের শরণখোলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী মতিয়ার রহমান খানের বাড়িতে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ সমর্থকরা। প্রতিপক্ষ প্রার্থীর ২৫/৩০ জন কর্মী-সমর্থক রাম দা, হকস্টিক, লোহার রড ও লাঠিসোটা নিয়ে তার বাড়িতে ঢুকে ঘরের দরজা, জানালায় এলোপাতাভিাবে পেটায়। একপর্যায় ভিতর থেকে দরজা খুলে দিলে কর্মী বাহিনী ঘরে ঢুকে মতি খানকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দেয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। ১৬ মার্চ নির্বাচনের সহিংসতার জন্য তৈরী করা ৪৪ বোতল কেরোসিন বোমাসহ বাগেরহাটের মোল্লাহাটের চুনাখোলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড এলাকার ছোট কাচনা বাজার থেকে স্থানীয় জনতা নজরুল ইসলাম দুখু মিয়া (৫০) ও জাহিদুল ইসলাম মোল্লা ওরফে ডিকন মোলাকে আটক করে পুলিশে দেয়। ১৫ মার্চ মংলার চিলা ইউনিয়নে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের হামলায় বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৫ জন সমর্থক গুরুতর আহত হয়েছে। হামলাকারীরা এ সময় শুধু মারধর করে ক্ষ্যান্ত হয়নি দোকানপাট ও বাড়ি ঘরেও হামলা এবং ভাঙচুর চালিয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। একই দিন রাতে বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায় দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংর্ঘষের ঘটনায় একটি চায়ের দোকানে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এতে চায়ের দোকানটি আগুনে পুড়ে ভস্মিভূত হয়ে লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এছাড়া রামপাল উপজেলার উজলকুড় ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থী ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান খাজা মঈন উদ্দিন আকতারের প্রচার মাইক সন্তোষপুর এলাকায় পৌঁছালে প্রতিপক্ষের কর্মীসমর্থকরা প্রচার মাইক ভাঙচুর করে ও প্রচার মাইক ছিনিয়ে নেয়। এসময় তারা বিএনপি প্রার্থীর প্রচারকর্মীদের মারধোর করে এবং নির্বাচনী অফিস বন্ধ করার হুমকী দেয়। ১১ মার্চ ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কি হবে তা বোঝা হয়ে গেছে। নির্বাচনের সাধও মিটে গেছে। এখন স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নিরাপদে বাড়ি থাকতে দিন’। কথাগুলো বলে অবরুদ্ধ অবস্থায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন মোড়েলগঞ্জ উপজেলার হোগলাপাশা বিএনপির প্রার্থী প্রধান শিক্ষক মফিজুল হক ও বনগ্রামের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল জব্বার মোল্লা। এসময় লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, আওয়ামী লীগের কর্মীরা বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিদিন কর্মীদেরকে মারপিট করছে। প্রার্থীসহ আত্মীয়-স্বজন ও কর্মীদের জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই। ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। রাতে বাড়িতে গুলি ও ককটেল হামলা করছে বলে বিএনপির এ দুই চেয়ারম্যার প্রার্থী অভিযোগ করেন। ১১ মার্চ নির্বাচনী সহিংসতায় বাগেরহাটের শরণখোলার খোন্তাকাটা বাজারে  এক দল সন্ত্রাসী মেহেদী হাসান প্রিন্স নামের এক যুবককে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে পা ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। এসময় প্রিন্সের ডাক-চিৎকারে বাজার ব্যবসায়ী ও পরিবারের সদ্যরা এগিয়ে এসে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ১০ মার্চ বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে জিউধরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদশা বলেন, রাত ২টায় ভাইজোড়া ব্রীজ সংলগ্ন আমার নির্বাচনী অফিসটি ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। একই দিন রাত ১১টার দিকে হোগলাপাশা ইউনিয়নে ৮নং ওয়ার্ড় মেম্বর প্রার্থী মো. ফারুক মিয়ার বাড়িতে গুলি ও তার সর্মথক প্রতিবেশী মুক্তিযোদ্ধা মো. খায়রুল আলম-এর বাড়িতে হামলা ও তার মেয়েকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৯ মার্চ মংলার মিঠেখালী ইউনিয়নে ৯ ওয়ার্ডের মেম্বর প্রার্থী মো: ইব্রাহিম শেখের উপর হামলা ও তার সমর্থদের উপর চামলা চালায় প্রতিপক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। এসময় ইব্রাহিমসহ তার বেশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থক আহত হয়।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মোঃ নিজামুল হক মোল্যা জানান, বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়া এখন পর্যন্ত জেলায় কোথাও বড় ধড়নের কোন সহিংসতা বা কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনী মাঠের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আইন শৃংখলা বাহিনীর একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।
##
রামপালে বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিন ও জাতীয় শিশু দিবস পালন

