
আসাদুজ্জামান :
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এক নববধূকে পিটিয়ে ও শ্বাস রোধ করে হত্যার পর আতœহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে তার মৃতদেহটি হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ফেলে স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। এরপর শ্যামনগর থানা পুলিশ তার মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করে। নিহত গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌস (১৮) কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের শেখপাড়া এলাকার রফিক শেখের মেয়ে। শিমু রেজা এমপি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
নিহতের ভাই নাজমুল হাসান জানান, মাত্র দেড় মাস আগে শ্যামনগর উপজেলা সদরের চন্ডিপুর গ্রামের বাদশা সরদারের ছেলে রফিকুল ইসলামের সাথে তার বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবীতে প্রায়ই তাকে নির্যাতন করতো।
তিনি আরো জানান, বিয়ের সময় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেয়ার পরও সম্প্রতি তার স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাতে তার বোনকে পিটিয়ে হত্যার পর গলায় দড়ি দিয়ে আতœহত্যার চেষ্টা বলে শ্যামনগর হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তার মৃত ঘোষনা করেন। এর পর তার মৃতদেহ ফেলে স্বামী রফিকুলসহ তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন নিরাপদে পালিয়ে যায়। পর অজ্ঞাত একটি ফোন পেয়ে তারা হাসপাতালে পৌছে দেখেন তার মারা গেছে এবং তার শরীরে আঘাতের চিহ্নও রয়েছে।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক ডা. গোপাল বিশ্বাস জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের স্বামী পরিচয় দানকারী রফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন বলেন, তারা বাড়ির বাইরে থাকার সুযোগে তার স্ত্রী জান্নাতুল গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে দড়ি ছিঁড়ে পড়ে যাওয়ার শব্দে তারা ঘরে প্রবেশ করে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। যদিও ডা. গোপাল বিশ্বাসের দাবি ওই গৃহবধুকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ এএসপি সার্কেল মীর মনির হোসেন তার শরীরে আঘাতের চিহ্নের কথা স্বীকার করেই জানান, মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর আসল ঘটনা জানা যাবে। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় নিহতের নানা নূরমোহাম্মদ বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।