
আসাদুজ্জামান :
গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে লোড শেডিংয়ে নাকাল হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরায় জেলার সাধারণ মানুষ। সকাল হতে না হতেই সূর্যের তাপমাত্রা সহ্যসীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আর সময় গড়িয়ে দুপুর আসতে না আসতেই সেই তাপদাহ রীতিমত অসহনীয় হয়ে উঠছে। তীব্র তাপদাহে পথচারী থেকে শ্রমজীবী সকল মানুষের নাভিশ্বাস ওঠার সাথে সাথে অব্যাহত বিদ্যুৎ এর লোড শেডিং এ সাতক্ষীরার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এদিকে, বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবৈধ সুযোগ সুবিধা নেয়ার কারনে লোডশেডিং আরো বেশী হচ্ছে অভিযোগ উঠেছে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে প্রচন্ড গরমে সাতক্ষীরাসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের জনসাধারণের মাঝে এক অস্বস্তিকর অবস্থা বিরাজ করছে। দিনের প্রচন্ড তাপদাহে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। এরমধ্যে শ্রমজীবীদের অবস্থা একেবারেই নাজুক হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রচন্ড গরমের মধ্যে তৃষ্ণা নিবারনের জন্য শহরের বিভিন্ন জায়গায় ডাব-শরবত বিক্রি করতে দেখে গেছে। ডাব ২৫ তেকে ৩০ টাকা এবং শরবত ৫ টাকা থেকে শুরু করে ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। প্রচন্ড গরমের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ এখন ডাব ও শরবত খেয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করছেন।
অপরদিকে, প্রচন্ড তাপদাহের সাথে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং হওয়ার কারণে ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে এইচএসসি, আলিম ও ডিগ্রী পরীক্ষার্থীরা। অব্যাহত লোডশেডিং-এর কারণে তাদের পড়াশুনায় চরম ভাবে বিঘœ ঘটছে। একইসাথে পল্লী বিদ্যুতের টানা লোডশেডিংয়ে নাকাল হয়ে পড়ছে জেলার ৭টি উপজেলার মানুষ। প্রচন্ড তাপদাহে ও হিট স্ট্রোকে নারী-শিশু সহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ দিনের পর দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছে। লোড শেডিংয়ের কারণে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিদ্যুৎ নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অবস্থা আরো করুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, আজ বৃহস্পতিবার বাতাসের আদ্রতা কিছুটা বেশী হওয়ায় গরম একটু কম আছে। আকাশে মেঘের কিছুটা আনাগোনা থাকলেও বৃষ্টিপাত হবার কোন সম্ভবনা দেখা যাচ্ছেনা। আর বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত গরম থাকবে। তবে আগামী ২-১ দিনের মধ্যে তাপমাত্রা একটু কমতে পারে বলে তিনি জানান। তিনি আরো জানান, গত রোববার দুপুরে তাপমাত্র রেকর্ড হয়েছে ৪০.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা চলতি বছরে রেকর্ড করা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
শহরের রাজার বাগান এলাকার ভ্যান চালক শাহীন আলী জানান, অসহ্য গরমে ভ্যান নিয়ে বাইরে বের হতে পারছিনা। গরমে ঠিকমত ভ্যান চালাতে না পারায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। আল্লাহ যদি একটু বৃষ্টি দিতো তাহলে গরমের হাত থেকে বাঁচা যেতো।
শহরের কামাননগর এলাকার বাসিন্দা আলীনূর খান বাবুলসহ একাধিক শহরবাসী ভয়েস অব সাতক্ষীরা ডটকমকে জানান, অসহ্য গরমের মধ্যে দিনে ও রাতে ঘন্টার পর ঘন্টা লোড শেডিংয়ের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তিনি জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবৈধ সুযোগ সুবিধা নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ ও এসি ব্যবহার করতে দেয়ার কারনে বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আর এ জন্যই ঘনঘন লোডশেডিং হচ্ছে। তিনি আরো জানান, বিদ্যুতের এই লোডশেডিং সমস্যার সমধান দ্রুত না করা হলে সাধারন জনতাকে নিয়ে মিছিল সহকারে পাওয়ার হাউজ ঘেরাও কর্মসূচী পালন করা হবে।
এ ব্যাপারে ওয়েষ্ট পাওয়ার জোন ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাতক্ষীরার আবাসিক প্রকৌশলী কাউছার আলী ভয়েস অব সাতক্ষীরা ডটকমকে জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহ কম থাকার কারনে ঘন ঘন লোডশিডিং হচ্ছে। এরপর তিনি অন্য কোন প্রশ্ন করার আগেই ফোনটি কেটে দেন।