
স্টাফ রিপোর্টার :
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার জয়নাগনে দেশব্যাপি আলোচিত দুই শিশু নির্যাতনের ঘটনায় সাজানো ছবি নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দুই সাংবাদিকসহ ৪ জনের নামে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার আসিরা হলেন, দৈনিক পত্রদূতের শ্যামনগর উপজেলা প্রতিনিধি প্রভাষক সামিউল আজম মনির, দৈনিক পত্রদূত থেকে সদ্য অব্যাহতি দেয়া কাশিমারি প্রতিনিধি গোবিন্দপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম, গোপালপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ গাজী ও জয়নাগর গ্রামের ইউনুছ গাজী।
রোববার রাতে শ্যামনগর উপজেলার জয়নাগর গ্রামের মাজেদ গাজীর ছেলে আনিসুর রহমান বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।যার মামলা নম্বর ৪২। ধারা তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০৬ এর ৫৭(১)।
শ্যামনগর থানার ওসি ইনামুল হক জানান, শ্যামনগরের জয়নাগরে দুই শিশু নির্যাতনের ঘটনা সঠিক হলেও যে ছবিটি বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা ছিল সাজানো। স্পর্শকাতর ওই ছবিটি গনমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় দেশব্যাপি তোলপাড় শুরু হয়। ছবিটি ছিল সাজানো। ছবিটি সাজানোর ঘটনা নিয়েই এই মামলাটি দায়ের হয়েছে।তিনি বলেন, আসামিরা পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই শ্যামনগর উপজেলার কাশিমারি ইউনিয়ের জয়নাগর গ্রামে দুই শিশুকে বেধে রেখে নির্যাতন করা হয়।নির্যাতনের শকিার শশিুরা হলো- জয়নগর গ্রামরে ইসমাইল তরফদাররে ছলেে ইয়াছনি (৮) ও হামদি তরফদাররে ছলেে নাছমি (৯)। এরা দু’জনইে তৃতীয় শ্রণেরি ছাত্র। নর্যিাতনকারী মোস্তফা ওই গ্রামরে ইমরান আলী মোড়লরে ছলে।
এ ঘটনা ছবসিহ স্থানীয দৈনিক পত্রদূত পত্রকিায় গত ২১ জুলাই প্রথম প্রকাশতি হয়। পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর ওই দনি বকিলেে পুলশি নর্যিাতনকারী জয়নাগর গ্রামরে গোলাম মোস্তফা তরফতারকে গ্রফেতার করে এবং রাতইে পুলিশ শিশু নর্যিাতন ধারায় মামলা রর্কেড করে থানায়। যার মামলা নং-৩৪।
এ ঘটনার পররে দনি ২২ জুলাই দেশের বভিন্নি গনমাধ্যমে ওই ছবসিহ নির্যাতনের কাহিনী ফলাও করে প্রকাশতি হলে দশেব্যাপি তোলপাড়া শুরু হয়। পরবর্তীতে ঘটনা সঠিক বলে প্রমানীত হলেও যে ছবিটি বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা ঘটনার পর সাজানো হয়েছে বলে পুলিশ সরেজমিন তদন্তে জানতে পারে।
শ্যামনগরে দুই শিশুকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় ব্যবহৃত শেকল ও রশি উদ্ধার করে পুলিশ। গত শুক্রবার বিকালে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর মোদাচ্ছের হোসেন ঘটনাস্থলে পৌছে এসব উদ্ধার করেন।
তিনি ভয়েস অব সাতক্ষীরা ডটকমকে জানান, নির্যাতিত দুই শিশু ইয়াসিন ও নাসিম এর সঙ্গে তিনি অত্যন্ত স্নেহের ভাষায় কথা বলে তাদের কাছ থেকে জানতে পারেন সাজানো ছবির কাহিনী। দুই শিশু তাকে জানায়, ‘ঘটনার দিন মোস্তফা তাদের পিঠে দুই তিনটি চড় মারে। এর পর কিছুক্ষনের জন্য হাতে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে পরে খুলে দেয়। এর দুই তিনদিন পর ইয়াসিনের চাচা ইলিয়াস তরফদার রশি এবং শেকল নিয়ে তাদের বাড়িতে আসে। এর পরপরই সেখানে উপস্থিত হয় একজন সাংবাদিক’। শিশু দুটির বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, ‘তাদেরকে বলা হয়, তাদের বাড়ির গাছের সাথে সোজা হয়ে দাঁড়াতে। এসময় ইলিয়াস ও ওই সাংবাদিক তাদেরকে রশি দিয়ে এবং শেকল দিয়ে বেঁধে দেন। এর পরপরই ওই সাংবাদিক তাদের ছবি তোলেন’। শিশু দুটি ওই সাংবাদিকের নাম না জানলেও মুখ দেখলে তাকে চিনতে পারবে বলে জানায়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ইয়াসিনের মা তাসলিমা খাতুন তার ঘর থেকে কথিত নির্যাতনের কাজে ব্যবহৃত রশি ও শেকল বের করে দেন। এসময় স্থানীয়রা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শিশুদুটির বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘তারা জানিয়েছে ওই সাংবাদিক ও ইলিয়াস কিভাবে গাছের গায়ে দাঁড়াতে হবে এবং পরে কেউ জিজ্ঞাসা করলে কি কি বলতে হবে তাও শিখিয়ে দেন তাদের’।