সাতক্ষীরার ঘোনায় হাইকোর্টের আদেশ অবমাননা করে প্রতিবন্ধীব্যক্তির বসত ভিটা দখল


848 বার দেখা হয়েছে
Print Friendly, PDF & Email
সাতক্ষীরার ঘোনায় হাইকোর্টের আদেশ অবমাননা করে  প্রতিবন্ধীব্যক্তির বসত ভিটা দখল
ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬ ফটো গ্যালারি সাতক্ষীরা সদর
Print Friendly, PDF & Email

IMG_20160213_154658স্টাফ রিপোর্টার :
মোঃ সাজেদ আলী সরদার, একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী ও সরকারী চাকুরী কর্মচারী। তিনি সাতক্ষীরা জেলাধীন সদর উপজেলার ঘোনা ইউনিয়নের ঘোনা গ্রামের অধিবাসী। তাঁর বাবা দাদার পৈত্রিক সম্পত্তিতে এস, এ, রেকর্ড  ভুলভাবে প্রিন্ট হওয়ায় রেকর্ড সংশোধনের জন্য ০৮/৯/২০১৫ খ্রিঃ তারিখে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে ঈরারষ জবারংরড়হ ঘড়.২৮২০/২০১৫ মামলা দায়ের করেন। তৎপ্রেক্ষিতে যুগ্ন জেলা জজ আদালতের নিস্পত্তিকৃত আপীল মামলার রায় (মামলা নং-৮৫/২০০০) উপর ইস্যুকৃত জঁষব নিশী নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিরোধীয় সম্পত্তিতে উভয় পক্ষকে দখল ও অবস্থানের উপর স্থিতিবস্থা (ঝঃধঃঁংয়ঁড়) বজায় রাখার আদেশ দেয়া হয়। প্রদত্ত আদেশ অবমানা করে বিবাদীপক্ষ ও তাদের দোসরগণ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জনাব ফজলুর রহমান এর অযৌক্তিকভাবে চাপিয়ে দেয়া সালিশ মানতে রাজী না হওয়ায় তাঁর প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে ১১/০২/১৬ খ্রিঃ তারিখ ভোর ৫ টায় বিবাদী মৃত এছাহক সরদারের স্ত্রী শহর বানু, কন্যা শাহানা পুত্র সর্বজনাব রফিকুল, জয়নাল, ইউনুস  এবং অন্যান্যদের সহযোগিতায় যেমন- মৃত দুঃখে সরদারের পুত্র জালাল সরদার ও তাঁর স্ত্রী তহমিনা তদীয় পুত্র সালাম, মামুন ফটিক সরদারের পুত্র আল মামুন, এনামুল গং রা বাদীর রান্নার ঘর, পায়খানা ঘর, বিচালী গাদা ও অন্যান্য স্থাপনা ভেঙ্গে নতুন ঘর বানিয়ে বসবাস শুরু করেছে।

এমতাবস্থায়, তিনি তাঁর বসত ভিটা জবর দখলকারীদের কবল থেকে উদ্ধারের জন্য মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের সদয় দৃষ্টি আকার্সণসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
——————————————————————————————
০৮/৯/২০১৫ খ্রিঃ তারিখে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ঈরারষ জবারংরড়হ ঘড়.২৮২০/২০১৫ মামলা দায়ের এর পরিপ্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা যুগ্ন জেলা জজ আদালতের নিস্পত্তিকৃত আপীল মামলার রায় (মামলা নং-৮৫/২০০০) ইস্যুকৃত জঁষব নিশী নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিরোধীয় সম্পত্তির উভয় পক্ষকে দখল ও অবস্থানের উপর স্থিতিবস্থা (ঝঃধঃঁংয়ঁড়) নিশ্চিতকরণ আদেশের সার-সংক্ষেপ।
—————————-

১।    বাদী নিম্মস্বাক্ষরকারী সাতক্ষীরা জেলাধীন সদর উপজেলার ঘোনা ইউনিয়নের ঘোনা গ্রামের অধিবাসী। বিষয়ে বর্ণিত বিরোধীয় ভূমি আমার বাবা দাদার রের্কডীয় পৈত্রিক সম্পত্তি। উক্ত ভূমির ৫ অংশীদারের মধ্যে আমি ১/৫ অংশের মালিক (এজমালী)। কিন্তু এস,এ, রেকর্ড সঠিকভাবে না হওয়ায় ১৯৮১ সালে সাতক্ষীরা সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে স্বত্ত্ব সাব্যস্তসহ বন্টনের জন্য দেওয়ানী মোক্কদমা দায়ের করা হয় (মামলা নংÑ৩৪৮/৮১)। উক্ত মোক্কদমার বাদী ছিলেন আমার বাবা (তিনি এখন জীবিত নেই)। বর্ণিত মোক্কদমাটি ১৫/০২/২০০০ খ্রিঃ রায় ও ২২/০২/২০০০ খ্রিঃ তারিখে আংশিক ডিগ্রী হয়। ফলে রায় ও ডিগ্রীর বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা যুগ্ন জেলা জজ আদালতে আপীল করা হয় (দেওয়ানী আপীল মামলা নং-৮৫/২০০০)। কিন্তু সাতক্ষীরা যুগ্ম জেলা জজ, ২য়-আদালতে বদলী হওয়ায় আপীল মামলাটি শুনানী না করে (শুনানী ব্যতিত) গত ২১/৪/১৩ খ্রিঃ তারিখে নি¤œ আদালতের রায় ও ডিগ্রী বহাল রেখে নিস্পত্তি করা হয় এবং রায়ের আদেশে বলা হয়, আগামী ৩০ (তিরিশ) দিনের মধ্যে বাদী বিবাদী আপোষ মিমাংসার মাধ্যমে ভূমি বন্টন করে নিবেন। অন্যথায় বাদীপক্ষ আদালতযোগে ভূমি  বন্টন করে নিতে পারবেন মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে।

