
ইব্রাহিম খলিল :
সাতক্ষীরায় মৌসুমের শুরুতেই ঘেরে ভাইরাস লাগায় বাগদা চিংড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সংশয় দেখা দিয়েছে। এতে হতাশ হয়ে পড়েছে চাষীরা। সরকার দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চালে এই চিংড়ি থেকে বিপুল পরিমান রাজস্ব আদায় হয়। কিন্তু বছরের শুরুতে ঘেরে ভাইরাস ও মড়ক লাগায় সরকারের রাজস্ব অর্জনে সংশয় দেখা দিয়েছে। জেলা মৎস্য অফিস গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় তিন হাজার মেট্রিক টন বেশি উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা নির্ধারন করেছে।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ বছর ৬৬ হাজার ৮শ ৬২ হেক্টর জমিতে বাগদা চিংড়ি চাষ হচ্ছে। এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ হাজার ১২০ মেট্রিক টন। গত বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ২৭৩ মেট্রিক টন।
সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় চার হাজার ৬৫ হেক্টর জমি, আশাশুনিতে ১৭ হাজার ৩৯৭ হেক্টর জমিতে, দেবহাটায় আট ৮৯৩ হেক্টর, কালিগঞ্জে ১৫ হাজার ৯৮৭ হেক্টর, শ্যামনগরে ১৭ হাজার ৫০০, তালায় তিন হাজার ৩৮ হেক্টর জমিতে বাগদা চিংড়ি চাষ হচ্ছে।
লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বাগদা চিংড়ির চাষ হলেও ঘেরে ভাইরাস সংক্রমণ ও প্রচ- গরমে হিট স্ট্রোকে মড়ক লাগায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সংশয় দেখা দিয়েছে।
আশাশুনি উপজেলার কচুয়া গ্রামের বাগদা চাষী মঞ্জুরুল হুদা জানান, তিনি দেড়শ বিঘা জমিতে বাগদা চিংড়ি চাষ করেছেন। ঘেরে রেণু ছাড়ার পর মাছ বেশ বাড়লেও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এর সাথে এখন যোগ হয়েছে প্রচ- তাপমাত্রা। এতে মাছ মরে যাচ্ছে। চিন্তায় আছি, কি হয়।
শ্যামনগর উপজেলার কলবাড়ি গ্রামের আব্দুর রশিদ জানান, তার ঘেরে ভাইরাসের কারণে মড়ক লেগেছে। তিনি এখনো পর্যন্ত মাছ বিক্রি করতে পারেননি। অন্যের জমি হারি নিয়ে চাষ করায় চিন্তিত তিনি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেখ আব্দুল ওয়াদুদ জানান, সরকার প্রতিবছর বাগদা চিংড়ি রপ্তানি করে প্রচুর পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। যার সিংহভাগ সাতক্ষীরা থেকে রপ্তানি হয়। জেলায় এবছর বাগদা চিংড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ হাজার ১২০ মেট্রিক টন। বছরের শুরুতেই বিভিন্ন ঘেরে ভাইরাস সংক্রমণ ঘটে। এছাড়া বর্তমানে প্রচ- তাপমাত্রায় মাছ মরে যাচ্ছে। এতে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি আরো বর্তমানে ঘেরের পানির তাপমাত্রা থাকার কথা ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি। কিন্তু এখন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরে রয়েছে। সেকারণেও মাছ মারা যাচ্ছে।