এসএম সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট অফিস:
রামপালে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের  ৯৭ তম জন্ম দিন ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ১৭ তারিখ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় মুক্তিযোদ্ধার কমপ্লেক্সে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক করা হয়, সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলা চত্তরে এক র‌্যালী বের হয়। পরে সকাল ১১টায় এক আলোচনা সভা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব কুমার রায় এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মোঃ আবু সাইদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব শেখ আঃ ওহাব, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ মোজাফ্ফার হোসেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসাঃ হোসনেয়ারা মিলি, অধ্যক্ষ মোঃ মজনুর রহমান, অধ্যক্ষ মোঃ খালিদ আহমেদ, বিভিন্ন সরকারী বে-সরকারী ও স্কুল কলেজর শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী বৃন্দ। অপর এক অনুষ্ঠান উপজেলা ছাত্রলীগের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর শিশুকালের উপর চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগীতা রামপাল কলেজ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ হাফিজুর রহমান ও সাধারন সম্পাদক শেখ সাদি।
##

রামপালে নৌকা প্রতিকের পক্ষে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

এসএম সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট অফিস:
উপজেলার রামপাল সদর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ জামিল হাসান জামুর পক্ষে শ্রমিক সমাবেশ হয়েছে। ১৭ তারিখ বৃহস্পতিবার বিকাল ৫ টায় রামপাল সদর ইউনিয়নের সকল শ্রমিক সংগঠন একত্রিত হয়ে মোঃ রবিউল ইসলাম রবি’র নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের হয় র‌্যালীটি রামপাল থানার সামনে থেকে শুরু হয়ে ভাগার মোড়ে শেষ হয়। র‌্যালীতে অংশগ্রহন করে উপজেলা মাহেন্দ্র সমিতি, মটর সাইকেল চালক সমিতি, নসিমন সমিতি, মটর ভ্যান সমিতি, মাঝিমাল্লা সমিতি, হ্যান্ডেলিং সমিতিসহ সকল শ্রেনীর শ্রমিক বৃন্দ। র‌্যালী শেষে ভাগার মোড়ে সন্ধা ৬টায় রামপাল সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ জালাল উদ্দিন দুলাল এর সভাপতিত্বে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ জামিল হাসান জামু, শ্রমিকদের পুলিশি হয়রানীসহ বিভিন্ন সমাস্যর সমাধান ও বিভিন্ন দাবী তুলে ধরে বক্তৃতা করেন শ্রমিক নেতা মোঃ রবিউল ইসলাম, প্রধান অতিথি শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আমি অতীতেও এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলাম এখন আমি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক অতীতেও যেমন বিপদে আপদে আপনাদের পাশে থেকে উন্নয়ন করেছি এখনও করব, এবার আমি আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করিতেছি। এই ইউনিয়নের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখা ও তালুকদার আঃ খালেকের হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষে আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করুন আমি আপনাদের পাশে থাকবো। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শেখ মাহাফুজুল হক টুকু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হামীম নূরী, যুবলীগ সভাপতি মোঃ নুরুল হক লিপন, শ্রমিকলীগ সভাপতি আশরাফুল আজম আকুঞ্জি, মোঃ বাকী বিল্লাহ, সফরুল শেখ, মোঃ ফজলুর রহমান, হিমুল শেখ, ফিরোজ শেখ, মোঃ রফিকুল ইসলাম পাইক, মোঃ মাসুদ গাজীসহ বিভিন্ন শ্রেনীর শ্রমিকগন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন শ্রমিক নেতা সরদার বোরহান উদ্দিন।