২।    তৎপ্রেক্ষিতে গত ১৮/৫/১৩ খ্রিঃ তারিখ রোজ শনিবার স্থানীয় গণ্যমান্যব্যক্তির উপস্থিতিতে যেমন-মাওলানা আব্দুল্লাহ, কয়ারপাড়ার জনাব গোলাপ সরদার, অন্যান্য অংশীদারসহ, বিবাদী জনাব এছাহক সরদার (১১৮ জন বিবাদীর মধ্যে অত্র মামলায় প্রতিদ্বন্ধিতাকারী একমাত্র ব্যাক্তি) এর নেতৃত্বে সি,এস, ৪২ এবং এস, এ, ৭৪, ৭৫, ৮০ ও ০৭ নং-খতিয়ানের ১৮৭১ দাগের ০.৫৯ শতাংশ (ভিটেবাড়ী) জমির সন্তোষজনক বন্টনসহ মাপ জরিপের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ করতঃ শান্তিপূর্ণ ভোগ দখল চলে আসছিলো (সভার রেজুলেশন লেখা হয়নি)। আমার অংশে একটি আমড়া গাছ ও টিউব ওয়েল বসানো আছে।

৩।    বিবাদী তাঁর প্রাপ্য অংশের ভোগ দখল অধিকতর পাকাপোক্ত ও শতকরা শতভাগ নিশ্চিত করতে সম্পত্তিতে লাগানো ৩টি আম গাছ ও ১টি তেঁতুল গাছ বিক্রী করে লক্ষাধিক টাকার উপরে গ্রহণ করেন। অধিকন্তু, উক্ত সম্পত্তির উত্তর পার্শ্বের জমির মালিক জনাব আবুল খায়ের দালাল এর ১টি রেইনট্রি গাছ বিবাদীর অংশে চলে আসায় গাছ বিক্রী বাবদ মোট অর্থের আংশিক ৮,০০০/= টাকা (তাঁর প্রাপ্য হিসাবে) ঘোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব ফজলুর রহমান এর উপস্থিতিতে গ্রহণ করেন। সম্পত্তি ভোগ দখলের ০১ বছর ১০ মাস ০৭ দিন পর অর্থাৎ  গত ২৪/৩/১৫ খ্রিঃ তারিখ রোজ মঙ্গলবার সকাল ৯.০০ টায়  আনুমানিক ৯৭ বছর বয়সে  বিবাদী জনাব এছাহক সরদার ইন্তেকাল করেন (ইনা ….. রাজিউন)।

৪।    জনাব এছাহক সরদার এর ইন্তেকালের পর ও ভূমি মাপ জরিপের দীর্ঘ ০২ বছরের অধিক সময় অতিবাহিত হওয়ার পর বিবাদীর সন্তানেরা মিমাংসিত সম্পত্তির দখল, অবস্থান এবং সিমানা কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়াই মানতে অস্বীকার করতঃ স্থানীয় চেয়ারম্যানকে পুনরায় মাপ জরিপের ব্যবস্থা করার জন্য চাপ দিতে থাকে। অতঃপর  ০১/৫/১৫ খ্রিঃ তারিখ রোজ শুক্রবার বিকাল ৩.৩০ টায় আমার ভাইয়েরা আমার ভিটাবাড়ীর দখলকৃত অংশে বিচালী গাদা দিতে গেলে স্থানীয়ভাবে নিস্পত্তিকৃত ও দেওয়ানী আদালতের রায় কে অসম্মান করে মরহুমের ৩য় স্ত্রীর ছেলে সর্বজনাব রফিকুল, জয়নাল, ইউনুছ এবং ১ম স্ত্রীর ছেলে সিরাজুল গংসহ মৃত দুঃখে সরদার এর পুত্র জালাল ও তদীয় পুত্র কালাম এবং সালাম (মহিলাসহ) এসে বাধা দেয়াসহ বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে কিছুটা হাতাহাতি হয়। প্রকাশ থাকে যে, জনাব জালাল অত্র মোক্কদমায় একজন বিবাদী থাকলেও  তিনি মামলায় অংশ গ্রহণ করেনি এবং বিরোধীয় সম্পত্তিতে তাঁর কোন জমি পাওনা নেই।

