
এস এম সেলিম হোসেন / নাজমুল আলম মুন্না :
কর্মে অধিকারে মর্যাদায়, নারী-পুরুষ থাকবে সমতায়” এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে সাতক্ষীরায় ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদ্যাপিত হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয় হতে সরকারী ও বেসরকারী সংগঠনের সহশ্রাধিক বিভিন্ন শেন্রী পেশার নারী-পুরুষের অংশগ্রহনে এক বর্ণাঢ্য র্যালী আরম্ভ হয়ে সাতক্ষীরা প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কস্থ জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে এক আলোচনা সভায় মিলিত হয়। র্যালীতে নেতৃত্ব প্রদান করেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দীন।
র্যালী পরবর্তী এক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান উন্নয়ন সংগঠন স্বদেশ এর নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নব নিযুক্ত জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দীন। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সংরক্ষিত নারী আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মিসেস্ রিফাত আমীন, বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ.এফ.এম এহতেশামূল হক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ আছাদুজ্জামান, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তারাময়ী মুখার্জী,সাতক্ষীরা পৌরসভার প্যানেল মেয়র শেখ শফিক উদ্ দৌলা সাগর। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা সরকারী মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. দিলারা বেগম,ভালুকা চাদপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ছালেহা আক্তার,পৌর কাউন্সিলর অনিমা রানী মন্ডল, জেন্ডার ডেলেপমেন্ট ফোরামের সভাপতি ফরিদা আক্তার বিউটি,মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জ্যোৎস্না দত্ত, এ্যাড.ফরিদা আক্তার বানু প্রমূখ। এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রদন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর আব্দুল হামিদ, প্রধান অতিথিকে স্মারক লিপি প্রদান করেন ডিআরআরও প্রতিনিধি ডলি খাতুন। অনুষ্ঠানে সহযোগীতাপূর্ণ অংশগ্রহন করেন ওয়ার্ল্ড ভিশন এডিপি সাতক্ষীরা, বরসা, স্বদেশ, অগ্রগতি সংস্থা,রূপান্তর খুলনা, সুইফ্ট খুলনা, সাতক্ষীরা পৌরসভা, লাইট হাউজ,প্রথম আলো বন্ধুসভা, এটিএন বাংলা, ব্র্যাক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ,উত্তরণ, সুশীলনসহ মোট ৬০টি সংগঠন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন খুব সহজেই একটি পরিবারে কাউন্সিলিং করে নারী নির্যাতন কমিয়ে আনা যায় যেটা অনেক যায়গায় সম্ভবও হয়েছে।এতে নারীরা বেশী ভুমিকা রাকতে পারে। তারপরও পূর্বের তুলনায় নারীরা বর্তমানে অনেক বেশী স্বধীন এবং জোরালো ভুমিকা রাখছে তারা নিজের অবস্থানকে অনেক পরিবর্তন করে জাতিকে একধাপ এগিয়ে নিচ্ছে,নারীরা সৃষ্টি করেছে নারী জাগরণ। তারা নিজেরা এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগ্যতার প্রমান রাখছেন,নারীরা দেশ চালাচ্ছে, মেয়েরা বিমান চালাচ্ছে, মেয়েরা অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করছে,খেলা ধুলায়ও পিছিয়ে নেই মেয়েরা বিশ্ব ভ্রমন করে বিশ্ব জয় করছে। নারীর এই যোগ্যতা ও ক্ষমতায়ন বদলে দিচ্ছে পুরো সমাজ ও দেশকে। তাই বক্তারা সকল প্রকার নারী নির্যাতন বন্ধে এক যোগে কাজ করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা ও মনোভাবএবং দৃষ্টিভঙ্গি বদলের দাবি জানান। আলোচনা সভা শেষে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় ৫জন জয়ীতাকে সম্মাননা প্রদান করা হয় যেমন অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী ময়না মন্ডল, শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেতে সাফল্য অর্জনকারী জাহানারা খাতুন, সফল জননী উষা রায়, নির্যাতনের বিভিষীকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরুর জন্যে রওশন আরা পারভীন,সমাজ উন্নয়নে অসাম্য অবদান রাখায় মাহাফুজা খাতুন ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। এছাড়া দিবস উপলক্ষ্যে চিত্রাংকন, রচনা, কবিতা আবৃতি, নৃত্যসহ বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় স্কুল কলেজের ছাত্রী-ছাত্রীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ।