শ্যামনগরে বোরো আবাদে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে


95 বার দেখা হয়েছে
Print Friendly, PDF & Email
শ্যামনগরে বোরো আবাদে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে
ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩ কৃষি ফটো গ্যালারি শ্যামনগর
Print Friendly, PDF & Email

ডেস্ক রিপোর্ট ::

শ্যামনগর উপজেলায় বোরো আবাদের প্রতি কৃষকের আগ্রহ দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। বর্তমানে বোরো চাষে কৃষকরা সময় কাটাচ্ছেন। কৃষকের প্রধান ফসল আমন ঘরে উঠানোর সাথে সাথেই শুকনো মৌসুমের ধান বোরো আবাদের প্রতি কৃষকরা ব্যাপকভাবে ঝুঁকে পড়েছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোদাচ্ছের বিল্যাহ জানান, চলতি বোরো মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২১৯০ হেক্টর। গত বছর উপজেলায় বোরো চাষ হয়েছিল ২২০০ হেক্টর জমিতে এবং ফলনও ভালো ছিল। লবণাক্ত এলাকা শ্যামনগর উপজেলা হলেও লবণ সহিষ্ণু ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ বেশি।

উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউপির ধানখালী গ্রামের বোরো চাষি সুপদ বৈদ্য বলেন, তিন বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হচ্ছে। গতবছর একই জমিতে বোরো ধানের চাষ করে ভালো ফসল পেয়েছেন। জেলেখালী গ্রামের বোরো চাষি নিরঞ্জন মন্ডল বলেন, বোরো ধান চাষ তিনি বেশ কয়েক বছর যাবত করে আসছেন এবং ফলনও পাচ্ছেন ভালো। কিন্তু তিনি বলেন, বোরো চাষের প্রধান অন্তরায় মিষ্টি পানির অভাব। যে সকল খাল এলাকায় রয়েছে সেগুলিতে লবণ পানি ভরা থাকে, লিজ দেওয়া থাকে। আবার পলি পড়ে ভরাট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কৈখালী গ্রামের বোরো চাষি লুৎফর রহমান বলেন, দুই বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে নিজস্ব পুকুরের পানি ও বৃষ্টির পানি ভরসা করে। তিনি বলেন, এমন অনেক চাষি আছেন তারা তার মতো আকাশ পানে চেয়ে থাকেন নিজস্ব সংরক্ষিত পানি ফুরিয়ে গেলে। এ জন্য তারা খাল গুলিতে মিষ্টি পানি সংরক্ষণের দাবী জানান।
শ্যামনগর ইউপির বোরো চাষি শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় আমন ফসলের পর বোরো ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। এ ক্ষেত্রে উপজেলার প্রতিটি ইউপির খালগুলি পুন:খনন করা, মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করা ও বোরো চাষিদের মাঝে লিজ দেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম এনামুল ইসলাম জানান, শ্যামনগর উপজেলায় বোরো ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়ে চলেছে যেভাবে সেক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। তিনি অনুমান করে বলেন ২৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হতে পারে। উপজেলায় এ পর্যন্ত ১৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়ে গেছে। উপজেলায় কৃষকরা লবন সহিষ্ণু জাত বিনা-১০, ব্রি-৬৭ ও হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করে থাকেন বলে জানা যায়। উপজেলা কৃষি অফিসার বলেন উপজেলায় ১২০টির অধিক খাল রয়েছে যে গুলি পুন:খনন করে মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করা হলে কৃষকরা শুকনা মৌসুমে বোরো ধান চাষসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করতে পারেন। এখানে মিষ্টি পানির সংকট রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপজেলায় লবনাক্তার প্রকোপ থাকলেও লবন সহিষ্ণু ধান চাষ করে কৃষকরা সফল হচ্ছেন বলে তিনি জানান। বর্তমানে জমিতে ৩/৪ পিপিটি পরিমান লবন রয়েছে বলে জানা যায়। উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম এনামুল ইসলাম বোরো চাষিদের বেশি বেশি জৈব সার ব্যবহার করার কথা বলেছেন। এবং অতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যবহার ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন। এবং লবনাক্ততার পরিমাপ মাপার জন্য অফিসে যোগাযোগ করতে বলেছেন।

শ্যামনগর উপজেলা চিংড়ি চাষের প্রবন এলাকা হলেও চিংড়িতে বেশি লাভবান না হওয়ায় কৃষকরা আমন, বোরো ধান চাষসহ অন্যান্য ফসল আবাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন। মুন্সিগঞ্জ, কৈখালী, রমজাননগর, ভূরুলিয়া, নুরনগর, শ্যামনগরসহ অন্যান্য ইউনিয়নে বোরো আবাদের ব্যাপকতা বেড়ে চলেছে। এলাকার সচেতন মহলের মতে জোনিং সিস্টেমে ধান ও চিংড়ি চাষ করা সময়ের দাবী বলে অনেকে মতো প্রকাশ করেছেন।