৫।    অপরদিকে, আমরা ৫ ভাইয়ের মধ্যে আমি সবার বড়। আমরা ২ ভাই ঢাকাতে থাকি ও ৩ ভাই গ্রামে থেকে কৃষি কাজের মাধ্যমে জীবিকার র্নিবাহ করে থাকে। ঢাকায় অবস্থান করা ২ ভাইয়ের জমি মূলতঃ গ্রামে থাকা ভাইয়েরা দেখাশুনা করে থাকে।
৬।    দিন যত যেতে থাকে বিবাদীর সন্তানেরা  দ্রুত অসহিষ্ণু উঠতে থাকে ফলে গত ০৮/৯/২০১৫ খ্রিঃ তারিখে  মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ঈরারষ জবারংরড়হ ঘড়.২৮২০/২০১৫ মামলা দায়ের করা হয়। মহামান্য হাইকোর্ট সাতক্ষীরা যুগ্ন জেলা জজ আদালতের নিস্পত্তিকৃত আপীল মামলার (মামলা নং-৮৫/২০০০) জঁষব নিশী নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিরোধীয় সম্পত্তিতে উভয় পক্ষকে দখল ও অবস্থানের উপর স্থিতিবস্থা (ঝঃধঃঁংয়ঁড়) বজায়  রাখার আদেশ দেন (কপি সংযুক্ত)।
৭।    উক্ত আদেশ গত ২২/১০/১৫ খ্রিঃ তারিখে দুপুর ১.৩০ টায় জেলা জজ সাতক্ষীরা (জারিকারক জনাব আখের আলী) কর্তৃক সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট জারি  করা হয়। এতদসত্ত্বেও অপর শরীক মৃত ইউসুফ সরদার এর পুত্র জনাব মোসলেম সরদার গত ২০/১২/১৫ খ্রিঃ তারিখ দুপুর ১.৩০ টায় বিরোধীয় ভূমিতে লাগানো খেজুর গাছ কেটে নিয়েছে।

৮।    এ ছাড়া কোন সম্পত্তি পাওনা না থাকা সত্বেও মৃত এছাহক সরদারের পুত্র রফিকুল গং ও মৃত দুঃখে সরদার এর পুত্র জনাব জালাল সরদার গং বিরোধীয় ভুমিতে নতুনভাবে ঘর নির্মাণ করার সকল প্রস্তুতি চুড়ান্ত করেছে। এ বিষয়ে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হলে সাতক্ষীরা সদর থানার (এএসআই) জনাব মালেক, জনাব এনামুল ও জনাব আনসার একাধিকবার সরেজমিনে তদন্ত করা এবং মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে চলার জন্য বলা সত্বেও  বে-আইনিভাবে সম্পত্তি দখলের পায়তারা অব্যাহত রেখেছে।

৯।    ১১/০২/১৬ খ্রিঃ তারিখ ভোর ৫.০০ টায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জনাব ফজলুর রহমান এর প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে বিবাদী মৃত এছাহক সরদারের স্ত্রী শহর বানু, কন্যা শাহানা পুত্র সর্বজনাব রফিকুল, জয়নাল, ইউনুস  এবং অন্যান্যদের সহযোগিতায় যেমন- মৃত দুঃখে সরদারের পুত্র জালাল সরদার ও তাঁর স্ত্রী তহমিনা তদীয় পুত্র সালাম, মামুন ফটিক সরদারের পুত্র আল মামুন, এনামুল গং রা বাদীর রান্নার ঘর, পায়খানা ঘর, বিচালী গাদা ও অন্যান্য স্থাপনা ভেঙ্গে নতুন ঘর বানিয়ে বসবাস শুরু করেছে।

১০।    আমি একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী হুইল চেয়ারে বসে চলা ফেরা করে থাকি। আমি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) এর সদর দপ্তর, ঢাকাতে (রাজস্ব বাজেটভূক্ত) উচ্চমান সহকারী (টউঅ) পদে কর্মরত ।

১১।    এমতাবস্থায়, উপর্যুক্ত বিষয়টি সদয় সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করতঃ মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের প্রদত্ত ঈরারষ জবারংরড়হ ঘড়.২৮২০/২০১৫ মামলার ইস্যুকৃত জঁষব এর নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাতক্ষীরা সদর উপজেলাধীন ঘোনা মৌজার তপশিল বর্ণিত বিরোধীয় ভূমিতে দখল ও অবস্থানের উপর স্থিতিবস্থা  ও প্রতিপক্ষ ও তাদের দোসরদের জবর দখলকৃত সম্পত্তি উদ্ধারসহ আদালত আদেশ অবমাননার দায়ে উল্লেখিত প্রতিপক্ষব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে অনুরোধ জানাচ্ছি।