সখিপুরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচনে পরাজিত হয়ে নব নির্বাচিত মহিলা মেম্বরকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করেছে


455 বার দেখা হয়েছে
Print Friendly, PDF & Email
সখিপুরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচনে পরাজিত হয়ে নব নির্বাচিত মহিলা মেম্বরকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করেছে
মার্চ ২৯, ২০১৬ দেবহাটা ফটো গ্যালারি
Print Friendly, PDF & Email

বিশেষ প্রতিনিধি :
দেবহাটার সখিপুরে ইউপি নির্বাচনে পরাজিত হয়ে নবনির্বাচিত মহিলা মেম্বরের পরিবারের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে বাড়িতে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মানষিক প্রতিবন্ধি মহিলাকে শারিরীক ভাবে লাঞ্চিত করা, বাড়িতে প্রবেশ করার কয়েক যুগের রাস্তায় চলাচলে বাধা দেওয়া ও জোর পূর্বক অন্য শরিকের ফলদ গাছ কেটে নেয়ার ঘটনা ঘটিয়েও প্রতিহিংসা থামছে না। এখন  প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সাজানো ঘটনার জন্ম দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে মিথ্যা মামলা দেয়ার অপচেষ্টাও করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে দেবহাটা উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের কাজী মহল্লা গ্রামে।DSC04678
স্থানীয়রা জানান, গত ২২ মার্চ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত মহিলা ইউপি সদস্য সখিপুর ইউনিয়নের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাকিয়া বেগম তার চাচাতো জা আলফাতুননেছার সাথে ভোটে পরাজিত হন। ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়া সত্ত্বেও জাকিয়া বেগম পরাজিত হয়ে আলফাতুননেছা ও তার পরিবারবর্গকে হিংসাত্বকভাবে ঘায়েল করার অপচেষ্টা চালাতে থাকেন। তারই সূত্র ধরে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জাকিয়া বেগম সাংগ-পাংগ নিয়ে গত বুধবার আলফাতুননেছার বাড়ির প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি একই শরিকের ফলন্ত নারিকেল ও লেবু গাছ কেটে সাবাড় করে দেন। এসময় গাছ মালিকের মানষিক প্রতিবন্ধি মেয়ে ময়না (৩০) গাছ কাটায় বাধা দিলে তারা ময়নার উপর চড়াও হন। ময়নাকে জাকিয়ার পুত্র মুকুল ও শেখ আব্দুল মান্নানের পুত্র সুমন শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। তারা নবনির্বাচিত সংরক্ষিত ইউপি সদস্য আলফাতুনেছা সহ তার পরিবারের সদস্যদেরও বাড়িতে অবরুদ্ধ করে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখানো শুরু করেন। বিষয়টি তাৎক্ষনিক দেবহাটা থানাকে মৌখিক ভাবে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে। এসময় সখিপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন রতন, স্থানীয় ইউপি সদস্য নির্মল কুমার মন্ডল সহ অনেক গন্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। ঘটনাস্থলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্দোগ নেয়। এসময় উপস্থিত ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ সকলে আগামী ১০ দিনের মধ্যে বিষয়টির  শান্তিপূর্ন সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু প্রতিংিসা পরায়ন জাকিয়া বেগম শান্তির পথ পরিহার করে একটি কুচক্রীমহলের ইন্ধনে আলফাতুননেছা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সহ নানাভাবে হয়রানির অসৎ পরিকল্পনা গ্রহন করেন। এরই অংশ হিসাবে ঐদিনই পরিকল্পিত ভাবে সখিপুরস্থ দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এ ধরনের ষড়যন্ত্রে জাকিয়া বেগম অভ্যস্ত উল্ল্যেখ করে প্রতিবেশিরা জানান, কয়েক বছর আগে পারিবারিক ঝগড়াকে কেন্দ্র করে তার ভাসুরের স্ত্রী রহিমা বেগমকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে প্রকাশ্যে নিজের মাথায় দায়ের কোঁপ দিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ আছে, সাতক্ষীরার একজন ভূমি রেজিষ্ট্রার অফিসের কর্মচারি, সিলেট বিভাগের জেলা পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা ও একজন উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম ব্যবহার করে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে ক্ষমতার অপব্যবহার করার চেষ্ঠা করছেন জাকিয়া বেগম। আর এ কাজে উপদেষ্টার ভুমিকায় আছেন একজন কথিত আইনজীবী ও বিএনপির কয়েকজন স্থানীয় নেতা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল লতিফ জানান, জাকিয়া বেগমের শরীরে নোখের আঁচড়ের দাগ আছে যা নিজেও দেওয়া যায়। দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শাহাজাহান আলী জানান, ঘটনাটি পারিবারিক। এটি সাবেক ও বর্তমান মেম্বরের বিষয়। তবে আহতের তেমন কোন শারীরিক সমস্যা হয়নি বলে জানান তিনি। ভর্তির দুই দিন পর রোববার সকালে জাকিয়া বেগমকে রিলিজ করে দেয় সখিপুর হাসপাতাল। এ ব্যাপারে দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত আছে। তবে কেউ বিশৃঙ্খলা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভুক্তভোগীরা প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটন করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবী করেন। পাশাপাশি তারা যাতে শান্তিতে সহঅবস্থান করতে পারেন সেজন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।